X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

অন্যকে দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ধরার ক্ষমতা নেই শিক্ষাবোর্ডের

রশিদ আল রুহানী
০৩ জুন ২০১৭, ০৭:৫৯আপডেট : ০৩ জুন ২০১৭, ০৭:৫৯

এসএসসি পরীক্ষা (ফাইল ছবি) এসএসসি ও এইচএসসির উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য যেসব শিক্ষকের কাছে উত্তরপত্র পাঠানো হয় তাদের অনেকেই অন্যদের দিয়ে এসব উত্তরপত্র দেখিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মন্নুজান হল থেকে এইচএসসি পরীক্ষার প্রায় একশ উত্তরপত্র উদ্ধার হলে বিষয়টি আবার সামনে চলে এসেছে। তবে অভিযোগ উঠেছে, পরীক্ষকরা নিজে না দেখে অন্যকে দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করালেও তা ধরার ক্ষমতা রাখে না শিক্ষাবোর্ড।

এ বিষয়ে কথা বললে কয়েকজন শিক্ষক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কিছু পরীক্ষক নিজের সন্তান অথবা অন্য কাউকে দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করিয়ে থাকেন। এই রীতি নতুনও নয়। পরীক্ষকরা নিজেরা কোচিং বাণিজ্যসহ অন্যান্য নানা ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকেন বলেই এমনটি করেন। আর এর ফলে ভুক্তভোগী হন ফলপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা।

সম্প্রতি রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. আবুল কালাম একশ উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য দিয়েছিলেন শাহ্ মখদুম কলেজের প্রভাষক ও একটি কোচিং সেন্টারের রাবি শাখার পরিচালক মাসুদুল হাসানকে। সেই উত্তরপত্রগুলো মূল্যায়নের জন্য মাসুদ দায়িত্ব দিয়েছিলেন ওই কোচিং সেন্টারে কর্মরত রাবির এক ছাত্রকে। ওই ছাত্র আবার উত্তরপত্রগুলো দেন তার এক বান্ধবীকে। পরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিক্ষককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে ঢাকায় আনে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষকরা নিজেদের বদলে শিক্ষার্থীদের দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করালে পরীক্ষার্থীরা সঠিকভাবে মূল্যায়িত হয় না। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পুরো শিক্ষাজীবন, এমনকি চাকরি জীবনেও।

এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ার‌ম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনের কাছে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, ‘এটা আসলে বোঝার কোনও উপায় নেই। কারণ লাখ লাখ উত্তপরত্র পরীক্ষকদের কাছে দেওয়া হয়। তারা যদি সেই উত্তরপত্র না দেখে অন্যকে দিয়ে দেখান, সেটা শনাক্ত করা সম্ভব না। তবে কেউ বোর্ডে লিখিত অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত করে দেখতে পারি।’

অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, ‘যারা এমন অনৈতিক কাজ করেন, তারা তো মানুষের মধ্যেই পড়েন না।’

এদিকে রাজধানীর মুন্সি আব্দুর রব স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক অমূল্য কুমার বৈদ্য শিক্ষা বোর্ডের সমালোচনা করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শিক্ষাবোর্ড চাইলেই এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড মনিটরিং করতে পারে। কিন্তু তারা তা করতে চায় না। শিক্ষক উত্তরপত্রে নম্বর বসানোর সময় তার হাতের লেখা পরীক্ষা করে দেখা যায়। অন্য কাউকে দিয়ে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করলে তখনই তা বোঝা সম্ভব।’

দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক নিজেই উত্তরপত্র মূল্যায়ন করছেন কিনা, তা জানার জন্য পরিকল্পনার কথা জানালেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা ও মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ আহমদ ওবাইদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘উত্তরপত্র কে দেখছেন, সেটা বোঝার জন্য আমরা একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। তবে এটা বাস্তবায়ন হতে এখনও পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে।’

ওবাইদুস সাত্তার আরও বলেন, ‘নতুন এ পরিকল্পনায় পরীক্ষা শেষে সব খাতা স্ক্যান করে শিক্ষা বোর্ড একটি সার্ভার তৈরি করবে। সেখানে প্রতি পরীক্ষকের পৃথক আইডি ও পাসওয়ার্ড থাকবে। কেবলমাত্র পরীক্ষকই ওই আইডিতে প্রবেশ করে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করবেন। অন্য কেউ সেই আইডি ব্যবহার করতে পারবে না। কারণ প্রধান পরীক্ষক প্রতিমুহূর্তে প্রশ্নের নম্বর চেক করবেন। নম্বরে কোনও গড়মিল দেখা দিলেই বোঝা যাবে ওই পরীক্ষক উত্তরপত্র মূল্যায়ন করছেন নাকি অন্য কেউ করছেন। তখনই ধরা যাবে পরীক্ষক ছাড়া অন্য কেউ উত্তরপত্র মূল্যায়ন করছেন কিনা।’

/এসএনএইচ/টিআর/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
খারকিভে আবাসিক ভবনে রুশ হামলায় আহত ৬
খারকিভে আবাসিক ভবনে রুশ হামলায় আহত ৬
গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে মানতে হবে এই ৮ টিপস
গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে মানতে হবে এই ৮ টিপস
দুর্নীতি মামলায় এসকে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন
দুর্নীতি মামলায় এসকে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন
পঞ্চগড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ২ জনের
পঞ্চগড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ২ জনের
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
হংকং ও সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ হলো ভারতের কয়েকটি মসলা
হংকং ও সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ হলো ভারতের কয়েকটি মসলা