ভোলার লালমোহনে কালবৈশাখী ঝড়ে ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ চার শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ের কবলে নৌকাডুবিতে এক মাঝি নিহত হয়েছেন। ভেঙে পড়া ঘর ও গাছের চাপায় পড়ে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। আহতদের লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হাবিবুল হাসান রুমি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করার কাজ চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে আচমকা শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড়। লালমোহন উপজেলা সদরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই তীব্র ঝড়ে গাছপালা উপড়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের আঘাতে স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদসহ অন্তত ৫০টি প্রতিষ্ঠানের আধাপাকা ভবন ভেঙে পড়ে।
ইউএনও হাবিবুল হাসান জানান, স্বরূপকাঠি থেকে পাট কাঠি নিয়ে একটি নৌকা আসছিল। সেটি ঝড়ের কবলে পড়ে ফরাজগঞ্জের কাছে তেঁতুলিয়া নদীতে ডুবে যায়। এতে ওই নৌকার মাঝি আব্দুস শুকুর মারা গেছেন। তার বাড়ি যশোর জেলায়।
ঝড়ে ভবন ভেঙে পড়ার সময় কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ, যুগল চন্দ্র শীল, মঈনুল ইসলাম, মাহাদী, মিতা মজুমদার, ইমরান, মারুফ, নাঈমুল, কমল কৃষ্ণ, পারভেজ; মায়ানগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শান্ত, হৃদয়, রিয়াজ ও শুভ; লালমোহন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমা হক; চরভূতা ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাসুদ (৪৫) এবং নয়ানী গ্রামের তাজুসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
ঝড়ে পৌর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে লালমোহন কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মায়ানগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আব্দুল ওহাব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পূর্ব মহেশখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পূর্ব রমাগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এসব বিদ্যালয়ের টিনের ঘর ভেঙে পড়ে ও ওয়ালশেড ভবনের টিনের চালা উড়ে বিধ্বস্ত হয়।
এ ছাড়া, করিম রোড এলাকার মরিয়ম বেগম নয়নের ঘর, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতিবন্ধী ফারুক, মো. আলমগীর, খালপাড়ের হারিছ আহমেদসহ পৌর এলাকা ও বিভিন্ন ইউনিয়নে অন্তত ৩০০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে লালমোহন উপজেলার চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্ষতি হওয়া ঘরগুলোর তালিকা করে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশে প্রত্যেকের জন্য ২ বান্ডল করে ঢেউটিন, ২০ কেজি করে চাল ও নগদ ৬ হাজার টাকা করে বিতরণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত দেড়শ ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও আড়াইশ ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।’
আরও পড়ুন-
ট্রাকের ধাক্কায় হাত হারালেন বাসযাত্রী
হলফনামায় অসত্য তথ্য দেইনি, ভোটেই ফয়সালা হবে: খালেক