X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আবুয়া নদীতে সেতুর নির্মাণ কাজ ৯ বছর ধরে বন্ধ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
০৮ আগস্ট ২০১৭, ১২:৫৬আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০১৭, ১২:৫৬

আবুয়া নদীতে নির্মাণাধীন সেতুর এক প্রান্তের পিলার সুনামগঞ্জের আবুয়া নদীতে একটি সেতুর নির্মাণ গত ৯ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফতেহপুর ইউনিয়নের লখা গ্রামের বাসিন্দা মালিক হোসেন। তিনি বলেন, ‘গত ৯ বছর ধরে নদীর দুই পাড়ে দুইটা বড় পিলার দেখছি, কিন্তু কেউ আর সেতুর কাজ শেষ করে না। প্রতিবছর আশায় থাকি, আর নৌকায় পার হওয়ার সময় ভাবি এ দুর্ভোগ কবে শেষ হবে? কে শেষ করবে এ সেতুর কাজ?’

ফতেহপুর মুরারি চাঁদ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী লাকি আক্তার জানান, নদী পার হয়ে জেলা সদরে যেতে হলে এক ঘণ্টা সময় বেশি লাগে। সেতুর কাজ শেষ হলে শহরে যেতে ৩০ মিনিট সময় লাগবে। জরুরিভাবে অসমাপ্ত সেতুর কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) অফিস সূত্রে জানা যায়, আবুয়া নদীর ওপর ২০০৮ সালে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩৫ দশমিক ৯২৬ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্তের সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শুরুতে সেতুর দুই পাশের শেষ প্রান্তে অবকাঠামো তৈরি করা হলেও তা অসমাপ্ত রেখে কাজ বন্ধ করে দেন ঠিকাদার। ঠিকাদারের অভিযোগ,  নদীর মধ্যভাগে গভীরতা বেশি হওয়ায় সেতু নির্মাণে জটিলতা দেখা দেয়।

আবুয়া নদীতে সেতুর নির্মাণ কাজ ৯ বছর ধরে বন্ধ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুনামগঞ্জ সওজের একজন কর্মকর্তা জানান, শুরুতে সঠিকভাবে মাটি পরীক্ষা না হওয়ায় সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা যায়নি। পরে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল মাটি পরীক্ষা করে বিভিন্ন  ত্রুটি সমাধানের নির্দেশনা দেন। 

জানা গেছে, এ সড়ক দিয়ে জেলার বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর,ধর্মপাশা উপজেলা ও মধ্যনগর থানার কয়েক লাখ মানুষ যাতায়াত করেন। সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও ভাড়ায় চালিত শতশত মোটরসাইকেল পাড় হয়। বর্ষাকালে নদীতে পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় নদীতে প্রবল স্রোতের জন্য খেয়া নৌকা দিয়ে নদী পারাপার আরও বিপদজনক হয়ে ওঠে। ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক দিয়ে তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার লোকজন ৪০ মিনিটে জেলা সদরে যাতায়াত করতে পারেন।

তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা মতিন মিয়া বলেন, ‘সেতুর কাজ দ্রুত শেষ করা গেলে জেলা সদরের সঙ্গে তিনটি উপজেলার মানুষ সুফল ভোগ করবেন।’

আবুয়া নদীতে সেতুর নির্মাণ কাজ ৯ বছর ধরে বন্ধ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘এলাকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী ও শ্রমজীবী। সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে বেকারদের কর্মসংস্থান ও  কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী কম সময়ে স্বাল্প মূল্যে বাজার এনে বিক্রি করতে পারবেন।’

ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রনজিত চৌধুরী রাজন বলেন, ‘দীর্ঘ ৯ বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ  আবুয়ানদীর ওপর সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে জেলার তিনটি উপজেলা ও একটি থানার কয়েক লাখ মানুষ জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের সুফল পাবেন। তাই আমি দ্রুত সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।’

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাজমুল ওয়াহেদ চৌধুরী বলেন, ‘সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করে অনুমোদনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ আবারও শুরু করা হবে।’

সেতুর নির্মাণ কাজ দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারিগরি সমস্যার জন্য সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। সম্প্রতি বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল কারিগরি ত্রুটি নিরসন করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ডিপিপি অনুমোদিত হলে  কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’

/এসএনএইচ/ 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
টিভিতে আজকের খেলা (২৭ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৭ এপ্রিল, ২০২৪)
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা