কুষ্টিয়ায় গোখরা সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক সপ্তাহে জেলার মিরপুর ও খোকসা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় ১০৩টি গোখরা সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে মারা পড়েছে বেশকিছু সাপ। এছাড়াও জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে কিছু গোখরা। হঠাৎ বিপুল সংখ্যক সাপ ধরা পড়ায় এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সর্বশেষ রবিবার (১৬ জুলাই) কুষ্টিয়ার মিরপুরে আরিফুল ইসলাম রিফা নামে এক ফল ব্যবসায়ীর বসতঘরে ১১টি গোখরা সাপ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১০টি বাঁচ্চা এবং একটি মা সাপ। উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের মোচাইনগর গ্রামের ফল ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম রিফার বাড়ি থেকে এ সাপগুলো উদ্ধার করা হয়।
আরিফুল ইসলাম রিফা জানান, দুপুরে বাজার থেকে বাড়িতে এসে দেখি দুটি গোখরা সাপের বাচ্চা ঘরের মেঝেতে ছোটাছুটি করছে। তারপর সাপ দুটোকে মারতে গিয়ে আরও একটি গোখরা সাপের বাচ্চা দেখা যায়। আতঙ্কিত হয়ে স্থানীয় সাপুড়ে আনারুল ইসলামকে খবর দেওয়া হয়। তিনি এসে কড়ি চালান দিয়ে বুঝতে পারেন সেখানে আরও সাপ আছে। সাপুড়ে ঘরের মেঝের মাটি খুঁড়ে একে একে সাপগুলোকে উদ্ধার করেন। সাপুড়ে আনারুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে কড়ি চালান দিয়ে বুঝতে পারি আরও সাপ আছে। পরে মাটি খুঁড়ে একে একে ৮টি সাপ উদ্ধার করেছি। ধারণা করছি আরও সাপের বাচ্চা আছে।
এর আগে গত ১৪ জুলাই কুষ্টিয়ার মিরপুরে ইসাহক আলী নামে এক ব্যক্তির বসতঘর থেকে ১৬টি গোখরা সাপের বাচ্চা পাওয়া যায়। স্থানীয়রা বাচ্চাগুলোকে মেরে ফেলে। উপজেলার আমলা ইউনিয়নের ঘোষপাড়া এলাকার ইসাহক আলীর ঘরে এই বিষধর গোখরা সাপগুলো পাওয়া যায়।
ইসাহক আলী জানান, সন্ধ্যায় ঘরের মেঝেতে ৩টি সাপের বাচ্চা দেখা যায়। পরে আরও একটি দেখতে পাওয়া গেলে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘরের মেঝে খুঁড়ে একে একে ১৬টি গোখরা সাপের বাচ্চা পাওয়া যায়।
গত ১২ জুলাই কুষ্টিয়ার খোকসায় বসতবাড়িতে ৪৮টি গোখরা সাপ ধরা পড়ে। উপজেলার চুনিয়াপাড়া এলাকার অসিম কুমার বিশ্বাসের বসতঘর থেকে ওই গোখরা সাপ ধরা হয়।
বাড়ির মালিক ওয়াসিম জানান, দুপুরে ঘরের মেঝেতে একটি সাপ দেখতে পাই। তাৎক্ষণিক স্থানীয় সাপুড়িয়া গফুর আলীকে খবর দেওয়া হয়। প্রায় ১ ঘণ্টা ঘরের মাটি কাটার পর ঘরের মেঝের মাঝখানে একটি স্থানে ২৫টি সাপ পাওয়া যায়। পরে অন্য স্থানে বাকি সাপ পাওয়া যায়।
এর আগে ১০ জুলাই কুষ্টিয়ার মিরপুরে একটি বাড়ির রান্নাঘরে ২৮টি গোখরা সাপ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ২৭টি বাচ্চা আর ১টি মা সাপ। স্থানীয়রা বাচ্চাগুলোকে মেরে ফেলে। তবে মা সাপটিকে ধরে রাখা হয়। উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের সদরপুর স্কুল পাড়ার নাজমুল ইসলাম লিটনের রান্না ঘরে এ সাপগুলো পাওয়া যায়।
নাজমুল ইসলাম লিটন জানান, সকালে দুটি গোখরা সাপের বাচ্চা বাইরে দেখা যায়। পরে রান্না ঘরের ভিতরের আরও দুইটি দেখা যায়। তারপর রান্না ঘরের মাটি খুঁড়ে একে একে ২৭টি বাচ্চা পাওয়া যায়। স্থানীয় চাদোকানী ইসাহক আলী বলেন, একের পর এক সাপ ধরা পড়ায় আমরা আতঙ্কে রয়েছি। ঘরে-বাইরে সবখানে এমন সাপ ধরা পড়া আগে কখনো দেখিনি।
/বিএল/