X
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫
১৭ আষাঢ় ১৪৩২

৫৬ যুবকের চেষ্টায় তৈরি হচ্ছে ভাসমান সেতু

যশোর প্রতিনিধি
১০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৫:৪১আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:৩৮

ঝাঁপা গ্রামে নির্মাণাধীন সেতু একটি সেতুর অভাবে বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন যশোরের মণিরামপুরের ঝাঁপা গ্রামের হাজারো মানুষ। আশপাশের অন্যান্য এলাকার লোকদেরও যাতায়াতের ক্ষেত্রে সীমাহীন যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে। তবে বহু বছরের এই দুর্ভোগের ইতি টানতে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় ৫৬ যুবক। তাদের আর্থিক সহযোগিতায় ঝাঁপা বাঁওড়ের ওপর তৈরি হচ্ছে এক হাজার ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেতু।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারের সঙ্গে ঝাঁপা গ্রামের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। এ দুটি গ্রামের মধ্য ঝাঁপা বাওড়। কোনও দিনও সেখানে সেতু তৈরি হয়নি। ঝাঁপা গ্রামবাসী নৌকায় বাওড় পার হয়েই রাজগঞ্জ বাজারে যান, স্কুল কলেজে যাতায়াত করেন ওই এলাকার শত শত শিক্ষার্থী। দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় গ্রামের অধিবাসীদের।

ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সভাপতি মেহেদী হাসান টুটুল জানান, গ্রামের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত ৫৬ যুবকের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয় তাদের এই সংগঠন ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশন। এরপর সবাই ২০-৩০ হাজার টাকা করে জমা দিয়ে তহবিল তৈরি করেন। গত আগস্ট মাসের দিকে শুরু হয় সেতু তৈরির কাজ। প্রশাসন কিংবা বাইরের কারও সহযোগিতা ছাড়াই তাদের উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে এই সেতু।

মেহেদী হাসান টুটুল বলেন, ‘সেতু তৈরির ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের দফতরেও কথা বলা হয়েছে। সবাই পরিবেশবান্ধব সেতু তৈরির পক্ষে মত দিয়েছেন। আগামী ১ জানুয়ারি সেতুটি জনগণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হবে। আগে খেয়া পারাপারের জন্য মাঝিদের গ্রামবাসী সপ্তাহে পাঁচ টাকা করে এবং বছরে এক মণ করে ধান দিতেন। একই খরচে গ্রামবাসী সেতুটি ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য এলাকার লোকজন যেমন টাকা দিয়ে খেয়া পার হতেন, সেতু পার হতে তাদেরও সেই একই খরচ দিয়ে চলাচল করতে হবে। আর এই টাকা সংগ্রহ করবেন ঘাটে নৌকা চালানো চার মাঝি। এতে করে মাঝিদের সংসার যেমন চলবে, তেমনি উঠে আসবে সেতু নির্মাণের খরচ।’

ঝাঁপা গ্রামের বৃদ্ধ আবু দাউদ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে খেয়া পারাপার হচ্ছি। পার হতে গিয়ে অনেক সময় পানিতে পড়ে যেতে হয়েছে। বর্ষার সময় এই সমস্যা বেশি হয়। সেতু হওয়ায় এই সমস্যা আর থাকবে না।’

স্কুল ছাত্র ফাহিম ও সজিব জানায়, গত দুই বছর ধরে নৌকায় পার হয়ে স্কুলে যাচ্ছে তারা। সেতু হলে আর নৌকার জন্য ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না,তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে পারবে।

ঘাটের মাঝি শেখর চন্দ্র বলেন, ‘ কমিটি বলেছে ব্রিজ চালু হলে আমাদের কাজে দেবে। ব্রিজ পার হওয়া লোকজনের কাছ থেকে আমরা টাকা তুলবো। সেখান থেকে আমাদের সংসার খরচ দেওয়া হবে। তাই আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঝাঁপা বাওড়ের ওপর সেতু তৈরির কাজ দেখেছি। কমিটির কেউ আমাকে বিষয়টি জানাননি। সেতু পারাপারে গ্রামবাসীর নিজেদের মধ্যে অর্থ আদায়ের বিষয় থাকতে পারে। সেটা তাদের ব্যাপার। তবে এই বিষয়ে অতিরঞ্জিত কিছু হলে বা অভিযোগ পেলে তখন আমারা হস্তক্ষেপ করবো।’

 

/এসএসএ/এফএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বৈষম্যবিরোধী নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ-লাঠিপেটা, আহত ১০
বৈষম্যবিরোধী নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ-লাঠিপেটা, আহত ১০
৯ কোটি টাকা অনুদান পাচ্ছে ৩২টি চলচ্চিত্র
৯ কোটি টাকা অনুদান পাচ্ছে ৩২টি চলচ্চিত্র
মানুষের কাছে ভোট দেওয়ার মতো নির্ভরযোগ্য বিকল্প বিএনপি ছাড়া অন্যটি নেই: মান্না
মানুষের কাছে ভোট দেওয়ার মতো নির্ভরযোগ্য বিকল্প বিএনপি ছাড়া অন্যটি নেই: মান্না
রংপুর-৪ আসনে এনসিপির এমপি প্রার্থী হিসেবে আখতারের নাম ঘোষণা
রংপুর-৪ আসনে এনসিপির এমপি প্রার্থী হিসেবে আখতারের নাম ঘোষণা
সর্বাধিক পঠিত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
যারা ফেসবুক লাল করেছিল, তাদের জীবন লাল করে দেবে আ.লীগ: পার্থ
বেসরকারি শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা যোগদানের দিন থেকে শুরু করতে হাইকোর্টের রুল
বেসরকারি শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা যোগদানের দিন থেকে শুরু করতে হাইকোর্টের রুল
যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের বারান্দা ভেঙে দুই প্রকৌশলীসহ ৩ জনের মৃত্যু
যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের বারান্দা ভেঙে দুই প্রকৌশলীসহ ৩ জনের মৃত্যু
এনবিআরের আরও ৫ শীর্ষ কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধান করছে দুদক
এনবিআরের আরও ৫ শীর্ষ কর্মকর্তার দুর্নীতি অনুসন্ধান করছে দুদক