পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে আন্দোলন ও এক হাজার ৪০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর কর্মবিরতির কারণে অচল হয়ে পড়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)। মেয়র আহসান হাবীব কামালের পক্ষ থেকে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সমঝোতার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাও সফল হয়নি। ফলে অচিরেই অচলাবস্থা নিরসনেরও সম্ভাবনা নেই।
কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে রবি ও সোমবার বিসিসি’র নগর ভবনে প্রশাসনিক দফতরসহ বিভিন্ন দফতরের চেয়ার-টেবিলগুলো এলোমেলোভাবে পড়ে রয়েছে। মহিলা কর্মচারীদের কেউ কেউ তাদের কক্ষে টেবিলে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। নগর ভবন ঘুরে দেখা যায় মেয়র আহসান হাবীব কামাল, নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামান সচিব ইসরাইল হোসেনের দফতরও বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনকারীরা জানান, গত তিন বছরে এই নিয়ে ১০বার আন্দোলন করতে হয়েছে। তারা আর আন্দোলন করতে চান না। তারা চান তাদের বকেয়া বেতন। মঙ্গলবার থেকে তাদের কর্মবিরতির সময় আরও বাড়িয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত করা হবে। তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ ছাড়া হিসাব শাখার কক্ষের তালা খোলা হবে না।
আন্দোলনরতদের নেতা বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদ নগর ভবন শাখার সম্পাদক দীপক লাল মৃধা জানান, বকেয়া বেতন না নিয়ে তারা কাজে যোগদান করবেন না। তাই তাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকার পাশাপাশি কর্মবিরতি আরও দীর্ঘ হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে মেয়রের পক্ষে কাউন্সিলর আলতাফ মাহমুদ সিকদার ও কাউন্সিলর হাবীবুর রহমান টিপু সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগর ভবনের দোতলায় কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা বলেন, আন্দোলন করে নগর ভবন অচল করে দিয়ে টাকার পাওয়ার সমস্যার সমাধান হবে না। দুই কাউন্সিলর আন্দোলনরতদের তালা মারা কক্ষ খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান। মেয়রের সঙ্গে কথা বলে বকেয়া টাকা পরিশোধ করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন কাউন্সিলররা।
এসময় কর্মচারীদের পক্ষ থেকে দিপক লাল মৃধা বলেন, এবার আর কোনও কথা আর আশ্বাষের বানী শুনতে নারাজ আন্দোলনকারীরা। তাদের একটাই দাবি, বকেয় বেতন ছাড়া কাজে অংশ নেবেন না। তবে আন্দোলনের কারণে নগরবাসীর যাতে দুর্ভোগ না হয় সে দিকে লক্ষ্য রেখে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ঠিক রাখা হবে বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর আলতাফ মাহমুদ সিকদার বলেন, ‘কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন বকেয়া মেটাতে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার প্রয়োজন। এই মুহূর্তে নগর ভবনের হিসাব শাখায় অর্থ সংকট রয়েছে । তাই আলোচনার মাধ্যমে আস্তে আস্তে বকেয়া পরিশোধ করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।’