X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘বুদ্ধ জানে আর কতদিন এভাবে থাকতে হবে’

জিয়াউল হক, রাঙামাটি
২১ জুলাই ২০১৭, ২০:৩৩আপডেট : ২১ জুলাই ২০১৭, ২০:৩৪

 

জীবন বসু চাকমা ও তার স্ত্রী। ছবি- প্রতিনিধি ‘আমার যেখানে বাড়িটি ছিল সেখানে থাকার আর কোনও উপায় নেই। সরকার যদি কোথাও থাকার ব্যবস্থা করতো, সেখানে চলে যেতাম। এখানে আর থাকতে ইচ্ছে করে না। বুদ্ধ জানে আর কতদিন এভাবে থাকতে হবে।’ পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত এবং বর্তমানে রাঙামাটির জিমনেশিয়াম আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা জীবন বসু চাকমা এসব কথা বলেন। এর আগে  ভেদভেদী এলাকায় কিনামুন খোলায় থাকতেন তিনি।

জীবন বসু চাকমা আরও  বলেন, ‘আমার বাসা দুই পাহাড়ের ঢালে ছিল। বাসার ওপরে কল্পরঞ্জন চাকমা দুই মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে থাকতেন। ঘটনার দিন কল্পরঞ্জন বাসায় ছিলেন না।  কল্পরঞ্জনের স্ত্রী কন্তি চাকমা,তার মেয়ে সান্তনা চাকমা ও লতিফা চাকমা মাটি চাপা পড়ে। লতিফা চাকমা বাঁচার জন্য চিৎকার করেন। তার চিৎকার শুনে আমরা সবাই বের হয়ে দেখি, তার বুক পর্যন্ত মাটিতে চাপা পড়া অবস্থায়। আমরা কয়েকজন মিলে তাকে উদ্ধার করে নিরাপদে যাওয়ার চেষ্টা করি।’

তিনি বলেন, ‘ আশ্রয় কেন্দ্রে আমাদের কিছু সমস্যা হচ্ছে। আমরা সাধারণত একটু ভিন্ন ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করি। বাঙালিরা যেভাবে রান্না করা খাবার খায়, সে ধরনের খাবার খেতে আমাদের কষ্ট হয়। জেলা প্রশাসককে ও এখানে যারা দায়িত্বে রয়েছেন তাদেরও বলেছি, কিন্তু সমাধান হয়নি।’

রাঙামাটির জিমনেশিয়াম আশ্রয় কেন্দ্র। ছবি- প্রতিনিধি জীবন বসু চাকমা বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে দুই ছেলে নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছিলাম, কিন্তু এক মেয়ে ও এক ছেলে কলেজে পড়াশোনা করে। তারা এখানে থাকলে পড়াশোনা হবে না এই ভেবে তাদের জন্য ছোট্ট একটি ঘর ভাড়া করে দিয়েছি। ওরা চার জন ওখানে থাকে। আমার স্ত্রী ওদের  রান্না-বান্না করে দিয়ে আসে। আমরা ওদের জন্য খাবার চাইলে তাদের এখানে নিয়ে আসতে বলা হয়। কিন্তু আমি আমার বাচ্চাদের জীবন নষ্ট করতে চাই না। আমরা কষ্ট করবো তারপরও ছেলে-মেয়েগুলো মানুষ হোক। ওদের জন্য যদি আশ্রয় কেন্দ্র থেকে খাবার ব্যবস্থা হতো তাহলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হতো।’ 

রাঙামাটির জেলা প্রশসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি তারা যে ধরনের খাবার খায় তার ব্যবস্থা করা হয়। তারা যদি সেই খাবার প্রতিদিন খেতে চায় তাহলে ব্যবস্থা করা হবে। আমি বিষয়টি বলে দেবো।’

তিনি আরও  বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য একটি টেকসই পুনর্বাসন প্রয়োজন। তাড়াহুড়ো না করে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে আর কোনও পাহাড় ধসের ঘটনায় কোনও লাশ আমাদের দেখতে না হয়।’

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন প্রবল বর্ষণের কারণে রাঙামাটিতে ঘটে যায় স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড় ধস।  এতে ১২০ জন  মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। আর  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৮ হাজার ৫০০ পরিবার। সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ১ হাজার ২৩১টি বাড়ি, আংশিক বিধ্বস্ত বাড়ির সংখ্যা ৯ হাজার ৫০০। বাকিগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ধসের শিকার পরিবারগুলোর সদস্যরা বেশির ভাগই এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে।তাদের খাবারের জোগান দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। 

/এনআই/ এপিএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
খারকিভে আবাসিক ভবনে রুশ হামলায় আহত ৬
খারকিভে আবাসিক ভবনে রুশ হামলায় আহত ৬
গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে মানতে হবে এই ৮ টিপস
গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে মানতে হবে এই ৮ টিপস
দুর্নীতি মামলায় এসকে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন
দুর্নীতি মামলায় এসকে সিনহার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৬ জুন
পঞ্চগড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ২ জনের
পঞ্চগড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ২ জনের
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
জরিপ চলাকালীন জমির মালিকদের জানাতে হবে: ভূমিমন্ত্রী
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
হংকং ও সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ হলো ভারতের কয়েকটি মসলা
হংকং ও সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ হলো ভারতের কয়েকটি মসলা