মংলা বন্দর থেকে প্রায় ১২০ নটিক্যাল মাইল দূরে সমুদ্রে জেগে ওঠেছে একটি বালু চর। প্রায় ১৮ বছর আগে চরটি জেগে ওঠে। এর দৈর্ঘ্য ৮ মাইল ও প্রস্থ ৬ মাইল। এরই মধ্যে চরে সুন্দরী,কলা,কচু,বাদামসহ নানা প্রজাতির গাছ-পালা জন্মাতে শুরু করেছে। নানা জাতের পাখিও বাসা বেঁধেছে এসব গাছে। জেলেরা চরটির নাম দেয় ‘বঙ্গবন্ধু চর’। সেই থেকেই এ নামে পরিচিতি পায় চরটি। সাগরের বুকে জেগে ওঠা চরটি দেখতে ভিড় জমাতে শুরু করছেন পর্যটকরা। যাদের বেশিরভাগই ইকো ট্যুরিস্ট। পর্যটন সহায়ক সুযোগ-সুবিধা দিলে এটিও হতে পারে পর্যটনের নতুন জায়গা।
সুন্দরবন বিভাগ খুলনা রেঞ্জের সিএফ আমির হোসেন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ১৮ থেকে ২০ বছর আগে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা চরটির নামকরণ করেন কয়েকজন জেলে। বঙ্গবন্ধুর চরে এখন ইকো-ট্যুরিস্টদের (প্রতিবেশ পর্যটক) পদচারণা বেড়েই চলেছে। তবে আপাতত সেখানে কোনও পর্যটন স্পট করার পরিকল্পনা নেই বন বিভাগের।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চরের পশে আমাদের নীল কমল অভয়ারন্য আছে। ওই চরটা অভয়ারন্যের অংশ এবং এটা ওয়াইল্ড হ্যারিজেরও (বিশ্ব ঐতিহ্য) অংশ। ওটা ন্যাচারেল ফরেস্ট। তাই এটাকে সংরক্ষণ করাই আমাদের কাজ।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের মংলা অঞ্চলের সমন্বয়কারী নুর আলম শেখ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ইকো-ট্যুরিস্ট ও জেলেদের রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর চর সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ,জলসীমায় চোরাচালান রোধ,মংলা ও পায়রা বন্দরগামী দেশি-বিদেশি জাহাজ ও বঙ্গোপসাগরে মাছধরা জেলেরা নিরাপত্তা দাবি জোরদার হচ্ছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে সমুদ্রগামী জেলেদের জীবন রক্ষা উন্নীত হবে।’
মংলা কোস্টগার্ডের অপারেশন কর্মকর্তা লে. কমান্ডার ফরিদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান,বাংলাদেশ জলসীমায় চোরাচালান রোধ,মংলা ও পায়রা বন্দরগামী দেশি-বিদেশি জাহাজসহ বঙ্গোপসাগরের নিরাপত্তায় সরকার বঙ্গবন্ধুর চরে কোস্টগার্ডের ঘাঁটি নির্মাণ করতে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন,কোস্টগার্ডের বেইজ নির্মাণ হলে মংলা ও পায়রা বন্দরে দেশি-বিদেশি জাহাজের নিরাপত্তার জন্য মনিটরিং সহজ হবে। বঙ্গোপসাগরের জাহাজগুলো নজরদারির মধ্যে রাখার পাশাপাশি রাডারের মাধ্যমে এর গতিবিধিও ট্রাক করা যাবে।
তিনি বলেন,সুন্দরবনের দুবলারচর ও হিরন পয়েন্টের ১০ নটিক্যাল মাইল পূর্ব-দক্ষিণে জেগে ওঠা বঙ্গবন্ধুর আইল্যান্ডে কোস্টগার্ডের বেইজ ক্যাম্প নির্মাণ হলে সমুদ্রগামী জাহাজ ও জেলেদের নিরাপত্তা জোরদার হবে বলে মনে করছেন তারা।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. শফিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই দ্বীপটি দেশের স্বার্থে কিভাবে ব্যবহার করা যায় সে ব্যাপারে আমরা খতিয়ে দেখছি। স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মতামত চেয়েছে কোস্টগার্ডের একটি বেইজ নির্মাণে। কারণ মৎস্যজীবীসহ সার্বিক নিরাপত্তা বলয়ের জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’
/এসটি/