X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিহত সেনা সদস্য আলতাফের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

দিনাজপুর প্রতিনিধি
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:০৩আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:০৩

নিহত সার্জেন্ট আলতাফ হোসেনের মা

মালিতে বোমা বিস্ফোরণে নিহত তিন বাংলাদেশি সেনার মধ্যে সার্জেন্ট আলতাফ হোসেন মণ্ডলের বাড়ি দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে। আলতাফ হোসেনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর থেকে তার পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে চলছে শোকের মাতম। ছেলেকে হারিয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন তার মা। মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর থেকে তার স্ত্রী আর সন্তানদের কান্না থামাতে পারছে না কেউ। এলাকাবাসী জানিয়েছে, খুব শান্ত ও ভদ্র এই মানুষটির স্বপ্ন ছিল সন্তানদের মানুষ করার, তার এ স্বপ্ন যেন সরকার পূরণ করে।

আলতাফ হোসেন মণ্ডল চিরিরবন্দর উপজেলার বিশ্বনাথপুর মণ্ডলপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর সাত্তার মণ্ডলের ছেলে। তিনি এসএসসি পাশ করার পর ১৯৯২ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। প্রথমে তিনি সৈয়দপুর সেনানিবাসে যোগদান করেন। পরে একে একে রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালন করেন। গত ৪ মাস আগে তাকে মালিতে শান্তিরক্ষী মিশনে পাঠানো হয়।

পারিবারিক জীবনে আলতাফ হোসেন দুই কন্যা সন্তানের বাবা। তার বড় মেয়ে মীন আরা (মীম) সৈয়দপুর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী আর ছোট মেয়ে সুমাইয়া একই প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।

সোমবার সকালে মালিতে বোমা বিস্ফোরণে নিহত সেনাবাহিনীর সদস্য সার্জেন্ট আলতাফ হোসেন মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে শোকের মাতম। ছেলেকে হারিয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন মমতাময়ী মা। তিনি বার বার মুর্চ্ছা যাচ্ছেন।

তিনি জানান, তার ছেলে তাকে খুব ভালবাসতো। বাড়িতে আসলেই বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতো। এমন সন্তান পাওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার।

এলাকাবাসী জানায়, আলতাফ হোসেন বড় শান্ত ও ভদ্র মানুষ ছিল। স্বপ্ন ছিল মেয়েদের পড়ালেখা শিখিয়ে চিকিৎসক বানাবেন। তার সেই স্বপ্ন যাতে অসম্পূর্ণ না থাকে সেজন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন পরিবারের সদস্য, স্বজন ও এলাকাবাসী।

নিহত সার্জেন্ট আলতাফ হোসেনের স্ত্রী

আব্দুস সাত্তার নামে এক আত্মীয় জানান, মেয়ে দু’টিকে চিকিৎসক বানাবেন এটি তার স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্নের পথেই এগুচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু নিয়তির পরিহাসে স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নেওয়ার আগেই তিনি না ফেরার দেশে চলে গেলেন। তিনি আলতাফের স্বপ্ন পূরনে কাজ করবেন জানিয়ে পাশাপাশি সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

ভাই সাইদুর রহমান জানান, বড় ভালো মানুষ ছিলেন আলতাফ। সবাইকে সম্মান দিয়ে কথা বলতেন। এমনটি হবে তা স্বপ্নেও কখনোও  ভাবেননি বলে জানান। এলাকার কোনও মানুষ নেই যে আলতাফের সম্পর্কে খারাপ কিছু বলতে পারবে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে পরিবারকে জানানো হয়েছে তার লাশ দেশে আসতে আরও সাত দিন সময় লাগবে।

বাবার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই কাঁদছে মেয়ে মীম ও সুমাইয়া। বাবাকে ছাড়া আর কিছুই চান না তারা।

স্ত্রী মাসুমা জানান, তার টাকা পয়সা কিছুই দরকার নেই। স্বামীর স্বপ্ন পূরণ করাই এখন তার একমাত্র কাজ বলে জানান।

 

আরও পড়তে পারেন: সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া মেরামত করছে মিয়ানমার 

 

/জেবি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা