মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাকালুকি হাওরের প্রায় ৯৫ কোটি টাকার বোরো ধান তলিয়ে গেছে। তিন উপজেলার কৃষি বিভাগ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অভিযোগ আছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উদ্যোগে জুড়ী নদীর নাব্য হ্রাস ও এর শাখা নদীর মোহনা পুনঃখননের কাজ যথাযথভাবে না হওয়ায় হাওর এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
তিন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুলাউড়ায় ৬ হাজার ৫৫০, জুড়ীতে ৫ হাজার ৪৭০ এবং বড়লেখায় ৪ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। গত ২৯ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিন উপজেলায় ভারী বৃষ্টি হয়। ফলে পাহাড়ি ঢলে কুলাউড়ায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর, জুড়ীতে ৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর এবং বড়লেখায় ৩ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমির কাঁচা ও আধা পাকা বোরো ধান পানিতে ডুবে পচে গেছে। এতে কুলাউড়ায় ৩৭ কোটি ৫০ লাখ, জুড়ীতে ৩৫ কোটি ৭১ লাখ ও বড়লেখায় ২১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার ধান নষ্ট হয়েছে। আর তিন উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. শাহজাহান সোমবার বলেন, ‘ক্ষতির তথ্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়ে এখনও কোনও বরাদ্দ মেলেনি।’
এলাকাবাসী ও পাউবোর কর্মকর্তারা জানান, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি জুড়ীর মূল ও শাখানদী দিয়ে কুশিয়ারায় গিয়ে পড়ে। একদিকে পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় জুড়ী এবং এর শাখানদীর নাব্যতা কমে গেছে। এছাড়া ২০০৪ সালে পাউবোর সিলেট কার্যালয় জুড়ী নদীর শাখার মোহনায় বুড়িকিয়ারি বিলে প্রায় ৫০০ ফুট দীর্ঘ একটি উঁচু মাটির বাঁধ নির্মাণ, মূল নদীর মোহনার পাশে স্থাপিত দুটি ইটভাটার খোয়া ফেলে রাখা ও ফেঞ্চুগঞ্জে জুড়ী নদীর মোহনায় বাঁধ নির্মাণের ফলে পানিনিষ্কাশ পথ সরু হয়ে গেছে।
পাউবোর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, ‘জুড়ী ও বড়লেখার সোনাই নদ পুনঃখননের ব্যাপারে একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রাথমিক কাজও শুরু হয়ে গেছে।’
/এসএনএইচ/