মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত নির্যাতন-নিপীড়নের নিরপেক্ষ, স্বতন্ত্র ও আন্তর্জাতিক তদন্ত দল নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা সদস্যরা। বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে গেলে ঢাকায় সফররত জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ইয়াংঘি লি’র কাছে লিখিতভাবে এক আবেদন করেন তারা। কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে অবস্থানরত নিবন্ধিত রোহিঙ্গা মোহাম্মদ ইউনুস রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে লিখিত আবেদনটি করেন।
ওই আবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর থেকে শুরু করে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এক হাজারেরও বেশি নির্দোষ, বেসামরিক আদিবাসী রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু হত্যার শিকার হয়েছে। ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশনে’র নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এ সময় ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন পাঁচ শতাধিক নারী। ধর্ষণের শিকার অনেক নারীকেই পরে হত্যা করা হয়েছে।
এছাড়াও রাখাইন প্রদেশের অনেক বেসামরিক নাগরিকই নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে ওই আবেদনে।
ইয়াংঘি লি’র কাছে জমা দেওয়া ওই আবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার নির্ভরযোগ্য সব প্রতিবেদনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর গণহত্যা ও ব্যাপক নির্যাতনের বিষয়টি স্পষ্ট হলেও মিয়ানমারের সাবেক সামরিক সরকার ও ক্ষমতাসীন এনএলডি সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার ও প্রত্যাখান করেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া জরুরি।
রোহিঙ্গাদের ওপর চলা নির্যাতনের তদন্তে নিরপেক্ষ, স্বতন্ত্র ও আন্তর্জাতিক মানের তদন্ত দল নিয়োগের আবেদন করা হয়েছে ইয়াংঘি লি’র কাছে। এর জন্য আন্তর্জাতিক চিকিৎসা ও ফরেনসিক দলকে নিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা, যারা রোহিঙ্গা নারীদের ওপর সংঘটিত ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনাগুলো নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করবে। এসব তদন্ত অনতিবিলম্বে সম্পন্ন করার আহ্বানও জানানো হয়েছে ইয়াংঘি লির কাছে জমা দেওয়া ওই আবেদনে।
/টিআর/এসএনএইচ/