X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

হবিগঞ্জ শহরের গলার কাঁটা খোয়াই নদী!

মোহাম্মদ নুর উদ্দিন, হবিগঞ্জ
২২ জুন ২০১৭, ১২:১৫আপডেট : ২২ জুন ২০১৭, ১২:১৬

খোয়াই নদী (ছবি: হবিগঞ্জ প্রতিনিধি) হবিগঞ্জ শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার খোয়াই নদীকে বর্ষায় গলার কাঁটা হিসেবে দেখছেন বাসিন্দারা। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বৃষ্টিপাত হলেই খোয়াই নদীর পানি বাড়তে থাকে। আর পানি বাড়লেই দুই কূল উপচে যায়। ফলে বৃষ্টি হলেই আতঙ্কে থাকেন শহরসহ আশপাশের এলাকার কয়েক লাখ মানুষ।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার ২৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায়এবং শহররক্ষা বাঁধে একাধিক ফাটল ও গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় শহর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ জন্য শহরে ৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।  সেই সঙ্গে প্রস্তুত রাখা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে।

জানা গেছে, অতীতে এ ধরনের পরিস্থিতি না থাকলেও গত কয়েক বছর ধরে খোয়াই নদী ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। মূলত শুকনা মৌসুমে এলাকার প্রভাবশালীরা খোয়াই নদীর বাঁধের তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে টাক্টর দিয়ে মাটি ও বালু উত্তোলন করেন। হবিগঞ্জ শহর থেকে শায়েস্তাগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার অংশে অন্তত ১০টি স্থানে বাঁধ কেটে মাটি ও বালু উত্তোলন করা হয়। ফলে এ স্থানগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। খোয়াই নদী (ছবি: হবিগঞ্জ প্রতিনিধি)

সদর উপজেলার তেতৈয়া গ্রামের জমির আলী জানান, ‘বাঁধ কেটে রাস্তা তৈরি করে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা চলছেই। এ কারণে নদীতে পানি আসলেই সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। কখন যে নদী ভেঙে সবকিছু নিয়ে যায়।’

শহরের গরুর বাজার এলাকার আসমত আলী জানান, ‘অবৈধভবে মাটি ও বালু উত্তোলন করে নদীর বাঁধ নষ্ট করে ফেলে এক শ্রেণির লোকজন। প্রশাসন অনেকটা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। এর এর খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের গরিব লোকদের।’

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল গ্রামের বাসিন্দা আক্রাম আলী জানান, ‘খোয়াই নদী দিন দিন ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে এখন আমাদের গলার কাঁটা হিসেবে পরিণত হয়েছে। এখন প্রায়ই সারা রাত জেগে পাহারা দিতে হয়েছে।’ খোয়াই নদীর তীরে বালির বস্তা ফেলে পানি আটকানোর চেষ্টা (ছবি: হবিগঞ্জ প্রতিনিধি)

এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় চিফ ইঞ্জিনার কেএম আনেয়ার হোসেন জানান, বন্যা পরবর্তী সময়ে খোয়াই নদী খনন করে এর নাব্যতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, ‘আগামীতে খোয়াই নদীর পুনর্বাসন কাজ করা হবে। যেখানে ঝূঁকিপূর্ণ আছে সেই স্থানে মেরামত করা হবে।’

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সফিউল আলম জানিয়েছেন, ‘যারা বাঁধ কেটে মাটি ও বালু উত্তোলন করছে আগামীতের সেই বিষয়টি লক্ষ্য রাখা হবে এবং মাটি ও বালু উত্তোলন বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

মঙ্গলবার বিকালে বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে ট্রিবিউনকে তিনি জানান, ‘ইতোমধ্যে শহরের ৯টি দ্বিতল স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দিয়ে শহরে মাইকিং করা হয়েছে। যেখানেই গর্ত বা ফাটল সৃষ্টি হয়েছে প্রশাসনের পাশাপাশি এলাকাবাসির সহযোগিতায় ফাটল মেরামত করা হয়েছে।’

/এফএস/ 

আরও পড়ুন- খোয়াই নদীর বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে আরও ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সীমান্তে কোনও ধরনের হত্যাকাণ্ড চায় না বাংলাদেশ
সীমান্তে কোনও ধরনের হত্যাকাণ্ড চায় না বাংলাদেশ
দুর্নীতির মামলায় মেজর মান্নান কারাগারে
দুর্নীতির মামলায় মেজর মান্নান কারাগারে
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমাদের অবশ্যই জেতা উচিত: সাকিব
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমাদের অবশ্যই জেতা উচিত: সাকিব
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
মন্ত্রীর অপেক্ষায় তরমুজ বিক্রিতে দেরি, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
কারাগারে যেভাবে সেহরি-ইফতার করেন কয়েদিরা
কারাগারে যেভাবে সেহরি-ইফতার করেন কয়েদিরা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
‘বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ালে বর্জনের কথা বিশ্বাস করবো’
বিএনপির নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী‘বউদের ভারতীয় শাড়ি পোড়ালে বর্জনের কথা বিশ্বাস করবো’