নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে অর্ধশতাধিক বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। উপজেলার কেন্দুয়াব এলাকায় দু’দফা হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় ও বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলায় শিশু ও নারীসহ তিন জন আহত হয়েছেন।
সরেজমিন স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো.বাদল মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কোন্দল চলছে। বাদল মিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ঈদের ২ দিন আগে দু’গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে মঙ্গলবার রাতে দেলোয়ার হোসেন দেলুর সমর্থকরা কেন্দুয়াব বাজারের পাশে কামাল হোসেনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম মিয়া ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফখরুল। এছাড়াও শুক্কুর আলী, বিল্লাল হোসেন, ইসমাইল ও কবিরসহ প্রায় ২ শতাধিক যুবক হামলায় অংশ নেয়। তারা দোকান ও বাড়ি ভাঙচুর করাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
হামলাকারীরা ফজলুল হক, শাহ আলম, মনির হোসেন, আরজু মিয়া, ইমান আলী, ছানা উল্লাহ, নারগিস বেগম, নুরুজ্জামান, মিস্টার মিয়ার বাড়িসহ প্রায় ২০/২৫টি বাড়ি ভাঙচুর করে। এসময় তাদের ঘরের টিনের বেড়া রামদা, চাইনিজ কুড়াল ও হকিস্টিক দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে। এছাড়াও টেলিভিশন, স্বর্ণালঙ্কার ও নতুন কাপড় চোপড়সহ নগদ অর্থ ও মালামাল লুট করে।
এসময় হামলায় হাতেম আলী, সাফিয়া বেগম ও আরহান নামে আড়াই মাসের এক শিশু আহত হয়। আহতদের নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে (২৮ জুন) মো. সেলিম মিয়ার নেতৃত্বে দেলু বাহিনীর সদস্য ফখরুল, শুক্কুর আলী, নাসিরুল, নিয়ামত আলী, আজিজ ও নাজিম উদ্দীনসহ প্রায় শতাধিক যুবক আবারও হামলা চালায়। এসময় তারা ওয়ার্ড মেম্বার মো. বাদল মিয়ার বাড়িসহ তার সমর্থক লাল মিয়া, এরশাদ, ইদ্রিস আলী ও হারুন মিয়াসহ আরও ২০/২৫টি বাড়ি ভাঙচুর করে।
ইউপি সদস্য মো. বাদল মিয়া বলেন, ‘দেলু এলাকায় রাম রাজত্ব কায়েম করার লক্ষ্যে নিরীহ মানুষের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি বিষয়গুলো মিমাংসা করতে কিন্তু দেলুর জন্য সম্ভব হচ্ছে না। সে আমাকে ও আমার পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়েছে।’
ডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান সাবেরুল হাই খান বলেন, ‘দেলোয়ার হোসেন দেলুর সমর্থকরা কিছুদিন পর পরই এরকম ঘটনা ঘটানোর কারণে এলাকার শান্তি নষ্ট হচ্ছে। বারবার চেষ্টা করেও মিমাংসা করতে পারছি না।’
অভিযুক্ত ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলুর মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
পলাশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ ও ওসি (তদন্ত) বিপ্লব কুমার দত্ত চৌধুরীর সরকারি মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলেও তারা মোবাইল রিসিভ করেননি।
পরে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে অবগত নন জানিয়ে, বিষয়টি নিয়ে পলাশ থানার ওসির সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।
/জেবি/
আরও পড়তে পারেন: ঈদের তৃতীয় দিনেও মাদারীপুরের লেকে দর্শনার্থীদের ভীড়