সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও নব নির্মিত ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল চত্বরে বৃষ্টির পানি জমে গত ক’দিন থেকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি মাড়িয়ে আগত রোগী ও তাদের স্বজনরা হাসপাতালে যাতায়াত করতে গিয়ে নানা দুর্ভোগে পড়ছেন। গত এক সপ্তাহ থেকে এ সমস্যা চললেও জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনও উদ্যোগ নেই। জলাবদ্ধতার পাশাপাশি হাসপাতালে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে রোগীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
রোগীদের অভিযোগ হাসপাতালের নিচ তলায় আউটডোরে রোগীদের অপেক্ষার স্থানে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার প্রাইভেটকারটি রেখে গ্যারেজ বানানো হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের দ্বিতল পুরাতন ভবনের গাইনী ওয়ার্ডের পাশে ছাদ থেকে বৃষ্টির পানি চুয়ে চুয়ে পড়ছে।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ মো. মনজুর রহমান গত মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে এসব অবগত হলেও জলাবদ্ধতার এখনও সমাধান মেলেনি। তাঁত সমৃদ্ধ বেলকুচি উপজেলার এ হাসপাতালটির অধিকাংশ চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগও রয়েছে। সরকারি কর্মঘণ্টায় ডিউটি ফাঁকি দিয়ে সন্মানীর লোভে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও দাতা সংস্থ্য ইউনিসেফ’র স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা ধরনের সচেতনতামূলক কর্মশালার আয়োজন করারও অভিযোগ রয়েছে এখানকার চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে।
গত মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আউটডোরে প্রায় অর্ধশত রোগী অপেক্ষমাণ রয়েছেন। তাদের অপেক্ষায় রেখে চিকিৎসক ও নার্স-স্টাফরা দিনব্যাপী জনসচেনতামূলক কর্মশালায় বসেছেন। ‘ইমারজেন্সী প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স’ বিষয়ে আয়োজিত কর্মশালায় সিভিল সার্জন নিজেও উপস্থিত ছিলেন। আউটডোরে অর্ধশত রোগী অপেক্ষমাণ রেখে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে তিন তলায় সন্মেলন কক্ষে চিকিৎসক ও স্টাফরা কর্মশালায় বসেন।
রোগীদের অপেক্ষায় রেখে কর্মশালার বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এটি একটি সরকারি কর্মশালা। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঊর্ধ্বতনদের পত্র দিয়ে সরকারি নিয়ম অনুযায়ীই এ ধরনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকে করার কথা থাকলেও দেরি করে দুপুর ১২ টার দিকে শুরু করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বরাদ্দ না থাকায় জলবদ্ধতার বিষয়টি জেলা ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানো হয়েছে।’ আউটডোরে প্রাইভেটকার রেখে গ্যারেজ বানানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মূল গ্যারেজে পানি ওঠায় বাধ্য হয়েই এখানে গাড়ি রাখা হয়েছে।’
সিভিল সার্জন ডা. শেখ মঞ্জুর রহমান বলেন, ‘জলাবদ্ধতার বিষয়টি আমিও দেখেছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর মেয়রের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্তু, তিনি কাউকেই বিষয়টি জানাননি। উপজেলা সমন্বয় সভায় বিষয়টি আলোচনা করা উচিৎ ছিল।’