X
রবিবার, ১১ মে ২০২৫
২৮ বৈশাখ ১৪৩২

৫৬ যুবকের চেষ্টায় তৈরি হচ্ছে ভাসমান সেতু

যশোর প্রতিনিধি
১০ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৫:৪১আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:৩৮

ঝাঁপা গ্রামে নির্মাণাধীন সেতু একটি সেতুর অভাবে বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন যশোরের মণিরামপুরের ঝাঁপা গ্রামের হাজারো মানুষ। আশপাশের অন্যান্য এলাকার লোকদেরও যাতায়াতের ক্ষেত্রে সীমাহীন যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে। তবে বহু বছরের এই দুর্ভোগের ইতি টানতে এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় ৫৬ যুবক। তাদের আর্থিক সহযোগিতায় ঝাঁপা বাঁওড়ের ওপর তৈরি হচ্ছে এক হাজার ফুট দৈর্ঘ্যের একটি সেতু।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারের সঙ্গে ঝাঁপা গ্রামের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। এ দুটি গ্রামের মধ্য ঝাঁপা বাওড়। কোনও দিনও সেখানে সেতু তৈরি হয়নি। ঝাঁপা গ্রামবাসী নৌকায় বাওড় পার হয়েই রাজগঞ্জ বাজারে যান, স্কুল কলেজে যাতায়াত করেন ওই এলাকার শত শত শিক্ষার্থী। দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় গ্রামের অধিবাসীদের।

ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের সভাপতি মেহেদী হাসান টুটুল জানান, গ্রামের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত ৫৬ যুবকের সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয় তাদের এই সংগঠন ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশন। এরপর সবাই ২০-৩০ হাজার টাকা করে জমা দিয়ে তহবিল তৈরি করেন। গত আগস্ট মাসের দিকে শুরু হয় সেতু তৈরির কাজ। প্রশাসন কিংবা বাইরের কারও সহযোগিতা ছাড়াই তাদের উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে এই সেতু।

মেহেদী হাসান টুটুল বলেন, ‘সেতু তৈরির ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের দফতরেও কথা বলা হয়েছে। সবাই পরিবেশবান্ধব সেতু তৈরির পক্ষে মত দিয়েছেন। আগামী ১ জানুয়ারি সেতুটি জনগণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হবে। আগে খেয়া পারাপারের জন্য মাঝিদের গ্রামবাসী সপ্তাহে পাঁচ টাকা করে এবং বছরে এক মণ করে ধান দিতেন। একই খরচে গ্রামবাসী সেতুটি ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য এলাকার লোকজন যেমন টাকা দিয়ে খেয়া পার হতেন, সেতু পার হতে তাদেরও সেই একই খরচ দিয়ে চলাচল করতে হবে। আর এই টাকা সংগ্রহ করবেন ঘাটে নৌকা চালানো চার মাঝি। এতে করে মাঝিদের সংসার যেমন চলবে, তেমনি উঠে আসবে সেতু নির্মাণের খরচ।’

ঝাঁপা গ্রামের বৃদ্ধ আবু দাউদ বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে খেয়া পারাপার হচ্ছি। পার হতে গিয়ে অনেক সময় পানিতে পড়ে যেতে হয়েছে। বর্ষার সময় এই সমস্যা বেশি হয়। সেতু হওয়ায় এই সমস্যা আর থাকবে না।’

স্কুল ছাত্র ফাহিম ও সজিব জানায়, গত দুই বছর ধরে নৌকায় পার হয়ে স্কুলে যাচ্ছে তারা। সেতু হলে আর নৌকার জন্য ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না,তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে পারবে।

ঘাটের মাঝি শেখর চন্দ্র বলেন, ‘ কমিটি বলেছে ব্রিজ চালু হলে আমাদের কাজে দেবে। ব্রিজ পার হওয়া লোকজনের কাছ থেকে আমরা টাকা তুলবো। সেখান থেকে আমাদের সংসার খরচ দেওয়া হবে। তাই আমাদের কোনও আপত্তি নেই।’

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঝাঁপা বাওড়ের ওপর সেতু তৈরির কাজ দেখেছি। কমিটির কেউ আমাকে বিষয়টি জানাননি। সেতু পারাপারে গ্রামবাসীর নিজেদের মধ্যে অর্থ আদায়ের বিষয় থাকতে পারে। সেটা তাদের ব্যাপার। তবে এই বিষয়ে অতিরঞ্জিত কিছু হলে বা অভিযোগ পেলে তখন আমারা হস্তক্ষেপ করবো।’

 

/এসএসএ/এফএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি না: কাদের সিদ্দিকী
আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি না: কাদের সিদ্দিকী
আ.লীগেরর কার্যক্রম নিষিদ্ধে সরকারের সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী: মজলিস
আ.লীগেরর কার্যক্রম নিষিদ্ধে সরকারের সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী: মজলিস
যুক্তরাজ্যের অভিবাসন আইনে আসতে যাচ্ছে ব্যাপক পরিবর্তন
যুক্তরাজ্যের অভিবাসন আইনে আসতে যাচ্ছে ব্যাপক পরিবর্তন
তারকাদের মা দিবস…
তারকাদের মা দিবস…
সর্বাধিক পঠিত
আরও কমলো স্বর্ণের দাম
আরও কমলো স্বর্ণের দাম
ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা
ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ
ব্যাংকে টাকা আসছে নাকি বের হয়ে যাচ্ছে
ব্যাংকে টাকা আসছে নাকি বের হয়ে যাচ্ছে
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ
বিচারের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ