X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

হবিগঞ্জে ৪ শিশু হত্যা: রায়ে সন্তুষ্ট নয় পরিবার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
২৬ জুলাই ২০১৭, ১৫:০০আপডেট : ২৬ জুলাই ২০১৭, ১৫:০৪

হবিগঞ্জে চার শিশু হত্যা হবিগঞ্জের বাহুবলে চার শিশু হত্যা মামলায় প্রধান আসামি আব্দুল আলী বাগালসহ পাঁচ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের স্বজন ও স্কুলের শিক্ষকরা। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলেও জানিয়েছেন।

বুধবার (২৬ জুলাই) হবিগঞ্জের চার শিশু হত্যা মামলার রায় সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দেওয়া হয়। রায়ে রুবেল মিয়া, আরজু মিয়া ও উস্তার মিয়াকে (পলাতক) ফাঁসি এবং জুয়েল মিয়া, সাহেদ মিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং প্রধান আসামি আব্দুল আলী ওরফে বাগাল, বিল্লাল মিয়া (পলাতক) ও বাবুল মিয়াকে (পলাতক) খালাস দেওয়া হয়।

রায়ের প্রতিক্রিয়ার মামলার বাদী আব্দাল মিয়া এবং নিহতদের স্বজন ও স্কুল শিক্ষকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শিগগিরই তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

মামলার বাদী নিহত শিশু মনিরের বাবা আব্দাল মিয়া বলেন, ‘এ রায়ে আমি সন্তোষ্ট হতে পারছি না। কারণ প্রধান আসামি আব্দুল আলী বাগালসহ পাঁচ আসামির শাস্তি হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘খালাসপ্রাপ্ত আব্দুল আলী বাগালসহ বাকি আসামিরা বাড়িতে এসেই আমাদের ওপর আক্রমণ শুরু করবে। এ জন্য আমি শঙ্কিত।’

নিহত শিশুদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাজেদুল ইসলাম জানান, রায়ে আমরা আশানুরূপ ফলাফল পাইনি। আশাকরি উচ্চ আদালতে আপিল করার পর সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।

নিহত শিশু ইসমাইলের মা মিনারা বেগম বলেন, ‘আমরা বিচার পাইনি। আমাদের শিশুদের যেভাবে মারা হয়েছে আমরা সেরকম সকল আসামির ফাঁসি চাই।’

নিহত চার শিশুর দাদী মহরম চানা বলেন, ‘আমার চার নাতি হত্যা করে আমার পরিবার শুন্য করেছে অথচ প্রধান আসামিরা খালাস পেয়েছে। আমরা রায়ে খুশি না। আমরা বড় আদালতে তাদের ফাঁসি চাইবো।’

নিহত শিশু মনিরের বড় ভাই ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘আমার ভাই হত্যার রায় ফাঁসি না হওয়ায় আমরা সন্তোষ্ট না। আমরা উচ্চ আদালতে ফাঁসির দাবিতে আপিল করবো।’

বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল হক জানান, রায়ের পর নিহতের বাড়িতে পুলিশ অবস্থান করছে। এ বিষয়ে যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার চাচাত ভাই আব্দুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার ছেলে মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাঈল হোসেন (১০) খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ১৭ ফেব্রুয়ারি গ্রামের পাশ্ববর্তী স্থানে চার শিশুর মাটিচাপা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দেশে বিদেশে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার পরপরই একই গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাগাল ও তার দুই ছেলেসহ ৭ জনকে আটক করে পুলিশ।

পরবর্তীতে একই বছরের ২৯ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এর মধ্যে পাঁচজন জেলহাজতে, তিনজন পলাতক এবং বাচ্চু নামে একজন র‌্যাবের ক্রসফায়ারে মারা যায়।

এরপর ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। পরে চলতি বছরের ১৫ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে মামলাটি সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। মামলায় ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বুধবার সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান এ রায় দেন।

/বিএল/

আরও পড়ুন:
হবিগঞ্জে ৪ শিশু হত্যা: তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা