X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

১০ বছর একঘরে!

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
২৮ মে ২০১৭, ১০:২৫আপডেট : ২৮ মে ২০১৭, ১০:৩৪

মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় সালিশের রায় অমান্য করায় স্থানীয় মাতব্বররা ফাতির আলী নামের এক ব্যক্তির পরিবারকে ১০ বছর ধরে একঘরে করে রেখেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের এড়ালিগুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। একঘরে করে রাখায় ফাতির আলীর পরিবার লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিন্টু চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মো. মাহবুবর রহমান  বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সামাজিকভাবে কাউকে একঘরে করে রাখা বেআইনি।’

স্থানীয়রা জানান, ফাতির আলীর সঙ্গে ৮ শতক জায়গা নিয়ে তার ভাই শরাফত আলীর বিরোধ ছিল। ২০০৭ সালের দিকে এক আত্মীয়ের মধ্যস্থতায় বিরোধপূর্ণ জায়গায় ফাতির আলী ঘর বানিয়ে বসবাস শুরু করেন। এরপর শরাফত বাঁশের বেড়া দিয়ে ওই জায়গা দখলের চেষ্টা চালান। এ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন সালিস বৈঠক ডেকে বিরোধ মেটানোর উদ্যোগ নেন। সালিসে স্থানীয় মাতব্বর আপ্তাব আলী, উস্তার আলী, আবদুল লতিফ ও ছমির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে সালিসকারীদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে ফাতির চলে যান। পরে ফাতির জুড়ী থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে সালিসকারীরা আবার বৈঠক ডেকে জমি নিয়ে বিরোধ সম্পর্কে পুলিশের কাছে অভিযোগ করায় ফাতিরের কাছে কৈফিয়ত চান। একপর্যায়ে তারা ফাতিরকে একঘরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। ৭-৮  বছর আগে সেটেলমেন্ট জরিপের সময় ফাতির ও শরাফতের মধ্যকার জমিসংক্রান্ত বিরোধ মিটমাট হয়ে যায়। কিন্তু স্থানীয় ওই মাতব্বররা ফাতির আলীর পরিবারকে এখনও একঘরে করে রেখেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় মাতব্বর আপ্তাব আলী, উস্তার আলী ও ছমির উদ্দিন জানান, ফাতির আলী ও তার স্ত্রী সালিস বৈঠকের বয়োজ্যেষ্ঠ লোকজনের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করেছেন। তাই সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই পরিবারকে একঘরে করে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে ফাতির আলী বলেন, ‘গ্রামের কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়তে আমাকে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশের গ্রামের মসজিদে গিয়ে আমি নামাজ পড়ি।’

ফাতিরের মেয়ে শারমিনা বেগম মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি, আমরা একঘরে। কারও সঙ্গে মিশতে পারি না, কথা বলতেও পারি না। কেন আমাদের এ শাস্তি দেওয়া হচ্ছে জানি না। এভাবে আর  কতদিন চলতে থাকবে!’

/এমএ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
চাঁদপুরে লঞ্চে আগুন, হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত ১০
চাঁদপুরে লঞ্চে আগুন, হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত ১০
ঈদযাত্রার সময় দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত: জরিপ
ঈদযাত্রার সময় দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত: জরিপ
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন দেওয়া ব্যক্তির মৃত্যু
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন দেওয়া ব্যক্তির মৃত্যু
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার বিকল্প নেই
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার বিকল্প নেই
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া