বরিশালে বানারীপাড়ার খলিশাকোটা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুরজাহান আক্তার মিলি (১৫) বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে আবেদন করেছে। সোমবার (২৪ এপ্রিল) ওই আবেদনে মিলি অভিযোগ করেছে, তার বাবা আবুব্বকর সিদ্দিক তার অমতেই জোর করে বিয়ে দেন অপ্রাপ্তবয়স্ক মিলির। ইউএনও ইসরাত জাহান মিলির লিখিত আবেদন পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।
মিলি জানায়, তার বাবা আবুব্বকর সিদ্দিক কুয়েতে থাকেন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। বাবা প্রবাসী হওয়ায় মিলি ও তার মা নাসরিন আক্তার মনি থাকেন মিলির নানা শাহাজাহান হাওলাদারের কাছে, বানারীপাড়ার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের সেনেরহাট গ্রামে। চলতি এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে মিলির বাবা কুয়েত থেকে দেশে ফিরে নোয়াখালি যান। এসময় মিলির মাও তার সঙ্গে ছিলেন। পরে মায়ের অসুস্থতার খবর দিয়ে তিনি মিলিকেও ডেকে নেন।
মিলি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নোয়াখালীতে যাওয়ার পর বিয়ে দেওয়ার জন্য বাবা তোড়জোড় শুরু করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। পরে গত ১৬ এপ্রিল আমার অমতেই জোর করে বরিশালের উজিরপুরের ধামুড়ার বাসিন্দা এবং যুগ্ম জেলা জজ আদালতের অফিস সহকারী জহিরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রি করা হয়।’ এ পরিস্থিতিতে বাল্যবিয়ে থেকে রেহাই পেতে এবং পড়ালেখা চালিয়ে যেতে ইউএনও’র কাছে মিলি আবেদন করে বলে জানায়।
ইউএনও ইসরাত জাহান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মিলির লিখিত আবেদন আমি পেয়েছি। সামাজিক প্রেক্ষাপটের কথা ভেবে তার অভিবাবকদের ডেকে সবার সম্মতি নিয়ে ভাবার জন্য তাকে দুই দিনের সময় দিয়েছি। এরপর সে যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা বাস্তবায়ন করা হবে।’
ইউএনও জানান, অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আফসানা সাক্ষী, খলিশাকোটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আজিম, ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মিন্টু, মিলির মা নাসরিন আক্তার ও নানা শাহজাহান হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মিলির বর জহিরুল ইসলাম বলেন, তিনি জানতেন না যে মিলি নাবালিকা। দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে।
মিলির বিয়ে প্রসঙ্গে তার মা নাসরিন আক্তার মনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘স্বামী বিদেশে থাকায় আমার একার পক্ষে মিলির দেখভাল করা কঠিন। তাই মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই ভুয়া তারিখ দিয়ে তার জম্ম নিবন্ধন করিয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলাম।’
/এমএ/টিআর/