X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের মানুষ এখন শান্তিতে আছে: প্রধানমন্ত্রী

রাজশাহী প্রতিনিধি
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:৪৬আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:৪৬

রাজশাহীর পবায় জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়, মানুষ শান্তিতে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন,‘আমরা দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছু দিয়েছি। দেশের মানুষ এখন শান্তিতে আছে।’ আগামীতে যেকোনও নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে নির্বাচনই আসুক, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নৌকার প্রার্থীকে জয়যুক্ত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। তাহলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।’ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজশাহীর পবায় হরিয়ান চিনিকল মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আওয়ামী লীগ আপনাদের সংগঠন। এই আওয়ামী লীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন সংগ্রম করে আপনাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আপনারা দেখেছেন, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, যখন নৌকা মার্কা ক্ষমতায় আসে, তখনই দেশের উন্নতি হয়। কিন্তু ওই বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে কী হয়? সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বাংলা ভাই..মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে যায়। এমনকি জনগণের টাকা, এতিমখানার টাকাও তারা চুরি করে খায়। বিদেশে বিত্তবৈভব বানায়। এটাই তাদের চরিত্র– দেশের জনগণের সম্পদ লুট করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করে।’

পবায় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগকে জনগণের সম্পদ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ যখন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে তখন বাংলাদেশে দারিদ্র্য থাকবে না। পাঁচ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে এসেছে। আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বে বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। আপনাদের কাছে দোয়া চাই।’

তিনি আরও বলেন,‘যে নির্বাচনই আসুক, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নৌকার প্রার্থীকে জয়যুক্ত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন। তাহলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। ওই লুটেরা, সন্ত্রাস,জঙ্গিবাদ যারা সৃষ্টি করেছে তারা ক্ষমতায় আসলে দেশ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের দেশ হবে।’  

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়। আর বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে সন্ত্রাস, লুটপাট, জঙ্গিবাদ, বিদেশে অর্থ পাচারসহ দুর্নীতিতে দেশ ভরে যায়। তাই বিএনপি-জামায়াত জোটকে এদেশের মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।’ তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি-জামায়াত জোট রাজশাহীতে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়ে একের পর এক মানুষ হত্যা করেছে। লুটপাট করেছে, ধর্ষণ করেছে। তারা কী দিয়েছে? কিন্তু আমরা দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছু দিয়েছি। দেশের মানুষ এখন শান্তিতে আছে।’

উপচে পড়া ভিড় ছিল জনসভায় জনসভায় অভিভাবক, ইমাম, ছাত্র-শিক্ষকসহ উপস্থিত সবার প্রতি আহ্বান রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই  বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের স্থান হবে না। আপনাদের ছেলেমেয়েরা কার সঙ্গে মিশে, কোথায় যায়, কিভাবে চলে, মাদকাসক্ত বা জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হলো কিনা, তারা বিপথে চলে গেল কিনা অভিভাবক ও শিক্ষকদের অবশ্যই তা দেখতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম সৌহার্দ্যের ধর্ম। ইসলামে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের জায়গা নেই।’

প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিএনপি সরকারের আমলে একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যবসার কারণে একটি মোবাইল ফোনের দাম ছিল এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। তখন মোবাইল ফোনে কথা বলতে প্রতি মিনিটে খরচ হতো ১০ টাকা। আওয়ামী লীগ সরকার মোবাইল ফোনের দাম হাজার-১২শ টাকায় নামিয়ে এনেছে। এখন মানুষ সস্তায় কথা বলতে পারছে। শেখ হাসিনা বলেন, তার লক্ষ্য– দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। জাতির পিতার ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্নপূরণে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তাই উত্তরবঙ্গে এখন আর কোনও মঙ্গা নেই। তিনি বলেন,‘আমার কাছে দাবি করার প্রয়োজন নেই। আমি জাতির জনকের কন্যা। আমি জানি কিভাবে উন্নয়ন করতে হয়। আগামীতেও রাজশাহীসহ দেশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নের জন্য যা যা করণীয় আমরা তা করব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছে তার সরকার। রাজশাহীতেও এই বিশেষ অর্থনৈতিক জোন হবে। ইতোমধ্যে সরকার এখানে আইটি পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। সেখানে কম্পিউটার, ল্যাপটসহ নানা ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন হবে। এ অঞ্চলের কৃষি নিয়ে আরও বেশি গবেষণা করতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরও সক্ষমতা বাড়ানো হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে তার সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ২০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করছে। বিনা পয়সায় দেওয়া হচ্ছে বই। দেশের এক কোটি ৭৩ লাখ শিক্ষার্থী এখন সরকারের বৃত্তি পাচ্ছে। এক কোটি ৩০ লাখ মায়ের মোবাইল ফোনে যাচ্ছে বৃত্তির টাকা।

এর আগে বিকাল ৩টায় হরিয়ান চিনিকল মাঠে জনসভায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানেই তিনি ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এরপর ৩০ মিনিটের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের আমলে রাজশাহীর উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও নগর সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী।

পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলীর সভাপতিত্বে জনসভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিএম মোজাম্মেল হক, রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন আসনের এমপি এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলার শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে এক নজর দেখতে সকাল থেকেই হরিয়ান মাঠে ঢল নামে মানুষের। সকালে আবহাওয়া ভালো থাকলেও ১০টার পর থেকে কয়েক দফা ভারি বৃষ্টি হয়। তবে এ বৃষ্টি উপেক্ষা করে মানুষ দলে দলে গিয়ে জনসভায় যোগ দেন।

 

 

/এএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘আমার স্ত্রী শুধু অন্যের পরামর্শ শোনে’
‘আমার স্ত্রী শুধু অন্যের পরামর্শ শোনে’
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগ ছাড়া কোথাও বৃষ্টির আভাস নেই
লিভারপুলের নতুন কোচ স্লট!
লিভারপুলের নতুন কোচ স্লট!
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে: ওবায়দুল কাদের
ক্ষমতায় যেতে বিএনপি বিদেশি প্রভুদের দাসত্ব করছে: ওবায়দুল কাদের
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!