X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাহাড়ি ঢলে প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন, হুমকির মুখে মৌলভীবাজারের মনু সেতু

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
২১ আগস্ট ২০১৭, ২১:০৯আপডেট : ২১ আগস্ট ২০১৭, ২১:০৯

হুমকির মুখে মনু সেতু দীর্ঘস্থায়ী বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি ঢলে মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন ধরেছে। এতে করে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ-কুলাউড়া উপজেলার চাতলাপুর চেকপোস্ট শুল্ক স্টেশন সড়কে মনু সেতুটি হুমকির মুখে পড়েছে।এদিকে, মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ পুরোপুরিভাবে মেরামত করা না হলে সেতুটি রক্ষা করা সম্ভব হবে না বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।








খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নকে দুই ভাগ করেছে মনু নদী। এ নদের দক্ষিণ-পূর্বাংশে রয়েছে ৯ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের বসবাস। তাছাড়া এ অংশে তিনটি হাট ছাড়াও চাতলাপুরস্থল শুল্ক স্টেশন, অভিবাসন কেন্দ্র (ইমিগ্রেশন পোস্ট), ১টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ ২টি বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ি রয়েছে।
গত মে মাস থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মনু সেতু এলাকার প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে যায়। এতে মনু সেতুটি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। পরে মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ জরুরি ভিত্তিতে সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে বস্তায় সিমেন্ট ও বালু ভরে ফেলে সেতুটি রক্ষার চেষ্টা করে। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ফেলা সিমেন্ট-বালুর বস্তা সরে যায়। এতে সেতুটি আবারও হুমকির মুখে পড়ে।
কুলাউড়া শরীফপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মনু নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভাঙন অব্যাহত থাকলে সেতু ও সড়কটি রক্ষা করা সম্ভব হবে না। কারণ আবার যদি বড় বন্যা দেখা দেয় তাহলে সেতুটি রক্ষা করা যাবে না।’ তিনি সেতুটি রক্ষার জন্য স্থায়ী উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান।
মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিন্টর রঞ্জন দেবনাথ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের যা যা করার তা করে যাচ্ছি, এর বাইরে কিছু করার নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সেতু এলাকায় গাছের পাইলিং করে বালু-সিমেন্ট মিশ্রিত বস্তা ফেলে সেতু রক্ষা করা হয়েছে।’
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়নের বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ইন্দু বিজয় শংকর চক্রবর্তী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বর্তমানে প্রতিরক্ষা বাঁধে ঠেক দেওয়া হয়েছে। আশা করি আর সমস্যা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিরক্ষা বাঁধের উন্নয়নসহ বাঁধের ৩৯টি পয়েন্টে বল্ক স্থাপনের একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে পরিকল্পনা অনুমোদন হলে শুষ্ক মৌসুমে কাজ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ শরীফপুর ইউনিয়নের চাতলাপুর বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ি সংলগ্ন এলাকায় মনু নদীর ওপর ১ দশমিক ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি পাকা আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করেছিল। সেতু নির্মাণের প্রাথমিক ব্যয় নির্ধারণ হয়েছিল ৪ কোটি টাকা। পরবর্তীতে আরও ২ কোটি টাকা বাড়িয়ে মোট ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে শরীফপুর সীমান্ত এলাকায় মনুনদীর সেতু নির্মিত হয়েছিল। ২০০৫ সালে তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে এ সেতুটি উদ্বোধন করেন। সেতুর কারণে চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতের উত্তর ত্রিপুরার সঙ্গে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মনু নদীর ওপর একটি সেতু থাকায় এখন প্রতিদিনি গড়ে ১০ ট্রাক বাংলাদেশি বিভিন্ন কোম্পানির সিমেন্ট, প্রাণ-আরএফএল সামগ্রী, মাছ, খৈল, প্লাস্টিক ডোরসহ নানা পণ্য রফতানি হচ্ছে উত্তর ত্রিপুরায়। পাশাপাশি উত্তর ত্রিপুরা থেকেও কমলা, সাতকরা, কলাসহ নানান সামগ্রী আসছে বাংলাদেশে।

/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মার্কেসের 'আনটিল আগস্ট'
মার্কেসের 'আনটিল আগস্ট'
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে
ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে
রেলক্রসিংয়ে রিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, বাবার মৃত্যু মেয়ে হাসপাতালে
রেলক্রসিংয়ে রিকশায় ট্রেনের ধাক্কা, বাবার মৃত্যু মেয়ে হাসপাতালে
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পুরস্কার পেলেন কুবির চার শিক্ষার্থী
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পুরস্কার পেলেন কুবির চার শিক্ষার্থী
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন