X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

হেমায়েত বাহিনীর সাহসিকতায় মুক্ত হয়েছিল কোটালীপাড়া

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
০৩ ডিসেম্বর ২০১৭, ০২:৩১আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:৫৪

হেমায়েত বাহিনীর সাহসিকতায় মুক্ত হয়েছিল কোটালীপাড়া

রবিবার (৩ ডিসেম্বর) কোটালীপাড়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১-এর এই দিনে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া হানাদার মুক্ত হয়েছিল। ৩ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কাকডাঙ্গা রাজাকার ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা হামলা চালিয়ে ক্যাম্পটি দখল করে নেয়। রাজাকার ক্যাম্পের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এরই মধ্যে দিয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।

সেদিন কোটালীপাড়া উপজেলায় বয়ে গিয়েছিল  আনন্দের বন্যা। অনেক দুঃখ বেদনার পরও সেদিন এলাকার মানুষের মধ্যে ছিল আনন্দ আর উল্লাস। কোটালীপাড়াবাসী পেয়েছিল মুক্তির স্বাদ। দিবসটি উপলক্ষে রবিবার সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ নানা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে হেমায়েত বাহিনী।

জানা গেছে, যুদ্ধকালীন সময়ে অঞ্চলটিতে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা খুবই শক্ত অবস্থানে ছিল।  যুদ্ধ শুরু হলে কোটালীপাড়ার সন্তান ও তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সৈনিক হেমায়েতউদ্দিন দেশে পালিয়ে আসেন, গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী।

সাড়ে ৩ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে গড়ে ওঠে হেমায়েত বাহিনী। কোটালীপাড়ায় একটি ট্রেনিং ক্যাম্পও খোলা হয়। পুরুষের পাশাপাশি যুদ্ধের ট্রেনিং দেওয়া হতো নারীদেরও। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বেশ কয়েকটি সম্মূখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় হেমায়েত বাহিনী। উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ হয় হরিনাহাটি, মাটিভাঙ্গা, বাশবাড়িয়া, ঝনঝনিয়া, রামশীল, জহরের কান্দি, কোটালীপাড়া সদর প্রভৃতি স্থানে। এ ছাড়া ছোট যুদ্ধ হয়েছে বেশ কয়েকটি। আর এ সব যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন হেমায়েত বাহিনী প্রধান হেমায়েত উদ্দিন (বীর বিক্রম)।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মুজিবুল হক বলেন, ‘‘৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে শুধু যৌথবাহিনীই দেশ মাতৃকার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেননি। পাক হানাদার বাহিনীকে এদেশ থেকে বিতাড়িত করতে তৎকালীন সময়ে এদেশে কয়েকটি অঞ্চলে গঠিত হয়েছিল কয়েকটি বাহিনী। ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চল  নিয়ে গঠিত হয়েছিল ‘হেমায়েত বাহিনী’। আমরা এই হেমায়েত বাহিনীর অধিনে মুক্তিযুদ্ধ করেছি।’’

কোটালীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সামচুল হক বলেন, ৭২টি গ্রুপের সমন্বয়ে গঠিত এই হেমায়েত বাহিনী যুদ্ধ করেছিল মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে। এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল প্রায় ৭ হাজার। তার মধ্য থেকে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম দাড়িয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধ  চলাকালীন সময়ে হেমায়েত বাহিনীর সদস্যরা ১৩৪টি অপারেশন পরিচালনা করেন। এর মধ্যে রামশীলের যুদ্ধ অন্যতম। এই যুদ্ধটি এই অঞ্চলে ঐতিহাসিক রামশীলের যুদ্ধ বলে পরিচিত।

হেমায়েত বাহিনীর প্রধান হেমায়েত উদ্দিন ঐতিহাসিক রামশীলের যুদ্ধে মারাত্মকভাবে আহত হন। মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের কারণে দেশ স্বাধীন হবার পর হেমায়েত উদ্দিনকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। 

 

 

/এমএইচ/
সম্পর্কিত
নানা আয়োজনে রাজধানীবাসীর বিজয় উদযাপন
বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনা
জাবিতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
সর্বশেষ খবর
‘আশ্রয়ণ’: গ্রামীণ বসতি রূপান্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়
‘আশ্রয়ণ’: গ্রামীণ বসতি রূপান্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়
ছক্কা মেরেও আউট হলেন মুশফিক !
ছক্কা মেরেও আউট হলেন মুশফিক !
ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন
ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন
অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করতে হবে
রামরুর কর্মশালায় বক্তারাঅভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করতে হবে
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা