তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার সকাল থেকে হাসপাতালের মধ্যবর্তী গেট বন্ধ এবং শুধু জরুরি বিভাগের গেট খোলা রেখে রোগী ভর্তির কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে এই ধর্মঘট শুরু করেছেন ইন্টার্নরা।
শুক্রবার (২৩ মার্চ) দুপুরে এ কর্মবিরতির পক্ষে ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন হাসপাতালের অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন। ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. রাজু আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক ডা. নাহিদ হাসান এতে বক্তব্য রাখেন। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বলেন, ‘এ আন্দোলন শুধু ইন্টার্ন চিকিৎসকদের। তারা ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসকরা তাদের কর্মস্থলে নিয়মিত রোগীদের সেবা দিয়ে যাবেন।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ শাকিলের স্ত্রী খাদিজা বেগমকে (২২) অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি ছিলেন ৯ মাসের অন্তঃসত্তা ও অ্যাকলামশিয়া রোগে আক্রান্ত। তার প্রেশার বেশি ও অচেতন থাকায় জরুরি অপারেশন করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি মারা যান। এরপর রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকদের উপর হামলা চালিয়ে তিন চিকিৎসকে জখম এবং অপারেশন থিয়েটারের আশেপাশে ভাঙচুর করে।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা এই হামলার জন্য দায়িদের বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি মালামালের ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও পুলিশি ব্যবস্থা জোরদারসহ তিন দফা দাবির কথা উল্লেখ করেন। এসব দাবি না মানা পর্যন্ত ইন্টার্নদের ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে তারা ঘোষণা দেন।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আবদুল কাদির বলেন, ‘রোগীর স্বজনদের দাবি ছিলো সময়মতো রোগীর অপারেশন করা হয়নি। তাই স্বজনরা চিকৎসকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। কিন্তু ওই রোগীর প্রেসার ছিলো খুবই বেশি, এমন রোগীর অপারেশন করা যায় না। তাই রোগী মারা গেছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে কোতয়ালী থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইন্টার্নদের নিয়ে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
