মৌসুমের শুরুতে বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে ধান উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা থাকলেও এখন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলনের আশা করছে মাদারীপুরের কৃষি বিভাগ। মাঠে মাঠে সোনালী ধান দেখে খুশি কৃষকরা। ইতোমধ্যে জেলার প্রায় এক চতুর্থাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর মাদারীপুরে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১০ হাজার ৩৯৮ মেট্রিকটন। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জেলায় মোট ২৬ হাজার ৭৩১ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে বোনা আমন ১৫ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে, উচ্চ ফলনশীল রোপা আমন ৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে, স্থানীয় জাতের রোপা আমন ৫ হাজার ৬২৯ হেক্টর এবং হাইব্রিড রোপা আমন চাষ করা হয়েছে ২ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৩ শতাংশ জমির ধান ঘরে তুলেছেন কৃষকরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মাদারীপুর জেলার চারটি উপজেলায় মাঠের পর মাঠ সোনালী ধানক্ষেত। ধান কেটে মাঠেই মাড়াই করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। ধানের ভালো ফলন পেয়ে কৃষকদের চোখে-মুখে আনন্দের ঝিলিক। মৌসুমের শুরুতে বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন কৃষকরা। কিন্তু চলতি মৌসুমে আমনসহ বিভিন্ন ধানের ফলনে খুশি তারা।
মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেরচর এলাকার কৃষক মজলু মাতুব্বর ও আব্দুল হক বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ায় ধান চাষে সরকারিভাবে তেমন কোনও সহযোগিতা পাইনি আমরা। কিন্তু নিজেদের উদ্যোগে আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। চলতি বছর ধানের ফলনে খুশি আমরা।’
ঝাউদি গ্রামের একটি মাঠেই মেশিনে ধান মাড়াইয়ের কাজ করছিলেন গৃহিনী জাহানারা বেগম এবং তার মেয়ে সাথী ও বীথি। নিজেদের জমিতে ধানের উৎপাদন ভালো হওয়ায় তাদের পরিবার বেশ খুশি। জাহানারা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ধান কাটার পরই মাঠে বসে মেশিন দিয়ে মাড়াই করে বাড়িতে নিয়ে যাই। এবার আমন ধান ভালো হওয়ায় বেশ খুশি লাগছে। যেমন আবহাওয়া ছিল, তাতে ধানের ফলন ঘরে তোলার বিষয়ে বেশ শঙ্কা ছিল আমোদের।’
মাদারীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জিএমএ গফুর বলেন, ‘ইতোমধ্যে জেলার প্রায় ২৩ শতাংশ জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছ। এতে কৃষকরা যে ফলন পেয়েছেন তাতে মাদারীপুর জেলায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন হওয়ার আশা করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:
আজ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন ইইউসহ তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী