X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাসিক নির্বাচন: গান-ছন্দের পাশাপাশি গুরুত্ব পাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম

রাজশাহী প্রতিনিধি
১৯ জুলাই ২০১৮, ০৪:২২আপডেট : ১৯ জুলাই ২০১৮, ০৪:৩১

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীদের নিয়ে মাইকে জনপ্রিয় বাংলা গানের প্যারোডি বাজছে। সেই সঙ্গে চলছে ছন্দে ছন্দে প্রার্থীদের পক্ষে মাইকিং। এবারের নির্বাচনি প্রচারণায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের মেয়র প্রার্থীই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রচারণাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে উঠে এসেছে জামাত-বিএনপির দূরত্বের মতো বিষয়ও। গান, মাইকিং, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি চিরাচরিত পোস্টার, ব্যানার ও তোরণ তো আছেই।  তবে নগরবাসীর মধ্যে অনেকে আবার শব্দ দূষণের অভিযোগও জানিয়েছেন গান-মাইকিংয়ের বিরুদ্ধে। প্রচারণার নতুন কৌশল সম্পর্কে প্রশ্ন করলে রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান বলেছেন, ‘নির্বাচনি প্রচারণায় যেসব উল্লেখ নেই। কিন্তু কেউ যদি অভিযোগ করে। তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন

 পুরোনো ধাঁচের প্রচারণায় আবদ্ধ না থেকে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা। জনপ্রিয় গানের সুরকে ব্যবহার করে নির্বাচনি প্রচারণা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা কররা হচ্ছে প্রার্থীদের পক্ষ থেকে। মাইকিং করে গানে গানে মানুষকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। আর সেখান থেকে সেগুলো ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের মুখে মুখে। বিশেষ করে ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ ফোক গানটির প্যারোডি করে বানানো হয়েছে, ‘রাজশাহীর জনগণ, শোনো গো দিয়া মন, খায়রুজ্জামান লিটন ভাইয়ের সালামও জানাই, নৌকা মার্কায় আপনাদের সবার ভোট চাই হায়রে’। এছাড়া আরেকটি জনপ্রিয় গান ‘তোমাকে চাই আমি আরও কাছে, তোমাকে বলার আ রও কথা আছে’ গানটিকে প্যারোডি করে বানানো হয়েছে, ‘রাজশাহীবাসী আপনাদের জানাই, লিটন ভাইয়ের পক্ষ থেকে সালাম জানাই।’ ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেবো রে’ ছাড়াও জনপ্রিয় বেশ কিছু গানকে প্যারোডি করে চালানো হচ্ছে প্রচারণা।

এছাড়া মাইকিংয়ের পুরাতন কৌশল হিসেবে কবিতার ছন্দেও ভোট চাওয়া হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘ভোট চাই ভোটারের, দোয়া চাই সকলের’, ‘তোমার আমার মার্কা কি? নৌকা ছাড়া আবার কি?’, ‘মা বোনদের বলে যাই, নৌকা মার্কায় ভোট চাই’, ‘উড়ছে পাখি দিচ্ছে ডাক, ধানের শীষ মার্কা জিতে যাক’। এমন কবিতার ছন্দ বেজে উঠেছে রাজশাহীর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণায়।

পোস্টার ও মাইকিংয়ের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে প্রচারণার কাজ। বিশেষ করে বিভিন্ন এলাকার মাইকিং, পোস্টার ও ব্যানার লাগানোর ছবি তুলে তা প্রচারণার অংশ হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে। গত নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রচারণার অংশ হিসেবে থাকলেও এবারের নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র থাকার সময় যেসব উন্নয়ন বাস্তবায়ন ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে সেসব নিয়ে ফেসবুকে শতাধিক ভিডিও বার্তা পোস্ট করা হয়েছে। এসব ভিডিওবার্তায় লিটনের পক্ষে ভোট চাওয়া হচ্ছে। এতে স্লোগান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ‘চলো আবারও বদলে দেই রাজশাহী’।
প্রার্থীরা নিজেরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের বক্তব্য তুলে ধরছেন। নগরবাসীর প্রতি তাদের অনুরোধ ও আগামী দিনের ভাবনাই এসব বক্তব্যের মূল কথা। সেগুলো লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের মাধ্যমেও প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন নেতাকর্মীরা। ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্ট, ফেসবুক গ্রুপ, ফেসবুকের বিভিন্ন পেজসহ নানাভাবেই চলছে প্রচারণা। এক্ষেত্রে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন এবং ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনগুলোই বড় অবদান রাখছে। ফেসবুকের পাশাপাশি ইউটিউবেও চলছে প্রচারণা। রাজশাহী নিয়ে আগামী দিনে কার কি ভাবনা সে সম্পর্কিত বার্তা ইউটিউবের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন প্রার্থীরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির সভাপতি ও বর্তমানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের পরিচালক আশরাফুল আলম ইমন বর্তমানে জামায়াতের রোকন পদে আছেন। তিনি ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে দলবল নিয়ে কাজ করেছিলেন। তবে এবার উল্টো চিত্র। বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে মাঠে তো নামেননি উল্টো বিএনপির সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সম্পর্কের অবনতি ও বুলবুলকে নিয়ে ফেসবুকে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন।

রবিবার রাতে আশরাফুল আলম ইমন তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘২০১৩ সালে জামায়াত-শিবির বুলবুল ভাইয়ের নির্বাচনি মাঠে ছিল অথচ এবার ২০১৮ সালে নাই কেন? এই ব্যর্থতা কার? রাজশাহী বিএনপির ঘাঁটি হওয়া সত্ত্বেও জামায়াতের সঙ্গবিহীন বুলবুল ভাই বিজয়ী হওয়া তো দূরের কথা ঠিক মতো প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আসতে পারবে কি না তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। বিএনপির বর্তমান কার্যক্রমের ফলে অগ্রিম শুভেচ্ছা রাসিকের আগামী মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ভাইকে।’

এ ব্যাপারে আশরাফুল আলম ইমন বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে জামায়াত জোটে আছে, তবে তৃণমূলে বিএনপির প্রতি ক্ষোভও আছে। আর এটা হয়েছে অবমূল্যায়ন ও সিলেটে জামায়াতকে ছাড় না দেওয়ায়।’ বুলবুলের পক্ষে শেষ পর্যন্ত জামায়াত নামবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘বুলবুল ভাইয়ের পক্ষে জামায়াত নামবে কি না তা দলীয় ফোরাম সিদ্ধান্ত নেবে। আমার জানা মতে এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে বুলবুল ভাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে জোটের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। নির্বাচন পরিচালনায় জোটের সমন্বয় কমিটিও হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় জামায়াতের সিদ্ধান্তে জামায়াত তাদের মেয়র প্রার্থী সিদ্দিক হোসেনকে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করেছে। এরপরও বিএনপির পরিকল্পনা ও সমন্বয়হীনতার ফলে রাজশাহীতে মেয়র নির্বাচনে জামায়াতের উপস্থিতির সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।’ এ অবস্থায় রাজশাহীতে জামায়াত এখন শুধু তাদের ১৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কাজ করছে। এর মধ্যে অন্তত আটটিতে জয় চায় জামায়াত। এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বলেন, ‘ইমন কেন এসব লিখেছে তা জানি না। বুলবুল ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী। সবাই কাজ করছে।’

/এএমএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
শপথ নিলেন আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারপতি
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
চীনে আমেরিকার কোম্পানিগুলোর প্রতি ন্যায্য আচরণের আহ্বান ব্লিঙ্কেনের
সারা দেশে আরও ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
সারা দেশে আরও ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
শিরোপার দৌড়ে বড় ধাক্কার পর ক্ষমা চাইলেন ক্লপ
শিরোপার দৌড়ে বড় ধাক্কার পর ক্ষমা চাইলেন ক্লপ
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম