X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

হারিয়ে যাচ্ছে লাল শাপলা

বরিশাল প্রতিনিধি
১৭ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:৫১আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০১৭, ১৪:৫৬

লাল শাপলার বিল একটা সময় বরিশালের আগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলার খাল-বিলের দিকে তাকালেই বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে চোখে পড়ত ‘লাল শাপলা’। এই লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখতেই আশপাশের গ্রাম থেকে ছুটে আসত প্রকৃতিপ্রেমীরা। ওষুধি গুণে সমৃদ্ধ লাল শাপলার সবজি হিসেবেও কদর থাকায় তা বিক্রি করে আয়েরও সংস্থান হয় অনেকের। কিন্তু বৈরী পরিবেশের কারণে খাল-বিল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এই লাল শাপলা।

স্থানীয়রা বলছেন, বাড়তি জনসংখ্যার চাপে জমি ভরাট করে বাড়ি, পুকুর, মাছের ঘের বানানোর ফলে কমছে বিল। তাতে শাপলা জন্মানোর জায়গাও কমে আসছে। তাছাড়া বিলের জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষাবাদের কারণে সেচ, বেশি মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, খাল-বিল ও জলাশয় ভরাটের কারণেও হারিয়ে যাচ্ছে লাল শাপলা। অনেকে পুকুরেও লাল শাপলা চাষ করতেন। তবে পুকুরে মাছ চাষের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় সেখান থেকেও হারিয়ে যাচ্ছে লাল শাপলা।

লাল শাপলার বিল

আগৈলঝাড়া উপজেলার দক্ষিণ পশ্চিম বারপাইকা গ্রামের প্রবীণ ফেলু হালদার (৬০), সুধীর কীর্তনীয়া (৭৫) বলেন, কয়েক বছর আগেও বর্ষার শুরু থেকে শরতের শেষভাগ পর্যন্ত বিল এলাকায় মাইলের পর মাইল রক্ত শাপলা (লাল শাপলা) দেখা যেত। এখন আর তেমন দেখা যায় না।’

জানা গেছে, আগৈলঝাড়া উপজেলার আস্কর, নাঘিরপাড়, চাঁদত্রিশিরা, কড়াইবাড়ি বিল কদমবাড়ি, চৌদ্দমেধা বিল, আমবৌলা, কুড়লিয়া, রামশীল ও শুয়াগ্রাম এবং উজিরপুর উপজেলার হারতা, সাতলা, বাগধার বিল এলাকার জলাশয়ে লাল শাপলা ফোটে। ভরা মৌসুমে এসব বিল হয়ে ওঠে দর্শনীয় স্থান। তা দেখতে ভিড় জমে যায় এসব এলাকায়। শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করার মতো মানুষের সংখ্যাও কম নয়।

লাল শাপলার বিলে শাপলা তুলছে

আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন জানান, সাধারণত শাপলা তিন ধরনের হয়ে থাকে— সাদা, বেগুনি (হুন্দি শাপলা) ও লাল রঙের শাপলা। এর মধ্যে সাদা ফুলের শাপলা সবজি হিসেবে এবং লাল রঙের শাপলা ওষুধি কাজে বেশি ব্যবহৃত হয়। পুষ্টিমানে শাপলা অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি সবজি। সাধারণ শাক-সবজির চেয়ে এর পুষ্টিগুণ বেশি। শাপলায় ক্যালসিয়ামের পরিমাণ আলুর চেয়ে সাতগুণ বেশি।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরুতে বরিশালের বিল অঞ্চলে লাল শাপলা ফুটতে শুরু করে। প্রায় ছয় মাস পর্যন্ত এ অঞ্চলের বিল-ঝিল, জলাশয় ও নিচু জমিতে লাল শাপলা জন্ম নেয়। শাপলার ফল (ঢ্যাপ) দিয়ে সুস্বাদু খৈ ভাজা যায়। গ্রামগঞ্জে তা ‘ঢ্যাপের খই’ হিসেবে পরিচিত।

শাপলা বিল

নাছির উদ্দিন জানান, আগৈলঝাড়ায় ৪০ থেকে ৫০ হেক্টর জমিতে শাপলা জন্মায়। তবে স্থানীয় কৃষকদের দাবি, এর পরিমাণ আরও বেশি।

উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘খাল-বিল ও আবদ্ধ জলাশয়গুলো শুকিয়ে রাখার কারণে শাপলা জন্মানোর ক্ষেত্র নষ্ট হচ্ছে। তারপরও সরকারিভাবে শাপলা উৎপাদনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরির প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন।’

 

/এসটি/টিআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
জোভানের নতজানু বার্তা: আমার ওপর কষ্ট রাখবেন না
লাগাতার তাপদাহে যশোরে জনজীবন দুর্ভোগে
লাগাতার তাপদাহে যশোরে জনজীবন দুর্ভোগে
জেলেনস্কিকে হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত অভিযোগে পোলিশ নাগরিক গ্রেফতার
জেলেনস্কিকে হত্যার পরিকল্পনায় জড়িত অভিযোগে পোলিশ নাগরিক গ্রেফতার
বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরও ১৩ সীমান্তরক্ষী
বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরও ১৩ সীমান্তরক্ষী
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ