X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনা মুক্ত দিবস আজ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
০৯ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৬:৫০আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৬:৫৯

নেত্রকোনা আজ ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোন মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় নেত্রকোনা। প্রতি বছরের মতো এ বছরও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। দিবসটি পালনের মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের রায় কার্যকর ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে বদ্ধভূমিগুলোকে চিহ্নিত করে স্মৃতিফলক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
১৯৭১ সালের এই দিনে শহরের নাগড়াস্থ সরকারি কৃষি খামারে এক সম্মুখ যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয় নেত্রকোনা। ওই দিন ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। এই যুদ্ধে আবু খাঁ, আব্দুর রশীদ ও সাত্তার নামে তিন জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাদের স্মৃতি রক্ষার জন্য নেত্রকোনা কালেক্টরের চত্বরে একটি স্মৃতিফলক তৈরি করা হয়েছে। যা আগামী প্রজন্মের কাছে মুক্তিযোদ্ধের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।
সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, ‘শহরের কৃষি খামার এলাকায় হানাদার বাহিনী অবস্থান নিয়েছে জেনে চারদিক থেকে আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। ওই সময় সম্মুখ যুদ্ধে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আবু খাঁ, আব্দুর রশীদ ও সাত্তার নামে তিন জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তখন আক্রমণ আরও জোড়ালো হয় । এক সময় পিছু হটে পাকিস্তানি বাহিনী। ঠিক তখিই বিজয়ের পতাকা ওড়ানো হয় নেত্রকোনা শহরে।’
এছাড়াও ১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই সন্মুখ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুরে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। সেদিন শহীদ হন নেত্রকোনার ডা. আবদুল আজিজ, ফজলুল হক, জামালপুরের জামাল উদ্দিন, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার নুরুজ্জামান, দীজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস, ইয়ার মাহমুদ ও ভবতোষ চন্দ্র দাস। এসব মহান বীর শহীদদের কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী লেঙ্গুরা এলাকার ১১৭২ নাম্বার ভারতীয় সীমান্ত পিলারের কাছে সমাধি দেওয়া হয় । এই তারিখেও দিনটিকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে এ জেলার সর্বস্তরের সাধারণ মানুষসহ মুক্তিযোদ্ধারা।

এদিকে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধে নেত্রকোনা জেলায় মুক্তিযোদ্ধাসহ শত শত নিরস্ত্র মানুষ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত হন। সম্ভ্রম হারান অনেক মা-বোন। তাছাড়া পাকিস্তানি সেনারা জ্বালিয়ে দেয় গ্রামের পর গ্রাম। নেত্রকোনা শহরের টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পাকিস্তানি বাহিনী তাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতো। তাদের অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের সাক্ষী হয়ে আজও আছে এই কলেজটি দাঁড়িয়ে আছে।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা শুনেছি এখানে পাকিস্তানি বাহিনীরা মানুষকে ধরে এনে নানা নির্যাতন চালাতো। কালের স্বাক্ষী এই কলেজের নির্দিষ্ট স্থানটিকে চিহ্নিত করে সেখানে স্মৃতিফলক নির্মাণ করে তা আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার পাশাপাশি এর স্মৃতি রক্ষার দাবি জানান তারা
জেলার বিভিন্ন স্থানে ১৭টি চিহ্নিত বধ্যভূমি সংরক্ষণ করে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার দাবি জানান জেলার মুক্তিযোদ্ধারা। তারা সেই সঙ্গে ৭১’র যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় দ্রুত করার দাবিও জানিয়েছেন।
নেত্রকোনা মুক্ত দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক ড.মুশফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘যে সব চিহ্নিত বদ্ধভূমি আছে সেগুলোর স্মৃতি রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা আছে এবং ইতোমধ্যে নাজিরপুর সাত শহীদদের মাজার তৈরি,জেলা শহরের মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদেও স্মরণে তৈরি করা হয়েছে প্রজন্ম শপথ, এছাড়াও অন্যান্য চিহ্নত স্থানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে।’

/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ডুবে যাওয়া জাহাজের ১১ নাবিক উদ্ধার, সবার আগে লাফ দেওয়া মাস্টার নিখোঁজ
ডুবে যাওয়া জাহাজের ১১ নাবিক উদ্ধার, সবার আগে লাফ দেওয়া মাস্টার নিখোঁজ
জাকার্তায় সোনা জিতে বাংলাদেশ পুলিশের ভানরুমের চমক
জাকার্তায় সোনা জিতে বাংলাদেশ পুলিশের ভানরুমের চমক
রাব্বির ব্যাটে শাইনপুকুরকে হারালো শেখ জামাল
রাব্বির ব্যাটে শাইনপুকুরকে হারালো শেখ জামাল
সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার দুর্নীতি: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
সমবায় সমিতির নামে কোটি টাকার দুর্নীতি: দুদকের অনুসন্ধান শুরু
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা