X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০
একাদশ সংসদ নির্বাচন

বরগুনায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ, পরির্বতনের আশা তরুণদের

তরিকুল রিয়াজ, বরগুনা
২২ জুলাই ২০১৭, ১২:৫০আপডেট : ২২ জুলাই ২০১৭, ১৩:২৬

 

বরগুনার আওয়ামী লীগের চার নেতা

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বরগুনায় সক্রিয় হয়ে ওঠেছে প্রধান তিনটি দলের নেতাকর্মীরা। মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। বরগুনা এক আসন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত থাকলেও এটি দখলে নেওয়ার চেষ্টায় আছে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। তবে বিএনপি অন্তঃদ্বন্দ্বে জর্জরিত। আর জাতীয় পার্টি চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে।

পরিবর্তনের ডাক নিয়ে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের তরুণ নেতারা। তাদের অভিযোগ, সারাদেশে উন্নয়ন হলেও স্থানীয় এমপির অবহেলার কারণে উন্নয়ন হয়নি বরগুনায়। তাদের আশা, সৎ, যোগ্য ও শিক্ষিত প্রার্থীকে এবার মনোনয়ন দেবে।  

বরগুনার তিনটি আসনকে একত্রিত করে ২০০৮ সালে দুটি আসন করা হয়। বরগুনা,আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে এক (১০৯) এবং পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী নিয়ে দুই (১১০) আসন।

এক আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের প্রত্যাশীদের মধ্য আছেন, বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্বাস হোসেন মন্টু,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল আহসান মহারাজ,সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু,জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মশিউর রহমান শিহাব,গোলাম সরোয়ার ফোরকারন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন সাবু এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন।

অভিযোগ আছে, বরগুনা এক আসনের এমপি শম্ভুর কারণেই পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়। সেই থেকেই দলের ভেতরে চলছে ঠাণ্ডা লড়াই। আগামী নির্বাচনের শম্ভুর প্রধান প্রতিপক্ষ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুল আহসান মহারাজ।

এমপি শম্ভু বরগুনা এক আসন থেকে চারবার নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯৬-২০০১ আমলে খাদ্য উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বও পালন করেছেন। মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলে, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। বরগুনার জনগণকে একত্রিত করে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত করেছি। আমার উপরে প্রধানমন্ত্রী আস্থা রেখে যতবার নৌকা প্রতীক দিয়েছেন আমি তার প্রতিদান দিয়েছি। দলের নেতাকর্মীদের মাঝে কখনও বিভেদ সৃষ্টি হতে দেইনি। আশা করি, আগামী নির্বাচনেও দল আমার উপর আস্থা রাখবে।’

বরগুনার বিএনপি তিন নেতা

২০০১ সালে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে শম্ভুকে হারিয়ে এমপি নির্বাচিত দেলোয়ার হোসেন। কোন্দলের কারণে ১২ বছর দলের ছিলেন তিনি। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘বরগুনার রাজনীতিতে  পরিবর্তন দরকার। দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। দল আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবো।’

জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছি। এর আগেও মনোনয়ন চেয়েছি, এবারও চাইবো। আশা করি দল বিবেচনায় নেবে।’

আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন কামরুল আহসান মহারাজ। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আন্দোলন সংগ্রামে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। দলের ও নৌকা প্রতীকের সম্মান অক্ষুণ্নরাখতে পৌর নির্বাচনে গুলি খেয়েছি। নেতাকর্মীদের বিপদে-আপদে পাশে ছিলাম, আছি। বরগুনার উন্নয়ন এবং মানুষের মাঝে আস্থা ফেরাতে পরিবর্তন দরকার। দল মনোনয়ন দিলে বিজয় নিশ্চিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই আসনটি উপহার দিতে পারবো।’

সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন,‘আমি বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী পরির্বতনের রাজনীতিকে এগিয়ে নেবেন এবং জেলার দুটি আসনেই পরিবর্তন আসবে। আসবে নতুনদের হাতে নেতৃত্ব।’

এদিকে, বিএনপি বরগুনার দুটি আসন ছিনিয়ে নিতে চায়। বিএনপির জেলা সভাপতি ও সম্পাদক এক গ্রুপে থাকলেও দলের অন্য নেতাদের মধ্যে রয়েছে অনেক দ্বন্দ্ব। ধারণা করা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় কিমিটির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ উজ জামান মামুনকে মনোনয়ন দিতে পারে।

মনোনয়ন দৌড়ে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নিবার্হী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি মতিয়ার রহমান তালুকদার,জেলা বিএনপির সভাপতি মাহবুবুল আলাম ফারুক মোল্লা,সাবেক উপজেলা চেয়্যারম্যান ও কৃষক দলের আহ্বায়ক  লে. কর্নেল (অব.) আ. খালেক।

ফিরোজ উজ জামান বলেন,‘অবহেলিত বরগুনাকে এগিয়ে নিতে বিএনপির কোনও বিকল্প নেই। এক নম্বর আসনটি উদ্ধার করতে অবশ্যই কেন্দ্র ভেবে চিন্তে প্রার্থী বাছাই করবেন। দল  আমাকে মনোনয়ন দিলে খালেদা জিয়াকে আসনটি উপহার দিতে পারবো। একই সঙ্গে বরগুনার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করতে পারবো।’

মতিয়ার রহমান বলেন,‘২০০১ সালের উপ-নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলাম। তখন এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। মনোনয়ন দিলে এক আসন উদ্ধার করে খালেদা জিয়ার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে পারবো।’

মাহবুবুল আলাম বলেন, ‘বরগুনার বিএনপিকে সুসংগঠিত করতে নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। দলের কাছে আগেও মনোনয়ন চেয়েছি। দল শরীক দলকে এ আসন ছেড়ে দিয়েছে। আশা করি আগামী নির্বাচনে এ আসন উদ্ধার করতে বিএনপির প্রার্থী দেবে।’

জাতীয় পার্টির নেতা শাহজাহান মুনসুর

তবে জেলায় জাতীয় পার্টির দৃশ্যমান কোনও কার্যক্রম দেখা যায়নি। এরশাদ সরকারের আমলে দলের অবস্থা ভালো থাকলেও এখন অবস্থা বেগতিক। জাতীয় পার্টির বরগুনা জেলা সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য জাফরুল আহসান ফরহাদের মৃত্যুর পরে মাঠে নেই নেতাকর্মীরা। দলীয় কাজ না থাকায় অফিসও খুলছে না কেউ। নেতাকর্মীরাও ব্যস্ত ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে। এবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী হতে পারেন দলের কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শাহজাহান মুনসুর।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘বরগুনা এক সময় জাতীয় পার্টির ঘাঁটি ছিল। বিভিন্ন কারণে এখন আর নেই। আবারও দলের সব নেতাকর্মীদের একত্রিত করে বরগুনা এক আসনটি পল্লী বন্ধু এরশাদকে উপহার দিতে চাই।’

/এসটি/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইউক্রেনের শান্তি পরিকল্পনা অর্থহীন: ল্যাভরভ
ইউক্রেনের শান্তি পরিকল্পনা অর্থহীন: ল্যাভরভ
বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা চাইলেন ওবায়দুল কাদের
বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা চাইলেন ওবায়দুল কাদের
৭ বছর পর নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি
৭ বছর পর নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়