X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

যে কারণে মঞ্জুর পরাজয়

মো. হেদায়েৎ হোসেন, খুলনা
১৬ মে ২০১৮, ২৩:২০আপডেট : ১৬ মে ২০১৮, ২৩:৪৯

নজরুল ইসলাম মঞ্জু

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর পরাজয়ের নেপথ্যে প্রাথমিকভাবে ৮টি কারণ চিহ্নিত করেছেন তার ঘনিষ্ঠরা। এগুলো হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতারা কথার শক্তির সঙ্গে কাজের শক্তির মিল না থাকা, দলীয় সংহতি সৃষ্টি না হওয়া, দলীয় বিশৃঙ্খলা, মতানৈক্য ও অন্তর্কোন্দল নিরসন না করে চেপে রাখা, মামলা ও  সম্ভাব্য গ্রেফতার নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের উদ্বেগ ও প্রকাশ্যে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে না পারা, বিগত দিনে উন্নয়ন বঞ্চনার প্রচারের যুক্তিসঙ্গত জবাব দিতে না পারা, ব্যক্তি মঞ্জুর প্রতি ক্ষোভ ভুলতে না পারা ও যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বেশ কয়েকজনের ফাঁসি হওয়ার পরও প্রকাশ্যে জামায়াত সংশ্লিষ্টতা।

তার নির্বাচনি কার্যক্রম পর্যালোচনায় দেখা যায়, এবারের নির্বাচনে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থীরা সংঘবদ্ধ ভোট চাওয়ার চেয়ে একক ভোট পেতে তৎপর ছিলেন। মঞ্জু এলাকায় গেলে ওই সব প্রার্থী সঙ্গে ছিলেন মঞ্জুর দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে প্রচার পেতে। কিন্তু  তার অনুপস্থিতিতে যখন তারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি প্রচারণা চালিয়েছেন সেখানে কেবল নিজের জন্যই ভোট চেয়েছেন।

এছাড়াও সাংগঠনিক দুর্বলতাগুলো জানা সত্ত্বেও মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনার সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হওয়ায় ভারসাম্যহীনতা নষ্ট হয়। পরে অবশ্য মনাকে তার প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট করা হয়। একইসঙ্গে বিএনপি নেতা আলী আসগর লবী গ্রুপের নেতা-কর্মীরা মাঠে প্রকাশ্যে না থাকাটাও ছিল চোখে পড়ার মতো।

দলীয় বিরোধে বহিষ্কার হওয়া মহানগর কোষাধ্যক্ষ আরিফুর রহমান মিঠুর নীরবতা পালনও ছিল মঞ্জুর পরাজয়ের কারণগুলোর অন্যতম। তার পক্ষের কর্মীরা এলাকায় মেয়রের পক্ষে সক্রিয় না থাকায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ভোটে।

বর্তমান মেয়র মনিরুজ্জামান মনি বিধি নিষেধের কারণে প্রকাশ্যে মেয়র প্রার্থীও পক্ষে অবস্থান নিতে পারেননি। তিনি দলের মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক। কার্যক্রমে তার অনুপস্থিতি তৃণমূলের কর্মী সমর্থক ও সাধারণ জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আর নির্বাচিত হওয়া নিয়ে বিএনপি নেতাদের অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাস ছিল উল্লেখ করার মতো। ফলে অনেক কাজই করার কথা তারা চিন্তায় নিতে পারেননি।

নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড় ও বিএনপি কর্মী দমনে সক্রিয় অবস্থানের কারণে বিএনপির কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যরা মাঠে থাকলেও ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। নির্বাচন কমিশনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেওয়ার পরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। নির্বাচনের শুরুতেই বিএনপির ঘাঁটি ২২, ২৯, ৩০, ২৪, ২৫, ২৬, ১৯, ১৬, ১৭ নং ওয়ার্ড, খালিশপুরের সব কেন্দ্র ও দৌলতপুরের কিছু কেন্দ্রে বিএনপির কর্মীরা অবস্থান নিতেই পারেনি, যা নৌকার দখলে চলে যায়। এ নির্বাচনে ধানের শীষ যে ভোট পেয়েছে তা ছিল সকাল ১১টার মধ্যের চিত্র। এরপরই চিত্র পাল্টে যায়। বিএনপির ভোট ব্যাংকে নৌকার আঘাত হয়। বিএনপির কর্মীরা সুসংগঠিত ছিল। তাদেরকে কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে।’

মহানগর বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মিডিয়া উপ কমিটির সদস্য সচিব এহতেশামুল হক শাওন বলেন, বিএনপির ভোটাররা ভোট দিতে না পারা এবং ভোট কেটে নেওয়ার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বড় দলে বিভেদ মতৈক্য থাকবেই। ক্ষোভ থাকবেই। ব্যক্তির প্রতি ক্ষোভ থাকবেই। তবে, এ নির্বাচনে ব্যক্তি নয়, প্রার্থী ছিল ধানের শীষ। আর তাই দলের কোনও স্তরেই কোনও প্রকার ক্ষোভ কাজ করেনি। সকলেই ধানের শীষের পক্ষে এক ছিলেন।

/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নড়াইলে ‘সুলতান মেলা’ উপলক্ষে আর্ট ক্যাম্প
নড়াইলে ‘সুলতান মেলা’ উপলক্ষে আর্ট ক্যাম্প
লোকসভা নির্বাচন: রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কট করলেন গ্রামবাসী
লোকসভা নির্বাচন: রাস্তার দাবিতে ভোট বয়কট করলেন গ্রামবাসী
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্মরণে কাল নাগরিক সভা
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্মরণে কাল নাগরিক সভা
শেষ ম্যাচে জিতে সুপার লিগে গাজী গ্রুপ
শেষ ম্যাচে জিতে সুপার লিগে গাজী গ্রুপ
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!