বিএসএফের হাতে আহত বাংলাদেশি স্কুলছাত্র রাসেল মিয়ার (১৪)ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। রাসেল (১৪) ওই চোখে আর কখনও দেখতে পারবে না বলে জানান জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক। রাসেল মিয়ার বড় ভাই রুবেল মিয়া এই তথ্য জানিয়েছেন। রাসেল মিয়া বর্তমানে ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।এদিকে চোখ নষ্ট হওয়ার খবরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে রাসেল। হাসপাতালের বেডে শুয়ে সারাক্ষণ শুধু কান্নাকাটি করছে।
রাসেল মিয়া কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নোয়াখালিটারী গ্রামের আব্দুল হানিফ মিয়ার ছেলে ও বালারহাট আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র।
রাসেল মিয়ার বড় ভাই রুবেল মিয়া জানান,‘রাসেল মিয়ার এক চোখের দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। অপর চোখে সামান্য দৃষ্টি শক্তি রয়েছে। বিএসএফ শুধু রাসেলের চোখ নয়, তার পুরো ভবিষ্যতই নষ্ট করে দিয়েছে।রাসেলের মুখেও এখন প্রায় চল্লিশটির বেশি স্প্লিন্টার রয়েছে। যেগুলো অপারেশন ছাড়া বের করা সম্ভব নয়। আমারা তার চিকিৎসা খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি।
রাসেল মিয়া গত ৩০ এপ্রিল বিকালে ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশের ২০ গজ অভ্যন্তরে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে আহত হয়। ঘটনার দিন রাসেলকে রংপুরের প্রাইম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার শেরেবাংলা নগরের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে বর্তমানে ২৩৬ নং রুমের ৯ নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. মোশারফ হোসেনের বরাত দিয়ে রুবেল জানায়, রাসেলের দুই চোখেই বুলেটের আঘাত রয়েছে। তার ডান চোখের ভেতর প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হয়েছে। ডান চোখে এখনো বুলেটের দুটি স্প্লিন্টার এবং বাম চোখে একটি স্প্লিন্টার রয়েছে যা অপারেশন করে বের করতে হবে। অপারেশনের পর বাম চোখে সামান্য দৃষ্টিশক্তি থাকলেও ডান চোখে আর কখনই দেখতে পারবে না।
এর আগে রংপুরের প্রাইম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শামিমা নাজমা মল্লিকা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাসেল মিয়ার দুই চোখ আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি। তার দুই চোখেই গুলির আঘাত রয়েছে। এর মধ্যে ডান চোখে আঘাতের পরিমাণ অনেক বেশি, চোখের ভেতর অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, এক্স-রে রিপোর্টে রাসেল মিয়ার ডান চোখে কয়েক টুকরো গুলির অংশবিশেষ দেখা গেছে। তার ডান চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তার দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করার সময় সে ডান চোখে কিছু দেখতে পারছে না বলে জানিয়েছে। তার ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি ফেরার সম্ভাবনা খুব কম। আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিতে বলেছি।