সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা করা কোনও অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। তিনি বলেন,‘মানুষ অন্যায় করতে পারে সেজন্য তাকে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এর জন্য গুলি করে মানুষকে মেরে ফেলা কোনওভাবেই উচিত নয়।’
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার জমগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অসহায়দের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণের আগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর আঞ্চলিক কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম সাইফুল ইসলাম, রংপুর-৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল মো. মাহফুজ উল বারী, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ, পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর কুতুবুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনএম নাসির উদ্দিন ও বাউরা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বসুনীয়াসহ অনেকেই। এসময় ৫ শতাধিক অসহায় লোকজনকে কম্বল ও তিন শতাধিক লোকজনকে সোয়েটার দেওয়া হয়।
বিজিবি’র মহাপরিচালক বলেন,‘মানুষ হত্যা বন্ধে আমরা বিএসএফের ওপর চাপ সৃষ্টি করছি। সীমান্তে গুলি করে আর কোনও নিরীহ মানুষকে যেন হত্যা করা না হয় সেজন্য বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে ডিজিটাল বর্ডার ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু সীমান্তকে অপরাধমুক্ত অঞ্চল ঘোষণা করারও কাজ চলছে।’
মেজর জেনারেল আবুল হোসেন আরও বলেন,‘হিলিসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর সীমান্তে ডিজিটাল স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্ট চালু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্ট চালু করার কাজ চলছে। কারণ সীমান্ত পথে চোরাচালান ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুধু ভারত-বাংলাদেশের একক কোনও সমস্যা নয়, এটি সারা বিশ্বের জন্যই সমস্যা। এটি উভয় দেশের জন্য কমন ইস্যু। যাতে সমস্যা সমাধান করা যায়, সেজন্য উভয় দেশের ডিজি পর্যায়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। এক্ষেত্রে সমাধানে বিজিবি-বিএসএফ মাঠ পর্যায়েও আলোচনা চলছে।’
বিজিবির জনবল সংকটের বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ইতোমধ্যে জনবল নিয়োগের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেসব সীমান্তে বিজিবির ক্যাম্প নেই, সেসব সীমান্তে ক্যাম্প নির্মাণ ও যৌথ সীমান্ত টহল সহজ করতে রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন,‘আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে বর্তমানে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। ফলে সীমান্তে হত্যা কমেছে। তবে সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে বিজিবি ও বিএসএফের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। সীমান্তে হত্যা আর যাতে না ঘটে, সেজন্য বিএসএফ কাজ করছে।’
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে মেজর জেনারেল বলেন,‘কয়েক লাখ বাস্তুহারা রোহিঙ্গাকে সাময়িক থাকার জায়গা করে দিয়ে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য মানবিক বিষয় মাথায় রেখে প্রত্যেকেই সীমান্ত সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।’