দেশ ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সেজন্য ষড়যন্ত্র করছে আওয়ামী লীগ। কারণ, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি ঘটবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ২৫টি আসনও পাবে না। তাই নির্বাচন থেকে বিএনপিকে দূরে রাখতে আওয়ামী লীগ নানা ষড়যন্ত্র করছে।’
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপি’র উদ্যোগে ঘাগটিয়াচালা ওয়েল ফেয়ার ক্লাব মাঠে আয়োজিত বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ্’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া-মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ষড়যন্ত্র চলছে বিএনপি’কে নির্মূল করে দেওয়ার। ষড়যন্ত্র চলছে খালেদা জিয়াকে অযোগ্য ঘোষণা করে এবং তার উত্তরসূরি তারেক রহমানকে নির্বাসনে রেখে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার। এজন্য যত রকম কারচুপি ও কারসাজি করা যায়, সবই করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ একটি নির্বাচন চাই, যে নির্বাচনে জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারবে। সেজন্য নির্বাচনের সময়ে একটি সহায়ক সরকার চাই, যে সরকার নিরপেক্ষভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে। জনগণের ভোট ছাড়া গঠিত পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে। এ পার্লামেন্ট ভেঙে না দেওয়া হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই সংসদ ভেঙে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সব দলের সমান সুযোগ সৃষ্টির জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে।’
বিএনপি’র মহাসচিব বলেন, ‘দেশে ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। জনগণের ভোট ছাড়াই ১৫৪ জন এমপি হয়েছিলেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগ জন-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের পায়ের তলায় এখন মাটি নেই। তাই আগামী নির্বাচন থেকে বিএনপিকে দূরে রাখতে দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। নেতাকর্মীদের গুম, খুন করে ভয় দেখানো হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘হান্নান শাহ্ ছিলেন একজন সৈনিক। তিনি ছিলেন জাতীয় নেতা। স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় তিনি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। হান্নান শাহ্ ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বরের সিপাহী বিপ্লবের সময় জিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ঠিক তেমনিভাবে ১/১১ এর সময়ও গণতন্ত্র রক্ষায় কথা বলেছেন। হান্নান শাহ দেশের দুর্যোগ, দলের দু:সময়ে কাণ্ডারি ছিলেন। হান্নান শাহ্ ছিলেন জিয়া পরিবারের বিশ্বস্ত ব্যক্তি ও বিএনপির নেতা কর্মীদের অভিভাবক।’
কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সেলিমের পরিচালনায় স্মরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হান্নান শাহ্’র ছেলে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপি’র সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ হাসান উদ্দিন সরকার, হান্নান শাহ্’র ছোট ভাই মোবারক শাহ্, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) মিজানুর রহমান, মজিবুর রহমান, ডা. মাজহারুল আলম, গাজীপুর জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি ও কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কাজী ছায়েদুল আলম বাবুল, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হান্নান মিয়া হান্নুসহ অনেকে।
