X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত হাওরের কৃষকরা

হানিফ উল্লাহ আকাশ, নেত্রকোনা
১৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:০৯আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৫:১১

বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত হাওরের কৃষকরা আগামী বোরো ফসলের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের কৃষকরা। চলতি বছরের বোরো ফসলহানির পর আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ব্যস্ত তারা।

জানা গেছে, বোরো ফসলহানির পর অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার মানুষ ও কয়েক হাজার কৃষক পরিবার। গেল বন্যায় জেলার ১৩৪টি হাওরের বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে শতভাগ ক্ষতির সম্মুখীন হয় খালিয়াজুরীর কৃষকরা। তারা এক মুঠো ধানও ঘরে তুলতে পারেননি। অন্যান্য বছরের এই সময়ে কৃষকরা মনের আনন্দে বীজতলা তৈরি করতেন এবং কৃষাণীরা বিভিন্ন স্বাদের পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন। কিন্তু গত বন্যায় ফসল তুলতে না পারায় এ বছর তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তারপরও দুশ্চিন্তা নিয়ে বীজতলা তৈরির কাজ করছেন তারা। হাতে টাকা নেই, ঘরে খাদ্য নেই, একদিন চললে আর একদিন চলে না অবস্থা। এরপরও ধার করে তারা বীজতলা তৈরি করছেন।

বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত হাওরের কৃষকরা

জানা গেছে, কৃষকদের এ অসহায়তার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি বেশি দামে বীজ ধান বিক্রি করছেন। সরকারের পক্ষ থেকেও এ অঞ্চলের প্রান্তিক ১৯ হাজার কৃষকের প্রত্যেককে এক বস্তা সার, ১০ কেজি বীজ ধান এবং এক হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক কৃষক সরকারের এই সহায়তা পাননি।

বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত হাওরের কৃষকরা খালিয়াজুরী উপজেলার বৌয়ালী এলাকার কৃষক যতীন্দ্র সরকার বলেন, ‘সরকারের দেওয়া সহায়তার কোনও কিছুই আমি পাইনি। গত বছর ধারদেনা করে ১০ একর জমি চাষ করেছিলেন। কিন্তু ধান ঘরে তুলতে পারিনি। এবার মহাজনের কাছ থেকে উচ্চ সুদে টাকা এনে বীজ সংগ্রহ করে বীজতলা তৈরি করছি।’

বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত হাওরের কৃষকরা তিনি আরও বলেন, ‘আমি সরকারি কোনও বরাদ্দ পায়নি। কিন্তু আমার চেয়ে যারা অবস্থা সম্পন্ন তাদেরও সাহায্য দেওয়া হয়েছে। এবার ফসলের ক্ষতি না হলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে। তখন মহাজনের টাকা পরিশোধ করতে হবে।’

জগন্নাথপুরের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যে পরিমাণ বীজ দেওয়া হয়েছে তার তুলনায় আমাদের জমি অনেক বেশি। ওই বীজ ধান দিয়ে কিছুই হবে না। অর্থাৎ সরকারি প্রণোদনা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।’

বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত হাওরের কৃষকরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর নেত্রকোনায় বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার হেক্টর, জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ৮২ হাজার ৩০১ হেক্টর এবং ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ ২৪ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদদফতরের উপ-পরিচালক বিলাশ চন্দ্র পাল বলেন, ‘যদি কোনও ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে এবার বাম্পার ফলন হবে। এ জন্য জেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।’

আরও পড়ুন:
‘টাকার অভাবে আ. লীগের অনেক নেতা সন্তানদের বিয়ে দিতে পারেন না’


/এসএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৩০ মামলার বিচার শেষের অপেক্ষা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৩০ মামলার বিচার শেষের অপেক্ষা
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা