টানা পাঁচ দিনের অবিরাম বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ভেঙে গেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের খড়খড়িয়া নদীর কাঙ্গালপাড়া ব্রীজ সংলগ্ন ৪০ ফিট দৈর্ঘ্যের শহর রক্ষা বাঁধ। রবিবার (১৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে শহর রক্ষা বাঁধটি ভেঙে যায়। এতে বাঁধ তীরবর্তী এলাকার বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি ডুবে গেছে হাজার হাজার একর আমন ধানের ক্ষেত।
এদিকে, সৈয়দপুর পৌর এলাকার ১১নং ওয়ার্ডের কুন্দল কোল্ডস্টোর থেকে ১০নং ওয়ার্ডের পাটোয়াড়ী পাড়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধটির একফুট নিচ দিয়ে বন্যার পানির স্রোত বইছে। পানির গতি বাড়লে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট ও বিমানবন্দর এলাকা তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সৈয়দপুর উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুর উপজেলার পাচঁ ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চারা লাগিয়েছিলেন কৃষকরা। বুধবার (৯ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে এসব জমির চারা তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি ডুবে গেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শাক-সবজির ক্ষেতও।
স্থানীয়রা জানান, উজানের ঢলে উপজেলা দিয়ে বয়ে চলা খড়খড়িয়া নদী আগেই ভরে গিয়েছিল। এরপর গত চার দিনের টানা বৃষ্টিতে পানি বাড়ায় নদী এলাকার গ্রামগুলো তলিয়ে গেছে। এছাড়া নষ্ট হয়ে গেছে ফসলের ক্ষেতও।
সরেজমিনে জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে দুই থেকে আড়াই ফুট পানির নিচে ডুবে গেছে শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক, শহীদ ডা. শামসুল ও শহীদ ডা. বদিউজ্জামানসহ সবগুলো সড়ক। এর মধ্যে পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ডের সড়কে কোমর পানি এবং অন্যান্য ওয়ার্ডগুলোর সড়কে এক থেকে দেড় ফুট পানি জমেছে। বোতলাগাড়ি, খাতামধুপর, কাশিরাম বেল পুকুর, কামারপুকুরসহ পৌরসভা ১৫টি ওয়ার্ডের প্রায় দুই শতাধিক একরের পুকুর প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার টাকার মাছ ভেসে গেছে। এতে মাছচাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। কাজ কর্ম না থাকায় পৌর ও ইউনিয়নের নিম্ন আয়ের মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছেন।
সৈয়দপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হুমায়রা মন্ডল জানান, টানা বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চল ছাড়াও উঁচু জমির ক্ষেত ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হবে। তবে জলাবদ্ধতা না থাকলে আমন ও অন্যান্য ফসলের তেমন কোনও ক্ষতি হবে না।
এদিকে, সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার জানান, গত চার দিনের বৃষ্টিতে শহরের অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। তার ওপর শহর রক্ষা বাধ ভেঙে যাওয়ায় সেনানিবাস এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পানি ঢুকে পড়েছে। যে কোনও সময় বিমানবন্দরও ডুবে যেতে পারে।
/এমএ/