অযত্ন-অবহেলা আর বেদখলে একযুগ ধরে ভোলার লালমোহন উপজেলার শেখ রাসেল স্টেডিয়ামের বেহাল দশা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ও দায়িত্বহীনতায় অবৈধ দখলে রয়েছে এর ভবন, মাঠ ও জমি।
লালমোহন উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সেক্রেটারি শাহ মো. জাহেদুল ইসলাম নবীন বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, স্টেডিয়ামটি ব্যবহার করতে না পারায় এখানকার ক্রীড়া কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘স্টেডিয়ামটি একযুগ ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কাজ শেষ না হওয়ায় এর জায়গা বেদখল হয়ে যাচ্ছে।’
স্থানীয় খেলোয়াড়রাও মন্তব্য করলেন, স্টেডিয়াম না থাকায় লালমোহন উপজেলার ক্রীড়া কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন স্কুলের মাঠে অনুশীলন করতে হচ্ছে তাদের। তাই অনতিবিলম্বে লালমোহন স্টেডিয়ামটি দখলমুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠার দাবি জানান তারা।
অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি সরকারের আমলে তৎকালীন পানিসম্পদমন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনের নামে গড়ে তোলা স্টেডিয়ামটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চলে গেছে দখলদারদের হাতে। বর্তমান সরকারের সময় দখল উচ্ছেদের মাধ্যমে স্টেডিয়ামের নামকরণ হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের নামে। কিন্তু প্রাণ পায়নি স্টেডিয়ামটি!
জানা গেছে, ভোলা-চরফ্যাশন সড়কের লালমোহন উপজেলা পরিষদের পাশে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তৎকালীন পানিসম্পদমন্ত্রী নিজের নামে ‘বীরবিক্রম মেজর হাফিজ স্টেডিয়াম’ নামে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তবে তৎকালীন বিএনপি সরকারের মেয়াদে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি।
তখন থেকেই স্টেডিয়ামের নির্মাণাধীন ভবন আর মাঠ চলে যায় অবৈধ দখলে। মাঠে আস্তানা গড়ে ছিন্নমূলেরা। আর স্টেডিয়াম ভবনের সামনের জমি দখল করে গড়ে ওঠে চা-পানের দোকান এবং ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামছুল আরিফ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ২০১৪ সালে লালমোহন স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে শেখ রাসেল স্টেডিয়াম করা হয়। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া এটিকে আধুনিক স্টেডিয়ামে রূপান্তরের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এ ব্যাপারে কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।
/এমও/জেএইচ/আপ-এমও/