X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে ৮ বছরের জেসিকা

বান্দরবান প্রতিনিধি
২৪ জুলাই ২০১৭, ১৯:১৪আপডেট : ২৪ জুলাই ২০১৭, ১৯:১৪

 

মায়ের সঙ্গে আট বছরের মেয়ে জেসিকা ‘আমার মা কোথায়? আমি মায়ের কাছে যাবো। আমাকে আমার মায়ের কাছে নিয়ে চলো।’ আর্তনাদ করে এ কথাগুলোই বলছিল আট বছরের শিশু জেসিকা বড়ুয়া। বান্দরবানের দনিয়াল পাড়ার কাছে পাহাড় ধসে নিখোঁজ হওয়া মুন্নি বড়ুয়ার (৩০) একমাত্র মেয়ে সে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কাজ করতেন মুন্নি বড়–য়া। রবিবার (২৩ জুলাই) প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে অফিসে যাচ্ছিলেন তিনি। পথিমধ্যে পাহাড় ধসের কবলে পড়ে নিখোঁজ হন এ নারী স্বাস্থ্যকর্মী। তার সঙ্গে নিখোঁজ হন আরও দুই স্কুল পড়–য়া ছাত্রী মেসিং মারমা ও চিংমেনু মারমাসহ মোট ৫ জন। তাদের এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানায় স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে জেসিকার বাবা অমর বড়–য়া বলেন, ‘আমরা সবাই যখন মুন্নির নিখোঁজের খবর পেয়ে ছোটাছুটি শুরু করি, তখনই আমার মেয়ে বুঝতে পেরেছে যে তার মায়ের কিছু হয়েছে। সারারাত সে ঘুমাতে পারেনি। একটু পর পর মায়ের খোঁজ করেছে।’

জেসিকার নানি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত মুন্নিকে খুঁজে পাইনি। আর খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা জানি না। জেসিকা তার মায়ের লাশটি শেষবারের মতো দেখতে পারবে কিনা তাও জানি না।’

বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘বৈরি আবহাওয়ার কারণে যেখানে পাহাড় ধস হয়েছে সেখানে আরও পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের সতর্ক অবস্থায় কাজ করতে হচ্ছে। এতে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। তবে আশা করছি আবহাওয়া ভালো হলে অতি দ্রুত নিখোঁজ ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হবে। কাল আবারও উদ্ধার অভিযান চলবে।’

মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে ৮ বছরের জেসিকা রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, ‘যেহেতু পাহাড় ধসে মেয়েটি নিহত হয়েছে, তাই নিহতের পরিবার এবং স্থানীয়দের অনুরোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী উদ্ধারের পরপরই লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

বান্দরবান সিভিল সার্জন ডা. অংশৈপ্রু চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল পাহাড় ধসে আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা তিনজনই এখন ভালো আছে। তবে যে লাশটি উদ্ধার হয়েছে তা এখানে আনা হয়নি।

শনিবার (২২ জুলাই) রাত থেকে তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়। টানা বৃষ্টিতে রবিবার (২৩ জুলাই ) বান্দরবান রুমা সড়কের দনিয়াল পাড়ার কাছে সড়কের ওপর পাহাড় ধসে পড়ে। এসময় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তখন বাসের যাত্রীরা সড়কটি পায়ে হেটে পার হওয়ার সময় আবারও তাদের ওপর পাহাড় ধসে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে চিংমেনু মারমা (১৮) নামের এক ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু বাকি চারজনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজরা হলেন- মুন্নি বড়–য়া (৩০), মেসিং মারমা (১৫), রুমা উপজেলা কৃষি ব্যাংকের সেকেন্ড অফিসার গৌতম নন্দী (৪৮) ও উপজেলা পোস্ট মাস্টার রবিউল (৫০)।

উল্লেখ্য, গত জুন মাসের ১২ তারিখে এ সড়কটি পাহাড় ধসে ভেঙে যায়। এ ঘটনায় রুমার সঙ্গে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ প্রায় এক মাস বন্ধ ছিল। এ মাসের ১৩ তারিখে রাস্তাটি খুলে দেওয়া যায়। সেনাবাহিনী সড়কটি সংস্কার করে খুলে দেওয়ার ১২ দিনের মাথায় আবারও ভারি বৃষ্টিতে অচল হয়ে পড়ে সড়কটি। এতে আবারও বান্দরবান-রুমা সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

/এএইচ/এআর/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!