যশোরের অভয়নগর উপজেলায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিন মাদক ব্যবসায়ী ও ময়মনসিংহের নান্দাইলে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হত্যা মামলার এক আসামিসহ মোট চার জন নিহত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ মে) দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে।
র্যাব-৬ খুলনা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লে. ক. জাহিদ জানান, অভয়নগরে ওই সময় তাদের কাছ থেকে একটি পালসার মোটরসাইকেল, দুইটি পিস্তল, ৫০০ বোতল ফেনসিডিল, একটি চাইনিজ কুড়াল ও গুলিভর্তি একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৮ মে) দিবাগত রাত তিনটা ২০ মিনিটের দিকে অভয়নগর উপজেলার বাগদাহ গ্রামের কদমতলা এলাকায় র্যাব-৬ সদস্যের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওই তিন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হন।
নিহতরা হলো অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের কাদের আলী মোড়লের ছেলে আবুল কালাম (৪৭), একই গ্রামের আব্দুল বারিক শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান (৩৮) ও আব্দুস সাত্তার কাসারীর ছেলে মিলন কাসারী (৪০)।
র্যাব-৬ কোম্পানি কমান্ডার লে. ক. জাহিদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রমজান মাস উপলক্ষে এবং মাদক চোরাচালানরোধে নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তাদের একটি টিম পায়রা- নওয়াপাড়া রোডে চেকপোস্ট বসায়। রাত আড়াইটার দিকে টিম যখন একটি মোটরসাইকেল থামিয়ে পরীক্ষা করছিল, ঠিক সেইসময় আরেকটি মোটরসাইকেলে তিন জন র্যাবকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ে। র্যাবও পাল্টা জবাব দেয়। এতে তাদের দু' সদস্য আহত হন এবং মোটরসাইকেলে থাকা তিন জন গুলিবিদ্ধ হন। এরপর আহতদের র্যাবের গাড়িতে করেই স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালে খবর নিয়ে জানতে পারি, তারা মারা গেছে।’
নিহতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
অভয়নগর থানার ওসি শেখ গণি মিয়া বলেন, ‘শনিবার সকালে র্যাব তিনটি মরদেহ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। মরদেহ তিনটি থানায় আছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ তিনটি যশোর জেনারেল হাসাপাতালের মর্গে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি চলছে।’
তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘রেকর্ডপত্র না দেখে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, নান্দাইল উপজেলার চৌরাস্তাবাজার এলাকায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হত্যা মামলার এক আসামি নিহত হয়েছে। এসময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশের দাবি, নিহত ইমন রানা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ইমন নিহত হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিভাগের ওসি আশিকুর রহমান।
তিনি জানান, গত ১৭ মে নান্দাইলে চালক রানাকে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পর দিন নান্দাইল থানায় মামলা দায়েরের পর রানা হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে ইমনকে নিয়ে পুলিশ চৌরাস্তা এলাকায় অপর আসামিদের ধরতে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইমনকে ছিনিয়ে নিতে সহযোগীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি ছুড়লে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এসময় ইমন পুলিশকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তার বুকে গুলি লেগে আহত হয়। গুরুতর আহত ইমনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইমন নান্দাইলের কলাপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। তার বিরুদ্ধে নান্দাইল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
