X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

৩৯টি বধ্যভূমিতে একসঙ্গে আলোক প্রজ্বালন

খন্দকার রউফ পাভেল, নওগাঁ
২৫ মার্চ ২০১৭, ১৪:৫১আপডেট : ২৫ মার্চ ২০১৭, ১৭:১৯

৩৯টি বধ্যভূমিতে একসঙ্গে আলোক প্রজ্বালন

স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর এই প্রথম জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস পালন করা হচ্ছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাতের অন্ধকারে কাপুরুষের মতো আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিরীহ ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যা চালায়। যা জাতি আজও ভুলতে পারেনি। নওগাঁবাসী শনিবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় একসঙ্গে ৩৯টি বধ্যভূমিতে আলোক প্রজ্বালন করবে। শহরের মুক্তির মোড়ে আলোর মিছিল উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সাংসদ আব্দুল মালেক।

নওগাঁ জেলার গণহত্যার পরিপূর্ণ কোনও ইতিহাস লিপিবদ্ধ নেই। স্থানীয় সামাজিক ও সংস্কৃতিক সংগঠন ‘একুশে পরিষদ নওগাঁ’ দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা গণহত্যার ইতিহাস সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। অনুসন্ধানে নতুন নতুন কিছু তথ্য উঠে এসেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৯টির মতো গণহত্যার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এ গণকবরগুলোর অধিকাংশই আজও অরক্ষিত, অযত্নে ও অবহেলায় পড়ে আছে। বধ্যভূমিগুলো প্রাচীরের অভাবে উন্মুক্ত গো-চারণভূমিতে পরিণত হয়েছে। কয়েকটা বধ্যভূমিতে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার ও একুশে পরিষদের পক্ষ থেকে স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু যেগুলোতে স্মৃতিফলক রয়েছে, সেগুলোর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ নেই।

বধ্যভূমি রয়েছে, নওগাঁ সদর উপজেলার ধামকুড়ি, দোগাছি, ফতেপুর, মোহনপুর, বলিহার, আরজি-নওগাঁ, হাট-নওগাঁ, খাস-নওগাঁ, পার-নওগাঁ, রানীনগর উপজেলার আতাইকুলা, আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া, সিংসাড়া, মিরাপুর, বৈঠাখালি, পাইকড়া, পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন, বাউল্ল্যাপাড়া, গোয়ালবাড়ি, মান্দা উপজেলার পাকুড়িয়া, মনোহরপুর, কবুলপুর, কিত্তলী,বদলগাছি উপজেলার গয়েশপুর, ঐতিহাসিক পাহাড়পুর, চক-গোয়ালি, মহাদেবপুর উপজেলার বাজিতপুর-চকদৌলত, মহিষবাথান, পত্নীতলার উপজেলার নিরমইল, হালিমনগর, ধামইরহাট উপজেলার কুলফতপুর, ফর্সিপাড়া, পাগলা দেওয়ান (নওগাঁ জেলার অংশ), নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা, সাপাহার উপজেলার সাপাহার, আসড়ন্দ, পাহাড়িপুকুর, পোরশা উপজেলার শিশাহাট।

জানা যায়, ১৯৭১ সালে ১৬ এপ্রিল পাকবাহিনী রাজশাহী শহর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেয়। মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে অনেক ছোট-বড় যুদ্ধের ফলে রাজশাহীতে পাঞ্জাবি বাহিনী প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়। পরে তারা কর্নেল তাজের নেতৃত্বে ঢাকা থেকে সৈন্য ও রসদ সংগ্রহ করে শক্তি বৃদ্ধি করে। এরপর ২৫ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের পাকিস্তানি সৈন্যরা দুটি দলে বিভক্ত হয়। একটি রেলপথে আর একটি নওগাঁর নওহাটা-মান্দা সড়ক পথে অগ্রসর হয়। রেলপথের দলটি ২১ এপ্রিল বিশেষ ট্রেন করে আত্রাই স্টেশনের পার্শ্বে নদীর তীরে অবস্থান নেয়। পরে তারা সেখান থেকে বিভিন্ন দিকে অগ্রসর হয়ে গণহত্যা চালায় ও আগুন দিয়ে বিভিন্ন গ্রাম ও বাজার জ্বালিয়ে দেয়।

একুশে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এমএম রাসেল বলেন, বধ্যভূমির ৩৯ স্থানে একই সময় আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে কোনও স্মৃতিফলক নেই, সেখানে স্মৃতিফলক নির্মাণ ও শহীদদের স্বীকৃতি দেওয়াসহ রাষ্ট্রীয়ভাবে গণহত্যার দিবস পালনের দাবি জানান।

মুক্তিযুদ্ধকালীন আঞ্চলিক কমান্ডার ও সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান বলেন, গণহত্যা দিবসের মূল তাৎপর্য হচ্ছে আকস্মিকভাবে পাকবাহিনী নিরীহ বাঙালিদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করেছিল। সেদিন ইপিআর পুলিশ ও যুবকসহ সর্বস্তরের মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আর গণকবরগুলোর বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে সেগুলো দৃষ্টিনন্দন করার জন্য।

/জেবি/


 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা