পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’-এ পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে সোমবার সকাল থেকে আকাশ মেঘলা রয়েছে। মংলা সমুদ্র বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবিলায় বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জরুরি সভা করে সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জেলায় ৮৩টি মেডিক্যাল টিম এবং ২৩৪টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আব্দুল হালিম জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় উপজেলা সদরে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। দুপুর ১২টায় একটি দুর্যোগ প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে। উপজেলার ৪৩টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকূলবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে সর্তকতার সঙ্গে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে।
মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, এরইমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি জরুরি সভা করা হয়েছে। এখানে সব ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা উপস্থিত আছেন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উপজেলার ৪২টি সাইক্লোন শেল্টার। মসজিদ এবং উপজেলা প্রশাসনের মাইক থেকে জরুরি মাইকিং করা হয়েছে। শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কুমার পাল জানান, সব ইউনিয়ন পরিষদে জরুরি সভা করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদেও বিকালে একটি জরুরি সভার ডাকা হয়েছে। সব সাইক্লোন সেল্টার প্রস্তুত রয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবিলায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব স্টেশন কর্মকর্তাকে বেতার বার্তার মাধ্যমে সতর্ক করা হয়েছে। নৌযানগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর এ কে এম ফারুক হাসান জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবিলায় সকাল থেকে প্রস্তুতিমূলক একাধিক সভা করা হয়েছে। বন্দরের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্দরে অবস্থানরত সব জাহাজে পণ্য উঠানো-নামানোর কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবিলায় সোমবার বিকাল ৩টায় জরুরি সভার আয়োজন করা হয়েছে। জেলার সাইক্লোন সেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার তৈরি রাখা হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে সব প্রস্তুতি শেষ করেছে।
এছাড়াও মংলা বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার ওলিউল্লাহ জানান, ঘুর্ণিঝড় মোরার আঘাত থেকে রক্ষা পেতে চট্টগ্রাম নৌঘাটি থেকে ১০টি যুদ্ধ জাহাজ মংলা নৌঘাটিতে এসে পৌঁছেছে। এবং কোস্টগার্ডের ২টি জাহাজ আগামী কাল সকালে এসে পৌঁছাবে।
/জেবি/
আরও পড়তে পারেন: হবিগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে দুই কিশোরের মৃত্যু