X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

শাকবাড়ীয়া ও কপোতাক্ষ নদীর ভাঙন, ঝুঁকিতে কয়রার ৪২ হাজার মানুষ

খুলনা প্রতিনিধি
২০ জুন ২০১৮, ২২:৩০আপডেট : ২০ জুন ২০১৮, ২২:৩০

শাকবাড়ীয়া ও কপোতাক্ষ নদীর ভাঙন, ঝুঁকিতে কয়রার ৪২ হাজার মানুষ শাকবাড়ীয়া ও কপোতাক্ষ নদীর অব্যাহত ভাঙনে খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নে ১২টি ওয়ার্ড উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দ্বীপে পরিণত হতে চলেছে। এ অবস্থার কারণে ১৭টি গ্রামের ৪২ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সংসদ সদস্য, রাজনীতিক, উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানার পর এখনও পর্যন্ত জরুরি কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
গাববুনিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য গনেশ মন্ডল জানান, অব্যাহত নদী ভাঙনের ফলে কপোতাক্ষ ও শাকবাড়ীয়া নদী মিশে যেতে বসেছে। তিন দশক আগে এখানে যাতায়তের জন্য নদী পারাপারে খেয়া নৌকা ছিল। নদী ভাঙন রোধ করতে না পারলে আবারও খেয়া নৌকায় পারাপার হতে হবে ১৭ গ্রামের মানুষকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঞ্চলিক শাখা কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘সরকারি কোনও বরাদ্দ না থাকায় আমাদের কিছু করার নেই।’
শাকবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, ‘দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের গোলখালি গ্রামের শাকবাড়ীয়া নদীর তীরে কোস্টগার্ডের আঞ্চলিক অফিস এবং খাসিটানা গ্রামে নৌ পুলিশ ক্যাম্প, পাইলট অফিস, কাস্টম অফিস, আংটিহারা গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউজ, কোবাদাক ফরেস্ট স্টেশন, বজবজা ও খাসিটানা ফরেস্ট ক্যাম্প, ঘড়িলাল ও জোড়সিং বৃহত্তর দুটি বাজার রয়েছে। সুন্দনবনের জেলে বাওয়ালীসহ সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা এ সব স্থানে নিয়মিত বাজার করেন। অন্যদিকে সুন্দরবন বেষ্টিত ১৭টি গ্রামের মধ্যে রয়েছে গোলখালি, জোড়সিং ও পদ্মপুকুর মাছ বিক্রয় কেন্দ্র। যেখানে প্রতিদিন সুন্দরবনের মাছসহ স্থানীয় চিংড়ি ঘেরের মাছ কেনাবেচা হয়। ব্যবসায়ীদের কয়রা সদরসহ অন্যত্র যাওয়ার একমাত্র যোগাযোগ গাব্বুনিয়া গ্রামের ওয়াপদা বেড়িবাঁধ।
সংসদ সদস্য অ্যাড. শেখ নুরুল হক বলেন, ‘আমি বিষয়টি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছি এবং পাউবোর সব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। আশা করছি, জরুরি ভিত্তিতে গাব্বুনিয়া গ্রামে ২টি নদীর তীরে দ্রুত টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা হবে।’

গত ১৫ রমজান প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় এলাকাবাসীর উদ্যেশে তিনি জানান, টেকসই বাঁধ নির্মাণে তিনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জিএম মোহসিন রেজা বলেন, ‘স্থানীয় জনগণ বাঁচার তাগিদে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করায় বাঁধ কোনওরকমে টিকে আছে। পাউবোর অব্যাবস্থাপনার কারণে এবং রাজনৈতিক নেতাদের গুরুত্ব না দেওয়ায় কয়রা উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে দক্ষিণ ও উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের ১৭টি গ্রাম।
হরিহর গ্রামের ইউপি সদস্য হরসিৎ মন্ডল ও নিলিমা চক্রবর্তী বলেন, ‘১৯৭০ সালে ২টি নদীর অব্যাহত ভাঙনের কারণে উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের গাব্বুনিয়া গ্রামের ওপর দিয়ে ৫/৬ শ ফুট দৈর্ঘ্যের নদী খনন করে কপোতাক্ষ ও শাকবাড়ীয়া নদীর সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এর ফলে ভাঙনের কবলে পড়ে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ১৩টি ও উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের ৪টি গ্রামসহ ১৭টি গ্রাম একটি দ্বীপে পরিণত হয়। মানুষ খেয়া নৌকায় চলাচল করতে শুরু করে। একপর্যায়ে খনন করা নদীটি ভরাট হয়ে যায়। ১৯৭৪ সালে ২ নদীর পাড়ে আবার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু ৩ দশক পর আবারও শাকবাড়ীয় ও কপোতাক্ষ নদীর অব্যাহত ভাঙনে বেড়িবাঁধ ধসে ১৭টি গ্রামের ১২টি ওয়ার্ডে প্রায় ৪২ হাজার মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।’

/এআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা