চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙরে পণ্যবোঝাই জাহাজকে ১০- ১৫ দিন পর্যন্ত দেরি করানোর অভিযোগ উঠেছে বন্দর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এতে কাঁচামাল বোঝাই জাহাজের পণ্য নষ্ট হচ্ছে এবং বিদেশি ক্রেতারাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে আমদানি-রফতানি ব্যবসা।
শনিবার (২২ জুলাই) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় ব্যবসায়ীরা এসব অভিযোগ করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) থেকে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা শুরু হয় বন্দর ও কাস্টমস। এ উদ্যোগকে আরও বেগবান করতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ।
সভায় তৈরি পোষাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ'র পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ বলেন, ‘রফতানি পণ্যের কাঁচামাল নিয়ে একটি জাহাজকে বন্দরের বর্হিনোঙরে ১০- ১৫ দিন অবস্থান করতে হচ্ছে। বন্দর ত্যাগ করতে সব মিলিয়ে প্রায় ২০ দিন চলে যাচ্ছে। এতে আমাদের বাড়তি অর্থ খরচ হয়। পাশাপাশি বিদেশি ক্রেতাদেরও ধরে রাখতে পারছি না।’ সম্প্রতি একজন বিদেশি ক্রেতা নতুন করে চুক্তি করবেন না বলে জানিয়েছেন বলেও তিনি জানান।
চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান জানান, বিশ্বের কোনও বন্দরের মূল চত্বরে কনটেইনার পড়ে থাকে না। জাহাজ থেকে নামানোর পর বন্দরের বাইরে নেওয়া হয়। এখানেও বন্দর থেকে আমদানি পণ্যের সব কনটেইনার বেসরকারি ডিপোতে নেওয়ার নিয়ম করতে হবে।
কনটেইনার শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বন্দরে নিলামযোগ্য ৪ হাজার ২শ কনটেইনার ধরে পড়ে আছে কয়েক বছর ধরে। কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে নিলামে তোলা যাচ্ছে না।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘লাগাতার কয়েকদিন ২৪ ঘণ্টা কাজ করলে শিগগিরই জাহাজ ও কনটেইনারের জট কমে যাবে। এখন থেকে আর কোনও জাহাজ অথবা কনটেইনার পড়ে থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বন্দরের নতুন ইয়ার্ড ও জেটি নির্মাণ ছাড়াও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয় করার বিষয়টিও বন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন। আশা করি বন্দর ও কাস্টমস নিয়ে আর অভিযোগ থাকবে না।’
কাজের গতি আনার জন্য বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন স্টেশন হতে ৯৪ জন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এবং ৯ জন সহকারী কমিশনারকে কাস্টমস হাউজে বদলি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের কমিশনার এএফএম আবদুল্লাহ খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল এম খালেদ ইকবাল, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়, এনবিআর সদস্য (শুল্ক ও নীতি) মো. লুৎফুর রহমান, সুলতান মোহাম্মদ ইকবাল ও চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার মুহাম্মদ মুবিনুল কবির।
এএইচ/