বৃষ্টির কারণে ঈদের দিন কিছুটা ফাঁকা গেলেও দ্বিতীয় দিন দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল সাতক্ষীরার বিনোদন কেন্দ্রগুলো। মঙ্গলবার (২৭ জুন) এসব বিনোদন কেন্দ্রে শিশুসহ নানান বয়সী মানুষের দেখা মিলেছে।
ঈদের দ্বিতীয় দিনে জেলার সিনেমাহলগুলোতেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সব বয়সের মানুষের পাশাপাশি তরুণদের মাঝে দেখা গেছে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা। অনেকে প্রিয়জনকে নিয়ে গিয়েছিলেন সিনেমা হলে।
মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল সাতক্ষীরা রেঞ্চের কলাগাছিয়া, দোবেকি, আকাশলীনা ইকো টুরিজমসহ সুন্দরবনের বিভিন্ন পয়েন্টে। বিশ্বের বৃহত্তম মানগ্রোভ ফরেস্টের নান্দনিক সৌন্দর্য দেখতে হাজারও মানুষ ছুটে এসেছিলেন সেখানে।
সুন্দরবন ছাড়াও জেলা শহরের আব্দুর রাজ্জাক শিশু পার্ক, মোজাফ্ফর গার্ডেন, উড়াল মন টুরিজম, কারামোরা ম্যানগ্রোভ ভিলেজ, লিমপিড গার্ডেন, ঐতিহাসিক বনবিবি তলা (বটগাছ), রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্র, সীমান্তের ইছামতি নদীর তীরে টাকীর ঘাট, শ্যামনগর জমিদার বাড়ি, নলতা রওজা শরীফ, সোনাবাড়িয়া মঠ মন্দিরসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রেও দর্শনার্থীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। বিশেষ করে, শিশু ও তরুণদের পদচারণা ছিল চোখে পড়ার মতো।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শিশুরা মা-বাবার হাত ধরে, কেউবা ভাই-বোন বা আত্মীয়-স্বজনের হাত ধরে ঘুরে ঘুরে দেখছে প্রাণী ও প্রকৃতি। আর তরুণরা ছোট ছোট পিকআপ ভাড়া করে সাউন্ড বক্স লাগিয়ে গান-বাজনা করতে করতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে মাইক্রোবাস বা মোটরসাইকেলে হাজির হয়েছিলেন। এরপর ওই এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি অনেকেই ছবি তুলছেন, কেউ কেউ তুলেছেন সেলফি।
সুন্দরবনে ঘুরতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারুফ উল নাহিয়ান বলেন, ‘সুন্দরবন এর আগে বেশ কয়েকবার আসা হয়েছে। এখানে যখনই আসি তখনই মনে বাজে, একি অপরূপ রূপে মা তোমায়/হেরিনু পল্লী জননী। এবার ঈদের ছুটিতে বন্ধুদের সঙ্গে এসেছি। তবে বর্ষার সময়ে সুন্দরবনে আসা হয়নি, বর্ষার সময় সুন্দরবন সত্যিই অপরূপ।’
সুন্দরবনের পাদদেশে ২শ’ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠা আকাশলীনা ইকো টুরিজম সেন্টারে ঘুরতে আসা মাসুদ রানা দম্পতি বলেন, ‘এখানে এসে সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্র দেখে মুগ্ধ হয়েছি। এখানে রয়েছে আব্দুস সামাদ মিউজিয়ামে সংরক্ষিত বিরল প্রজাতির বিভিন্ন প্রকার মাছ ও জিব জন্তুর নমুনা।’
শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে সুন্দরবন, আকাশলীনা ইকো টুরিজম সেন্টারসহ এ এলাকার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকরা আসছেন এখানে। এসব এলাকায় যাতে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সর্তক রয়েছেন।’
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘ঈদে মানুষের চলাফেরা নির্বিঘ্ন করতে জেলাজুড়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
/এমএ/