X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

গরিবদের তৃপ্তি মেটাতে ‘গাঁয়ের হোটেল’

তৈয়ব আলী সরকার, নীলফামারী
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৯:০৯আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৪:১১

‘গাঁয়ের হোটেল’র খাবার গরিবদের তৃপ্তি মেটাচ্ছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ‘গাঁয়ের হোটেল’। দুপুর হওয়া মাত্রই এখানে ভিড় বাড়তে শুরু করে। সবাই হাত ধুয়ে খাবার গ্রহণের জন্য বসে পড়েন। তাদের মাঝে খাবার পরিবেশন করেন হোটেল মালিক মোহাম্মদ আজিজুল হক (৬৪)। এখানে মাত্র ত্রিশ টাকায় মেলে দুপুরে খাবার।

উপজেলার নীমবাগান দোলাপাড়ায় গাঁয়ের হোটেলের প্রতিদিনের দৃশ্য এটি। অল্প দামে ভালো মানের খাবার পাওয়া যায় বলে বিশেষ খ্যাতি রয়েছে এই হোটেলের। দুপুর হলেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কর্মজীবী মানুষ ভিড় করেন এখানে। উদ্দেশ্য তৃপ্তি সহকারে দুপুরের খাবার খাওয়া।

খাওয়ার থালায় তরকারির মধ্যে থাকে ছোট মাছ, সালাদ, ভর্তা, ভাজি, ডাল, ডিম ও গ্রামের মানুষের প্রিয় খাবার সজনে পাতা দিয়ে কচুর পাতার পেলকা। এর সঙ্গে দুই প্লেট ভাত। দাম (বিল) মাত্র ২০ টাকা। সঙ্গে মাছ পেতে হলে গুণতে হবে মাত্র ১০ টাকা। 

মূলত নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য এই হোটেলটি। খোলা থাকে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত। এর মধ্যে শতাধিক শ্রমিক দুপুরের খাবার খান এই হোটেলে। উপজেলা শহরে কাজ করতে আসা গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষগুলো মূলত এখানে আসেন। বড় হোটেলে খেতে বেশি টাকা লাগে বলে তারা গাঁয়ের হোটলে খেতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

রান্নাবান্না করেন হোটেল মালিক আজিজুল হকের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন (৫৬)। এই দম্পতি প্রায় ৮ বছর ধরে হোটেলটি চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে বেশ ঘরোয়া পরিবেশে শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষদের যত্ন সহকারে খাওয়ান তারা।

প্রতিদিন এখানে খাবার খেতে আসেন এলাকার মোকসেদুল মমিন (৫৬)। তিনি প্রায় সাত বছর ধরে এই হোটেলের নিয়মিত গ্রাহক। মমিন বলেন, ‘হামরা প্রতিদিন এঠেকোনা খাবার জন্যে আসি। অল্প টাকায় এঠে পেটভরে খাওয়া যায়। পরিষ্কার-পরিচছন্নতাও ভালো।’

গাঁয়ের হোটেলে খাবার পরিবেশন করছেন হোটেল মালিক মোহাম্মদ আজিজুল হক খাবার খেতে আসা মোহাম্মদ মোস্তাকিম (৫৫) বলেন, ‘হামরা দিনমজুর। দিন আনি দিন খাই। হামরা চাইলেও ভালো কুনোটে যায়া খাবার পাইনা। কিন্তু গাঁয়ের হোটেলত হামরা কম টাকায় ভালো খাবার পাই।’

গাঁয়ের হোটেলের মালিক মোহাম্মদ আজিজুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগে আমি চা বেচতাম। এরপর এই ভাতের হোটেল খুলে বসি। দিনশেষে হোটেল থেকে আয় খুব বেশি একটা হয় না। দোকানের খরচ বাদ দিয়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মতো লাভ হয়।’ আর এতেই সন্তুষ্ট তিনি।

চার সদস্যের পরিবারে ওই আয় দিয়ে তাদের ভালোই চলে। এর মধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে তাদের। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচও চলে ওই হোটেলের আয় থেকে।

তিনি জানান, ব্যবসার ক্ষেত্রে লাভ-লোকসান নিয়ে ভাবি না। লোকজনের তৃপ্তি মেটানো নিয়ে চিন্তা করি। এজন্য সবসময় কম দামে ভালো খাবার দেওয়ার চেষ্টা করি। এখানে যারা নিয়মিত গ্রাহক, তারা সবাই শ্রমজীবী। কাজের তাগিদে তারা শহরে আসেন। তাদের জন্য এই হোটেল। হোটেলটির অবস্থান শহরে হলেও, হোটেলের নাম দিয়েছি ‘গাঁয়ের হোটেল’।

/এনআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪ পণ্যকে জিআই স্বীকৃতি
টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪ পণ্যকে জিআই স্বীকৃতি
১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিসমাহ মারুফ 
১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিসমাহ মারুফ 
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা সিইসির
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা সিইসির
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না