X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

মামলা-জরিমানায়ও থামছে না পাহাড় কাটা

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
১৯ আগস্ট ২০১৭, ০৯:১৩আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০১৭, ০৯:১৭

পাহাড় কাটা (ফাইল ছবি) পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে পাহাড় কাটার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কক্সবাজার জেলায় অনেকেই তা মানছেন না। পরিবেশ অধিদফতরের কঠোর নজরদারিতেও থামানো যাচ্ছে না ওই এলাকায় পাহাড় কাটা। উল্টো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অগোচরে বেড়েই চলেছে একের পর এক পাহাড় কাটার ঘটনা।

পরিবেশ অধিদফতরের (চট্টগ্রাম অঞ্চল) পরিচালক মাসুদ করিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও কিছু অসাধু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কক্সবাজারে পাহাড় কেটেই চলছেন। জরিমানা কিংবা মামলা দায়ের করেও তাদের থামানো যাচ্ছে না। গত ১৪ বছরে কক্সবাজার অঞ্চলে পাহাড় কাটার দায়ে আমরা ১২৯টি মামলা দায়ের করেছি। মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

পরিবেশ অধিদফতর সূত্র জানায়, পাহাড় কাটার দায়ে দায়ের করা ১২৯টি মামলায় মোট ৫৬১জন ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। সর্বশেষ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। গত ২২ জুন পরিবেশ অধিদফতরের দায়ের করা এই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম দাশ, রেজিস্ট্রার মির্জা ফারুক ইমাম ও ফিশারিজ অনুষদের অধ্যাপক ড. নুরুল আবছার খানকে আসামি করা হয়েছে। পাহাড় কাটা (ফাইল ছবি)

পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অধিকাংশ মামলা পাহাড় কেটে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ধ্বংসের কারণে দায়ের করা হয়েছে। মামলাগুলো সংশ্লিষ্ট থানা, পরিবেশ আদালত ও বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘১২৯টি মামলার মধ্যে ৩৯টি মামলার চার্জশিট, চারটি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রদান করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৮৬টি মামলা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।’

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-২০১০ অনুযায়ী, পাহাড় কাটা আমলযোগ্য অপরাধ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমতি ছাড়া কোনও সরকারি, আধা-সরকারি, সায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তি পাহাড় কাটতে বা নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না। যদি কেউ এটি অমান্য করে, তবে তাকে অথবা ওই প্রতিষ্ঠানকে দুই বছর কারাদণ্ড অথবা ২ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়  দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। ফের একই অপরাধ করলে, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ১০ বছর কারাদণ্ড অথবা ১০ লাখ জরিমানা গুণতে হবে। পাহাড় কাটা (ফাইল ছবি)

অন্যদিকে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-১৯৯৬ তে বলা হয়েছে, পাহাড় কাটা অথবা মোচনের জন্য পরিবেশ ছাড়পত্র অবশ্যই নিতে হবে। ২০০২ সালের ৯ মার্চ পরিবেশ অধিদফতর এই সম্পর্কিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। যেখানে বলা হয়েছে পাহাড় কর্তন ও মোচনের ক্ষেত্রে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা -১৯৫২ এবং ১৯৯৬ অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।

আইনে পাহাড় কর্তন ও মোচনের জন্য কঠোর এই নির্দেশনা থাকলেও কক্সবাজার এলাকায় এটি মানা হচ্ছে না। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, পর্যটন শহরের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ায় ভিন্ন এলাকা থেকে আসা ভাসমান মানুষ কক্সবাজারে ঠাঁই নিচ্ছে। তারা পাহাড় কেটে ঘর-বাড়ি তৈরি করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারাও ওই এলাকায় পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত। প্রশাসনের অগোচরে তারা দুর্গম পাহাড়ে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে সেখানে বসবাস করছে।

অভিযোগ রয়েছে, অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল নির্মাণ করতে গিয়ে নির্বিচারে পাহাড় কাটছেন।

পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা বলেন, ‘বিনোদনের সুবিধা দেওয়ার উদ্দেশে সমুদ্র সৈকতের পাশে প্রায় তিন শতাধিক হোটেল/মোটেল/রিসোর্ট ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। এসব স্থাপনার অল্প কয়েকটির অনুকূলে অবস্থানগত ছাড়পত্র দেওয়া হলেও শর্তানুযায়ী এসটিপি (স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) নির্মাণ না করায় পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি।

/এনআই/এফএস/ 

আরও পড়ুন- বাঁধে আশ্রয় নেওয়া বানভাসিদের মাঝে আতঙ্ক

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু: ‘অপরাধ আড়ালের চেষ্টা হচ্ছে’
প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যু: ‘অপরাধ আড়ালের চেষ্টা হচ্ছে’
মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলো সেনাসহ ২৮৮ বিজিপি সদস্যকে
মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলো সেনাসহ ২৮৮ বিজিপি সদস্যকে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে বাইডেনের সই
ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে বাইডেনের সই
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা