সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগে শাহিন আলম (কনস্টেবল নম্বর- ১৭৬৭) নামে এক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেফতার করেছে যশোর পুলিশ। বুধবার দুপুরে যশোর পুলিশ লাইন্স থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ঝিকরগাছা থানায় দায়ের করা প্রতারণার মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আটক শাহিন আলম যশোর পুলিশ লাইনসে কর্মরত ছিলেন। ঝিকরগাছার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, ‘ঝিকরগাছা উপজেলার বল্লা গ্রামের রুহুল কুদ্দুস প্রতারণার অভিযোগ এনে গত ১৪ মার্চ থানায় মামলা করেন। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, একই গ্রামের সিদ্দিক হোসেন তাকে জানান, তিনি সেনাবাহিনীর অফিস সহায়ক পদে চাকরি দিতে পারেন। তার কথায় বিশ্বাস করে তিনি শ্যালক মাসুম বিল্লাহ, ভাইপো ইমরান আহম্মেদ ও চাচাতো ভাই ইমরান হোসেনকে চাকরি দিতে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন। এরপর সিদ্দিক হোসেন চাকরি প্রার্থীদের নিয়ে পুলিশ কনস্টেবল শাহিন আলম ও বাবু নামে আরেক ব্যক্তির কাছে যান। ওই দু’জনের সঙ্গে চাকরির বিষয়ে পাকা কথাবার্তা হয়। এরপর চাকরিপ্রার্থীদের গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকার গাবতলীতে যেতে বলেন। সেখান থেকে তাদের সুমন নামে একজন মিরপুর ১২ নম্বরে নিয়ে যান। সেখানে সেনাবাহিনীর পোশাক পরিহিত সালাউদ্দিন এবং আব্দুল হক নামে আরেকজন সাদা পোশাকে চাকরি-প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করেন। ওই দু’জন চাকরি-প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষাও নেন। এরপর মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নেন। এরপর জানান, সিদ্দিক হোসেন বাড়িতে নিয়োগের সংবাদ পৌঁছে দেবেন।’
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘গত ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে সিদ্দিক হোসেন মামলার বাদী রুহুল কুদ্দুসের কাছ থেকে ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা নেন। এরপর ঢাকায় গিয়ে সালাউদ্দিনের কাছ থেকে নিয়োগপত্র সংগ্রহ করতে বলেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি সালাউদ্দিন সেনাবাহিনীর একজন লে. কর্নেল পদমর্যাদার কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র দেন। এ সময় তিনি আরও ৪ লাখ টাকা নেন। সর্বশেষ ১২ মার্চ মাসুম বিল্লাহ কুমিল্লা সেনানিবাসে অফিস সহায়ক এবং ইমরান আহম্মেদ ও ইমরান হোসেনকে ঢাকা সেনানিবাসে এমইএস এজি শাখায় অফিস সহায়ক পদে যোগ দিতে যান। তখন তারা জানতে পারেন নিয়োগপত্র ভুয়া। বাড়িতে ফিরে মীমাংসায় ব্যর্থ হয়ে ১৪ মার্চ ঝিকরগাছা থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়।’
ওসি আরও জানান, ‘এ অভিযোগে পুলিশ কনস্টেবল শাহিন আলমকে বুধবার গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদ মো. আবু সরোয়ার বলেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। অভিযোগের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কনস্টেবল শাহিন আলমকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।’
/এমএনএইচ/