বরিশাল বিভাগের ৫ জেলার ৩৮ রুটে অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে বরিশাল বিভাগীয় বাস মালিক ও শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের ডাকে এই ধর্মঘট শুরু হয়।
বাস মালিক-শ্রমিকদের ওপর হামলার বিচার এবং আন্তঃজেলা পর্যায়ে সড়ক-মহ্সড়কে তিন-চাকার (থ্রি-হুইলার) গাড়ি চলাচল বন্ধের দাবিতে এ ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে। বরগুনার ৮টি রুট, ঝালকাঠির ৮টি রুট, পিরোজপুরের ৩টি, পটুয়াখালীর ৬টি এবং বরিশালের ১৩টি রুটে ধর্মঘট চলছে। দাবি না মানা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল-পটুয়াখালী বাস/মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন। তিনি জানান, বাস/মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম খোকনসহ নেতাদের ওপর হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কার্যকর কোনও পদক্ষেপ রাখেনি। থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে সে মামলা নেওয়া হয়নি। এছাড়া বরিশালের মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। যা বন্ধে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এই দুই দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
বরিশাল-পটুয়াখালী বাস/মিনিবাস মালিক সমিতির লাইন সম্পাদক সেলিম সিকদার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বরিশালের ৩৮ রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।’
এদিকে বাস ধর্মঘটের কারণে বেশ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন বরিশাল থেকে বিভিন্ন রুটের উদ্দেশ্যে আসা যাত্রীরা। পটুয়াখালী যাওয়ার উদ্দেশে বরিশালের রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডে আসা মোহাম্মদ আলি বলেন, ‘বাস মালিক ও মাহিন্দ্র মালিকদের দ্বন্দ্বের কারণে আমরা সাধারণ যাত্রীরা প্রায়ই ভোগান্তিতে পড়ি। এর স্থায়ী সমাধান দরকার।’ উম্মে সালমা নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘বাস ধর্মঘটের কারণে বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে এখন স্ট্যান্ডে বসে আছি। অহরহ ধর্মঘট ডাকা বন্ধে আমরা স্থায়ী সমাধান চাই।’
পটুয়াখালীতে ঢাকা থেকে আসা মো. কালাম জানান, ‘আমরা পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় যাওয়ার জন্য এসেছি। লঞ্চঘাট থেকে বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি ধর্মঘটের কারণে বাস চলাচল করছে না। জানি না বাস মালিক সমিতি কেন এই ধর্মঘট ডেকেছে। এখন কুয়াকাটা কিভাবে যাবো বুঝে উঠতে পারছি না।’
মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) সকালে পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে খয়রাবাদ এলাকার কর্নকাঠী জিরো পয়েন্ট এলাকায় থ্রি-হুইলার চলাচল বিরোধের জের ধরে সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম খোকনসহ মালিকদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে থ্রি হুইলার চালকরা। এতে ৫ জন আহত হয়ে শেবাচিমে ভর্তি রয়েছে। পরে থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা গ্রহণ করেনি। এ ঘটনার পর ধর্মঘটের ডাক দেয় বাস মালিক শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ।
তবে ধর্মঘটে যাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনে বাসমালিক ও শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বরিশাল সার্কিট হাউজে এক সভা ডেকেছেন বিভাগীয় কমিশনার। এই সভায় বাসমালিক সমিতি, শ্রমিক নেতা ও থ্রিহুইলার যানের নেতাদের উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে।
/এফএস/
আরও পড়ুন- গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ৪