X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘চালকরা নিয়ম মেনে চললে যানজট হবে না’

মোহাম্মদ আফজাল হোসেন, টাঙ্গাইল
২২ জুন ২০১৭, ০৯:৫৭আপডেট : ২২ জুন ২০১৭, ০৯:৫৮

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের খানাখন্দ ভরাট করছেন টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের কর্মীরা (ছবি: টাঙ্গাইল প্রতিনিধি) শুরু হয়ে গেছে আপনজন ছেড়ে দূরে থাকা মানুষের ঘরে ফেরা। গত কয়েকদিন ধরেই রাস্তায় মানুষের চাপ পড়ছে। তবে বৃহস্পাতিবার (২২ জুন) থেকে সরকারি ছুটি শুরু হওয়ায় এদিনই রাস্তায় মূল চাপ তৈরি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যান্য বছরের মতো ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল পরিস্থিতি নিয়ে যাত্রী ও চালকদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, এখন পর্যন্ত যানজট নেই। রাস্তায় স্বাভাবিক ভাবেই চলছে যানবাহন। অতিরিক্ত গাড়ির চাপ সামলাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চালকরা নিয়ম মেনে চললে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার কথা।

বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস, পাকুল্ল্যা, জামুর্কি, নাটিয়াপাড়া, বাওইখোলা, করটিয়া টাঙ্গাইল বাইপাসসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় কোন যানজট নেই। তবে বৃহস্পতিবার বিকাল কিংবা সন্ধ্যায় দিকে অফিস ছুটির পর থেকে রাস্তায় যানবাহনের চাপ বেড়ে যাবে। তখন মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। এছাড়া বৃষ্টি পড়লে সড়কে যানজট ও ভোগান্তি দুইই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

ঈদের আগে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ কমাতে প্রশাসন থেকে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সড়ক বিভাগও দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা পর্যন্ত মহাসড়কের সম্প্রসারণ কাজের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রায় ৪০ কিলোমিটার রাস্তার সম্প্রসারিত অংশে গাড়ি চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা (ঢাকা-টাঙ্গাইল) অংশের ৭০ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করণ কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন

(সাসেক) সড়ক সংযোগ প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. জিকরুল হাসান বলেন, ‘আমরা প্রায় ৪০ কিলোমিটার রাস্তায় সম্প্রসারিত অংশে গাড়ি চলাচলের জন্য প্রস্তুত করেছি। এখানে ৬০ টা কালভার্টের মর্ধে শতকরা ৯০ ভাগ কালভার্ট ব্যবহার করা যাবে।’

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘চালকরা যদি নিয়ম মেনে চলেন তবে এবার যানজট হওয়ার তেমন আশঙ্কা নেই। কিন্তু চালকরা যদি চারলেন ফাঁকা পেয়ে চারলেনই ব্লক করে দেয়, তবে কোনও লাভ হবে না।’

জিকরুল হাসান আরও বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্প ছাড়াও নির্দিষ্ট কিছু স্থানে কন্সট্রাকশন ইকুইপমেন্ট যেমন রোলার, এসকেভেটর থাকবে। এগুলি রেডি আছে। ড্রাইভারদেও ছুটি দেওয়া হয়নি। পুলিশের সঙ্গে আমাদের সমন্বয় আছে। ডাকলেই মহাসড়কে বিশেষ প্রয়োজনে এগুলো দিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো যাবে।’ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সম্প্রসারিত অংশ গাড়ি চলাচলের জন্য প্রস্তুত (ছবি: টাঙ্গাইল প্রতিনিধি)

টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নুর-ই-আলম বলেন, ‘টাঙ্গাইল থেকে গোড়াই পর্যন্ত রাস্তায় কোনও খানাখন্দ নেই। বুধবার ইফতারের আগেই প্রতিটি গর্ত মেরামত করে ফেলা হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে এলেঙ্গায় কার্পেটিং কাজ করার কোনও অপশন নাই। সেখানে ইটের সোলিং দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। ঈদের আগ পর্যন্ত আমরা সবসময়ই প্রস্তুত রয়েছি। যদি নতুন কোনও খানাখন্দের সৃষ্টি হয় তা আমরা সঙ্গে সঙ্গেই মেরামত করবো।’

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘গতবারের চেয়ে আমাদের প্রস্তুতি অনেক বেশি। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে সাত জন এডিশনাল এসপির তদারকিতে সাত জন এএসপি, ১৬ জন ওসি, হাইওয়ে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিসহ ৮৯০ জন সদস্য যানজট নিরসনে নিয়োজিত থাকবেন। মোটরসাইকেল মোবাইল টিম থাকবে ১৬০টি। প্রতি কিলোমিটার এলাকায় তারা পেট্রোল দেবেন। তিন শিফটে কাজ করবেন তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘সড়কে খানাখন্দ থাকায় গত বছরের চেয়ে এবার ঈদে যাত্রায় মহাসড়কে যানজট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এখনও রাস্তার কাজ মেরামত করা হয়নি। তবে পুলিশ সব সময়ই যানজট নিরসনের চেষ্টা করবে। বুধবার থেকেই পুলিশ ২৪ ঘন্টা ডিউটি শুরু করে দিয়েছে।’

আইন ভঙ্গকারী গাড়ির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মোটর ভিহেকেল এ্যাক্টে জরিমানা খুবই সামান্য। আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করলেও অল্প টাকা জরিমানা। তাই কেউ অতটা তোয়াক্কা করে না। তবে আমরা একটা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যদি কোনও গাড়ি লেন না মেনে যানজট তৈরি করে তবে সেই গাড়িগুলোকে আটক করে রেখে দেবো। এই বিষয়ে সচেতন করতে মহাসড়কের কয়েকটি জায়গায় মাইকিং করা হবে।’

যানজটের ফলে যেমন যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না তেমনি যানজটের ফলে মহাসড়কের আশেপাশের কিছু লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টিও হয়ে থাকে। মহাসড়কের পাশে অনেকেই অস্থায়ীভাবে খাবার সামগ্রীসহ বিভিন্ন জিনিসের দোকান দিয়ে থাকেন। তারাও এবারে ঈদের আগে যানজটের সুবিধা নিতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।

টঙ্গাইল বাইপাসে ঘারিন্দা এলাকার রাসেল বলেন, ‘গতবছর আমি শুধু পানি আর (টাইগার) এনার্জি ড্রিংক বিক্রি করছি। লাভ ভালোই হয়। এবছরও তাই বিক্রি করবো। দেখা যাক এবার কী হয়।’

শুধু অস্থায়ী দোকানই নয়, মহাসড়কের পাশে স্থায়ী দোকানগুলোতেও থাকে ঈদের আগে বিশেষ প্রস্তুতি। পাকুল্যা বাজারের দীপ্ত কফি হাউজ এন্ড ফাস্টফুডের স্তাধিকারী উত্তম কুমার ঘোষ বলেন, ‘যানজটের সময় প্রচুর পরিমানে পানি, চিপস, বিস্কুট, চানাচুর, কফি বিক্রি হয়। স্বাভাবিক সময়ে আমার দোকান সকাল আটটা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। কিন্তু ঈদের আগে সারা রাত খোলা রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এতে আমারো উপকার হবে যাত্রীদেরও উপকার হবে।’

/এফএস/ 

আরও পড়ুন- 

ঈদে ঢাকা-রাজশাহী রুটে বিশেষ ট্রেন
বিমানের আরেক উড়োযানে ত্রুটি, বৃহস্পতিবার চালু হচ্ছে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
পণ্ড হলো না পরাগের শ্রম, দিল্লিকে হারালো রাজস্থান
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
বাসের পেছনের অংশ খোয়া যাচ্ছে কেন?
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা