ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের ঠনঠনেপাড়ায় যে বাড়িতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালিয়েছে সেটিকে জঙ্গিদের বোমা তৈরির কারখানা বলে মনে করছে পুলিশ। ওই বাড়িতে অপারেশন ‘সাউথ প’ (দক্ষিণে থাবা) সমাপ্ত ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমেদ এসব তথ্য জানিয়েছেন।
শনিবার (২২ এপ্রিল) বেলা আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি জানান, ‘ঠনঠনেপাড়ার ওই আস্তানায় কোনও জঙ্গি পাওয়া যায়নি। তবে আমাদের কাছে খবর আছে এখানে তিন-চার জন জঙ্গি ছিল। তারা আগেই পালিয়ে গেছে। তবে এই জঙ্গিদের সবাই জেএমবি ও নব্য জেএমবির সদস্য। আর এই বাড়িতে যে পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া গেছে তাতে বাড়িটিকে বোমা তৈরির কারখানা বলা যেতে পারে। এই বাড়িতে জঙ্গি সংগঠনগুলোর বিভাগীয় পর্যায়ের লোকজন আসা যাওয়া করতো। এই বাড়িতে অভিযান সম্পন্ন হলেও আমাদের জঙ্গিবিরোধী তৎপরতা চলবে।’
ডিআইজি জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখা হয়। শনিবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে অপারেশন ‘সাউথ প’ শুরু হয়। অভিযান শেষ হয় বেলা ২টায়। প্রায় ৪ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের অভিযানে ঝিনাইদহের সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের ঠনঠনেপাড়ায় জঙ্গি আস্তানা থেকে বিস্ফোরক তৈরি রাসায়নিক ভর্তি ২০টি ড্রাম, একটি সেভেন পয়েন্ট সিক্স বোরের পিস্তল, একটা ম্যাগাজিন, সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। পাঁচটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের ৩০ জন এবং খুলনা রেঞ্জের পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ৪০০ সদস্য এই অভিযানে অংশ নেন।
অস্ত্র, বিস্ফোরকসহ বাড়ির ভেতর থেকে ১৫টি জিহাদি বইও উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিআইজি দিদার আহম্মদ বলেন, “শুক্রবার বিকাল ৬টার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের আব্দুল্লাহর বাড়িকে ‘জঙ্গি আস্তানা’ সন্দেহে ঘিরে রাখে পুলিশ। ওই বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়ির মালিক আব্দুল্লাহ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। সে জেএমবির সদস্য। আব্দুল্লাহ পাঁচ বছর আগে সনাতন ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের পোড়াহাটি গ্রামের ঠনঠনে পাড়ার আব্দুল্লাহর টিনসেট বাড়ি ঘিরে ফেলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপর ঢাকা থেকে সিটিটিসি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
/এফএস/টিএন/আপ- এমএ/