X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

যে কারণে স্কুলটি দেশসেরা

মাজহারুল হক লিপু, মাগুরা
২৪ মার্চ ২০১৮, ১০:৫৬আপডেট : ২৪ মার্চ ২০১৮, ১৬:৩৭

আড়পাড়া মডেল স্কুল সরকারি সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ আর আন্তরিকতায় মাগুরার আড়পাড়া মডেল স্কুল পেয়েছে ‘দেশসেরা স্কুল’র পুরস্কার। সরেজমিনে স্কুল পরিদর্শন করে দেখা গেছে, স্কুলের দৈনন্দিন ব্যতিক্রমী কর্মসূচি শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।

১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি সরকারিকরণ করা হয় ১৯৭৩ সালে। ২০১১ সালে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ইয়াসমীন আক্তার। যিনি নিজেও এবছর দেশসেরা প্রাথমিক শিক্ষকের পুরস্কার পেয়েছেন। মূলত তিনি যোগদানের পর থেকে স্কুলে পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নেন। প্রধান শিক্ষকের তথ্য এবং  দৈনন্দিন কার্যক্রম প্রমাণ করে স্কুলটি শুধু দেশসেরা নয়, শিশু শিক্ষায় ব্যতিক্রম এক প্রতিষ্ঠানও বটে।

যে কারণে স্কুলটি দেশসেরা স্কুলে ভর্তি থেকে শুরু করে ছাত্র-শিক্ষকের হাজিরা সবকিছুই ডিজিটালাইজড  পদ্ধতিতে। এমনকি নোটিশও দেওয়া হয় অভিভাবকের মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে। রয়েছে নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজ। যেখানে সহজেই মেলে স্কুলের সব তথ্য। এমনকি স্কুলের ঘণ্টাও ডিজিটাল।

তথ্য বোর্ডে লেখার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা দিন শুরু করে। মূলত এই দিনে কী ঘটেছিল এবং কোন মনীষীর জন্ম তা নির্ভূলভাবে যে লিখতে পারে তাকে ‘শিশু মেডেল’ দেওয়া হয়। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন দেয়াল জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিক, বিজ্ঞনীসহ নানা মনীষীর ছবি। শ্রেণিকক্ষের নামও রাখা হয়েছে বিভিন্ন মনীষীর নামে।

শিক্ষার্থীরা তাদের ব্যবহৃত অতিরিক্ত জামা রেখে দিয়েছে

শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে বেশকিছু পদক্ষেপ। অনেস্টি সপ নামে একটি দোকান রয়েছে যেখানে খাতা, কলম, পেন্সিলসহ বিভিন্ন দ্রব্য থাকলেও কোনও দোকানি নেই। প্রতিটি পণ্যের গায়ে লেখা মূল্য দেখে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত ক্যাশবাক্সে টাকা ফেলে যায়। দেয়ালে টাঙানো আছে কয়েকটা হ্যাঙ্গার। স্বচ্ছল শিশুরা তাদের অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত জামা কাপড় ঝুলিয়ে রাখে। যেসব শিক্ষার্থীদের সামর্থ নেই তারা এখান থেকে প্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে যায়। দাতা ও গ্রহীতার নাম গোপন রাখা হয়। কোনও শিক্ষার্থী ভালো কোনও কাজ করলে ছবি তুলে রাখা হয় ‘আলোকিত আচরণ সংগ্রহশালা’য়। যাতে করে অন্য শিশুরাও ভালো কাজে উৎসাহিত হয়। যেসব অভিবাবক শিশুদেরকে স্কুলে নিয়ে আসেন তাদের জন্য রয়েছে আনন্দ পাঠাগার। এখানে শিশুতোষ বই পড়ে তারা শিশুদের কাছে তা গল্প করে শোনান।

অনেস্টি শপ স্থানীয়দের সহযোগিতায় স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হয়েছে মিডডে মিল। এছাড়াও শিক্ষকদের জন্য রয়েছে ড্রেসকোড। বিদ্যালয়ের সব অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে শিক্ষার্থীরাই।

প্রধান শিক্ষক ইয়াসমীন আক্তার বলেন, ‘পুরস্কারের জন্য কাজ করি না। এরকম একটা স্কুলের স্বপ্ন দেখতাম আগে থেকেই। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে এরকম একটা স্কুল তৈরি করা সহজ কাজ নয়। আমার সহকর্মী ও এলাকাবসীর সহযোগিতা ছাড়া এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সম্ভব ছিল না।

যে কারণে স্কুলটি দেশসেরা

প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০১৭ সালের জন্য স্কুলটি দেশের শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং প্রধান শিক্ষক ইয়াসমীন আক্তার শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের পুরস্কার পান।

 

 

/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
ডিভোর্স দেওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন স্বামী
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
এক সপ্তাহের মাথায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরেকজন নিহত
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
‘উচিত শিক্ষা’ দিতে পঙ্গু বানাতে গিয়ে ভাইকে হত্যা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ সংসদীয় কমিটির
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!
সমুদ্রসৈকতে জোভান-সাফার ‘অনন্ত প্রেম’!