X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘ফাটল নয়, ইঁদুরের গর্ত’

বগুড়া প্রতিনিধি
১৬ আগস্ট ২০১৭, ২০:৪০আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০১৭, ২০:৪০

ধুনটে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০ স্থানে ফাটল (ছবি: প্রতিনিধি) বগুড়ার ধুনটে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০ স্থানে ফাটল দেখা গেছে। চুনিয়াপাড়া পয়েন্টের ফাটল বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ফাটল নয়, ইঁদুরের গর্তের কারণে পানি চুইয়ে বের হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধুনটের চুনিয়াপাড়ায় মানাস নদীর মুখে যমুনার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের নিচে ফাটল ধরেছে ও সেখান দিয়ে পানি ঝরছে। চুনিয়াপাড়ার আরেকটি স্থানে ইঁদুরের গর্ত দিয়ে পানি ঝরতে শুরু করছে। এছাড়া শিমুলবাড়ীর দুটি পয়েন্ট, বানিয়াজানের দুটি পয়েন্ট, রঘুনাথপুরের একটি পয়েন্ট এবং পুকুরিয়া ভুতবাড়ীর তিনটি পয়েন্ট দিয়ে পানি ঝরছে। সেখানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন বালির বস্তা দিয়ে পানি বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

চুনিয়াপাড়ার বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘বাঁধে ফাটল ধরায় রাতে ঘুমাতে পারি না। কখন বাঁধ ভেঙে যাবে সে চিন্তায় জেগে থাকি। বালির বস্তা দিয়ে বাঁধের পশ্চিম পাড়ে পানি বন্ধ করার চেষ্টা করছে। তাও আবার ধীরগতিতে। যেখান দিয়ে পানি ঝরছে ও ফাটল ধরেছে সেখানে মানাস নদী ছিল। মানাস নদীর মুখ বন্ধ করে তার ওপর দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ করা হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম দুই দিকেই গভীর। শুধু পশ্চিমপাড়ে বালির বস্তা দিয়ে লাভ হবে না। শুষ্ক মৌসুমে যদি এখানে কাজ করতো তাহলে এই অবস্থা হতো না। গত বছরও এখানে ফাটল ধরেছিল।’

চুনিয়াপাড়ার আরেকটি পয়েন্টে ইঁদুরের গর্ত দিয়ে পানি ঝরতে শুরু করেছে। আস্তে আস্তে গর্তের মুখ বড় হয়ে পানি ঝরছে। স্থানীয় লোকরা সেখানে মাটি দিয়ে পানি বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। আব্দুস সামাদ নামে একজন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকদের খবর দিলেও তারা আসতে দেরি করেছে। শুধু দশ-বারোটা বালির বস্তা দিয়ে পানি বন্ধ করার চেষ্টা করেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ইঁদুরের গর্ত দিয়ে পানি ঝরা বিপজ্জনক। ২০০৪ সালে পাশেই শিমুলবাড়ীতে ইঁদুরের গর্ত দিয়ে পানি ঝরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। গভীর রাতে ভেঙে যাওয়ার পর কয়েকশ ঘরবাড়ি মুহূর্তের মধ্যে ভেসে যায়। কেউ ঘরবাড়ি থেকে কিছুই বের করতে পারেননি। তাই এই ইঁদুরের গর্ত ভালোভাবে বন্ধ না করলে শিমুলবাড়ীর মতো ট্র্যাজেডি ঘটে যেতে পারে।’

পুকুরিয়া ভুতবাড়ির বাসিন্দা রফিকুল মিয়া জানান, এখানে বালির বস্তা ফেলে পানি বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। তবে ঠিকমত কাজ না করলে বাঁধ টেকানো সম্ভব হবে না।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল চন্দ্র শীল বাঁধে ফাটল নেই উল্লেখ করে বলেন, ‘সোনাতলা থেকে ধুনট পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে অন্তত ১০০টি স্থানে ইদুরের গর্ত দেখা দিয়েছে। যেখান দিয়ে পানি চুয়ে পড়ছে।’

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হারুনুর রশিদকে ভুতবাড়ি এলাকায় পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ধুনটের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০টি পয়েন্টে পানি ঝরছে। সেখানে বালির বস্তা দিয়ে পানি বন্ধ করা হচ্ছে। নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন বলেন, ‘বাঁধের যেসব স্থান দিয়ে পানি ঝরছে সেখানে আমাদের লোকজন কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করছি সবস্থানে পানি ঝড়া বন্ধ হবে।’

গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মঈনুল হাসান মুকুল বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ চুনিয়াপাড়ার ফাটলের স্থান পরিদর্শন করেছি। সেখানকার অবস্থা ভালো নয়। দ্রুত কাজ না করলে বড় ধরনের কিছু ঘটে যেতে পারে।’

/এফএস/ 

আরও পড়ুন- বন্যায় প্লাবিত ৩২ লাখ মানুষ, ডুবে গেছে পৌনে দুই লাখ হেক্টর জমির ফসল

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
দেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
সিনেমা সমালোচনাদেয়ালের দেশ: মন খারাপ করা সিনেমা
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
দুবাই হয়ে ট্রানজিট ফ্লাইট স্থগিত করলো এমিরেটস
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ