বিভাগীয় নগরী রংপুরে খোলা বাজারে চাল বিক্রি শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ। নগরীর ১৫টি স্থানে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। চালের দাম অস্বাভাবিক হওয়ায় খোলা বাজারে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে সাধারণ মানুষ ভীড় করছে। তবে প্রচারণা না থাকায় অনেক দোকানে ক্রেতা নেই বললেই চলে।
রংপুর খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় সরকার খোলা বাজারে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রবিবার থেকে চাল বিক্রি করার কথা থাকলেও রংপুরে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। ১৫ জন ডিলারের মাধ্যমে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। খাদ্য বিভাগ থেকে তাদের প্রত্যেককে এক টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এক জন সর্বোচ্চ ৫ কেজি করে চাল কিনতে পারবে বলে জানিয়েছে ডিলাররা। চাল কিনতে নিম্ন মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত অনেকেই ভীড় করেছে।
পরবর্তী ধান না আসা পর্যন্ত খোলা বাজারে চাল বিক্রি অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়ে ক্রেতা বলেছেন,‘বাজারে চালের কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এখান থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে পেরে আমরা খুশি। এছাড়া চালের মানও ভালো।
নগরীর স্টেশন রোড এলাকায় গিয়ে চাল কিনতে আসা নারী-পুরুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
নার্গিস বেগম নামে এক গৃহীনি জানালেন, বাজারে চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি শুরু হওয়ায় তিনিও চাল কিনতে এসেছেন।
রংপুর রেলপুলিশের এক কনস্টেবল নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন, বাজারে চালের দাম অনেক বেশি তাই তিনি এখান থেকে চাল নিতে এসেছেন। চালের মানও ভালো।একই কথা জানালেন চা দোকানদার আলম মিয়া, চাকরিজীবী নিয়মতউল্লাহসহ অনেকে।
ডিলার শামীম জানালেন তারা এক টন চাল পেয়েছেন। ৩০ টাকা কেজি দরে তা বিক্রি করছেন। চাহিদার তুলনায় চালের পরিমাণ কম। ফলে বরাদ্দ আরও বাড়ানো দরকার বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে নগরীর শাপলা চত্বর এলাকায় অবস্থিত খাদ্য বিভাগের এক ডিলারের দোকানে গিয়ে দেখা গেল সেখানে কোনও ক্রেতা নেই। চাল নিয়ে বসে আছেন ডিলার ও তার লোকজন। ডিলার ডাবলু জানালেন প্রচারনা না থাকায় অনেকেই জানে না খোলা বাজারে চাল বিক্রি হচ্ছে। তার পরও দু চারজন করে আসছেন চাল নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি জানালেন, বাজারে চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন মধ্যবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো বিপাকে পড়েছে। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ অনেক কম বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে শাপলা চত্বর এলাকায় খোলা বাজারে চাল বিক্রি তদারক করতে আসা খাদ্য পরিদর্শক মোতাসাদ্দেকা খাতুন রিতা জানান, শনিবার ছাড়া বাকি ৬ দিন নগরীর ১৫টি স্থানে খোলা বাজারে চাল বিক্রি করা হবে। চালের মান ভালো হওয়ায় যারাই চাল দেখছেন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তবে এক জনকে ৫ কেজির বেশি চাল দেওয়া হবে না। পরবর্তী নির্দ্দেশ না আসা পর্যন্ত এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
অপরদিকে রংপুরের জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান জানান, সোমবার থেকে খোলা বাজারে চাল বিক্রি শুরু করা হয়েছে। চাল বিক্রিতে কোনও অনিয়ম হলে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়তে পারেন: ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা: আসামি গ্রেফতার