X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ষায় নড়াইলে জমে উঠেছে ডুঙ্গা বেচাকেনার হাট

সুলতান মাহমুদ, নড়াইল
২৭ জুলাই ২০১৭, ১৮:২৫আপডেট : ২৮ জুলাই ২০১৭, ০৮:৫২

ডুঙ্গা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা (ছবি-নড়াইল প্রতিনিধি)

ভরা বর্ষা মৌসুমে নড়াইলে জমে উঠেছে ডুঙ্গা বেচাকেনা। ডুঙ্গা বেচাকেনার পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের খালে-বিলেও এখন ডুঙ্গার ব্যবহারও চোখে পড়ছে। বর্ষাকালে জেলার তিন উপজেলার বিভিন্ন খাল ও বিলে মানুষের চলাচলের নিয়মিত বাহন হলো তাল গাছ দিয়ে তৈরি ডুঙ্গা। কোনও কোনও এলাকায় এটি কোষা নৌকা নামেও পরিচিত। বর্ষাকাল এলেই গ্রামের মানুষের কাছে ডুঙ্গার কদর বেড়ে যায়। বর্ষায় অনেক খেটে খাওয়া মানুষ ডুঙ্গায় করে খাল-বিল থেকে মাছ ধরে,শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।

নড়াইল সদর উপজেলার নড়াইল-যশোর সড়কের পাশে অবস্থিত তুলারামপুর বড় ডুঙ্গা বেচাকেনার জন্য প্রসিদ্ধ। এখানে শুক্রবার আর সোমবার হাট বসে। ডুঙ্গা কেনাবেচার জন্য জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন এখানে ছুটে আসেন। বর্ষার শুরু থেকে অর্থাৎ জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই চারমাস হাটে ডুঙ্গা কেনা-বেচা চলে। ক্রেতাদের চাহিদা বুঝে একটি ডুঙ্গা ১৫০০টাকা থেকে ৩৫০০টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। প্রতি হাটে ৪০/৫০টি ডুঙ্গা বেচাকেনা হয় বলে জানালেন তুলারামপুরের বাসিন্দা মকতুল হোসেন। আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তুলারামপুর হাটে ডুঙ্গা কিনতে আসেন কৃষকসহ গৃহস্ত বাড়ির কর্তারা।

যশোরের অভয়নগর থেকে তুলারামপুর হাটে ডুঙ্গা কিনতে আসা রকিব মোল্যা জানান, তিনি সাড়ে ৩ হাজার টাকা দিয়ে বড় সাইজের একটি ডুঙ্গা কিনেছেন। নৌকা দিয়ে সারা বছর বিল-খালে কিংবা কম পানিতে চলাচল করা যায় না। কম পানিতে ডুঙ্গা দিয়ে সব ধরনের কাজ করা যায়।  যেমন বিলে মাছ ধরা, শাপলা তোলা, জমি  নিংড়ানোসহ সব ধরনের কাজ করা যায়।

লোহাগড়া উপজেলার আমাদা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, বর্ষার কারণে বিলের পানি বাড়লে ডুঙ্গার চাহিদা বেড়ে যায়। গত এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে ডুঙ্গার চাহিদা বেড়ে গেছে। নৌকার দাম বেশি হওয়ায় গরীব কৃষকদের কাছে ডুঙ্গার চাহিদা বেশি বলে তিনি জানান।

ডুঙ্গা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নড়াইল সদর উপজেলার চরশালিখা গ্রামের সেলিম (নিজেও তৈরী করেন) জানান, একটি তালগাছ ১৫’শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দামে কেনা হয়। ৩ জন শ্রমিক একদিন কাজ করে দু’টি  ডুঙ্গা  তৈরি করতে পারেন। একটি তাল গাছ দিয়ে তৈরি দু’টি ডুঙ্গা বিক্রি করে খরচ বাদে দুই থেকে তিন হাজার টাকা লাভ হয় বলে তিনি জানান। তুলারামপুর ছাড়াও কালিয়ার চাচুড়ী ও রামসিদিতে ডুঙ্গা তৈরি ও বিক্রি করা হয়। ডুঙ্গা তৈরি করে এ জেলার প্রায় ৫০ জন স্বাবলম্বী হয়েছেন বলে তিনি জানান।

নড়াইলের আমাদা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আল ফয়সাল খান বলেন, ‘সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তির এই বাহন লোক-সংস্কৃতির একটি অংশ। গ্রাম-গঞ্জের ও বিলাঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র বাহন ডুঙ্গাকে চালু রাখার জন্য ডুঙ্গা কারিগরদের পৃষ্ঠপোষকতা করা প্রয়োজন বলে তিনি জানান।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: পুলিশের চুরি হওয়া পিস্তল ৫ মাস পর উদ্ধার

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
তীব্র গরমে পানি চাইতে চাইতেই ট্রাফিক পুলিশের মৃত্যু
তীব্র গরমে পানি চাইতে চাইতেই ট্রাফিক পুলিশের মৃত্যু
বাংলাদেশের উন্নয়ন-সহযোগী হিসেবে দ্রুত জায়গা করে নিচ্ছে ফ্রান্স
বাংলাদেশের উন্নয়ন-সহযোগী হিসেবে দ্রুত জায়গা করে নিচ্ছে ফ্রান্স
পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানা সরাতে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ
পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানা সরাতে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ
ওরসে ঝগড়া, সেই শত্রুতায় ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা
ওরসে ঝগড়া, সেই শত্রুতায় ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা